রঘুনাথ খাঁ, সাতক্ষীরা : সাতক্ষীরার উপকুলীয় উপজেলা শ্যামনগরে পানি সংরক্ষণের জন্য ১১০টি পানির ট্যাংক বিতরণ করা হয়েছে। শ্যামগরের বুড়িগোয়ালীনি ইউনিয়নের দাতিনাখালি বালুরমাঠে শনিবার সকাল ১০টায় এক হাজার লিটার ধারণক্ষমতা সম্পন্ন এ ট্যাংক বিতরণ করা হয়। সুন্দরবন উপকূলের শতাধিক প্রান্তিক পরিবারের মাঝে এ পানির ট্যাংক বিতরণ করে চিকিৎসক ও শিক্ষার্থীদের দ্বারা পরিচালিত সামাজিক সেবামূলক সংগঠন ডু সামথিং ফাউন্ডেশন। এ সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন, ফাউন্ডেশনের কোষাধ্যক্ষ জাকির হোসেন, স্বেচ্ছাসেবক শাহিন আলম, মাহমুদুল হাসান, বুলবুল, মামুন, মাসুম প্রমুখ।

সুন্দরবন উপকূলীয় উপজেলা শ্যামনগরের গাবুরা, পদ্মপুকুর, বুড়িগোয়ালিনী, মুন্সিগঞ্জ, কৈখালী, রমজাননগর, আশাশুনি উপজেলার প্রতাপনগর ও খুলনার কয়রা এলাকার ১১০টি প্রান্তিক পরিবারের মাঝে এ পানির ট্যাংক বিতরণ করা হয়েছে।

শ্যামনগর উপজেলার কৈখালী গ্রামের বাসিন্দা রিজিয়া বেগম জানান, এখন বয়সের ভারে খুববেশী চলাফেরা করতে পারেন না তিনি। তবে বেঁচে থাকার তাগিদে প্রতিদিন কয়েক কিলোমিটার হেঁটে খাবার পানি সংগ্রহ করতে হয় তার। মাজায় আর পারে না বাবা। কোন ছেলে সন্তান নেই আমার। পানির পাত্র না থাকায় বৃষ্টির সময় পানি ধরে রাখতে পারিনি। পানির ট্যাংকটি পেয়ে আমার খুব উপকার হবে। কষ্ট অনেকটা কমবে। রিজিয়ার মত এমন অনুভূতি সবারই।

ডু সামর্থিং ফাউন্ডেশনের কোষাধ্যক্ষ জাকির হোসেন বলেন, চারদিকে পানি কিন্তু পানযোগ্য পানি নেই। সুন্দরবন তীরবর্তী শ্যামনগর উপকুলীয় মানুষের এই অবস্থা দেখে আমাদের মনে ব্যপকভাবে নাড়া দেয়। তাই আমরা এই অসহনীয় কষ্ট থেকে মানুষকে কিছুটা কষ্ট মুক্তির জন্য ১১০টি পরিবারের হাতে পানির ট্যাংক তুলে দিয়েছি।

তিনি বলেন, সুন্দরবন উপকূলে খাবার পানির সংকট নৈমিত্তিক। বর্তমানে জলবায়ু পরিবর্তন ও পরিবেশ বিপর্যের কারণে এই সংকট আরও বহুগুণ বেড়ে গেছে। বর্ষামৌসুমে পানি সংরক্ষণ করে রাখলে বৃষ্টি মৌসুম শেষে কয়েক মাস সেই পানিতে চলে যায়। অসচ্ছল পরিবারগুলো পাত্রের অভাবে বর্ষা মৌসুমে পানি সংরক্ষণ করতে পারে না। মাটির কলস, ছোটখাটো পাত্র, কিংবা মাটির গর্তে পলিথিন দিয়ে সামান্য সংরক্ষণ করে রাখেন। প্রান্তিক পরিবারগুলোর হাতে তুলে দেওয়া ট্যাংকগুলো তাদের অনেকটা উপকারে আসবে।

(আরকে/এসপি/নভেম্বর ২৭, ২০২১)