স্টাফ রিপোর্টার : জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু বলেছেন, ‘বিভিন্ন ইস্যুতে সরকারের প্রশংসা করায় দেশের জনগণ আমাদের আওয়ামী লীগের দালাল বলে। আমরা সেই তকমা মুছতে চাই।’

শনিবার (২৭ নভেম্বর) জাতীয় সংসদে ‘মহাসড়ক বিল-২০২১’ পাসের আলোচনায় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের এক বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে মুজিবুল হক হাস্যরস করে এ কথা বলেন।

এর আগে বিলটির জনমত যাচাইয়ের বক্তৃতায় সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমাদের দেশে আমরা যত কথা বলি, তত কাজ করি না, যা বিশ্বাস করি, তা পালন করি না, যা পালন করি, তা বিশ্বাস করি না। সমালোচনার জন্য অনেক সময় আমরা শুধু সমালোচনার ঝড় বইয়ে দিই। প্রশংসার বিষয়গুলোকে আমরা নিদারুণভাবে উপেক্ষা করে যাই। সরকার ক্ষমতায় আছে বলে বিরোধী দল কী শুধু সমালোচনাই করবে? সরকারের কী কোনো ভালো কাজ নেই? যখন বক্তব্য দেন তখন কী সেই কাজগুলোর প্রশংসা কেউ করেন?’

পরে সংশোধনী প্রস্তাবের আলোচনায় অংশ নেন মুজিবুল হক চুন্নু। তিনি বলেন, ‘সেতুমন্ত্রী দুঃখ করে বলেছেন, আমরা সরকারের ভালো কাজের প্রশংসা করি না। কথাটি সঠিক নয়। সংসদে দেখবেন। আমার এলাকার রাস্তাসহ তিনি যেটি করেছেন, তার কথা অনেকবার বলেছি। শুধু বলেছি না, আমাদের সংসদ সদস্যরা সরকারের কথা বলতে গিয়ে এমন অবস্থা হয়েছে যে, পাবলিক আমাদের আওয়ামী লীগের দালাল বলে। আর কত বলবো বলেন।’

তিনি বলেন, ‘আমরা এখন দালালি নামটা মুছতে চাই। তারপরও যদি আপনাদের মন না ভরে, তাহলে আর কিছুই করার নাই।’

এর আগে জনমত যাচাই-বাছাইয়ের আলোচনা অংশ নিয়ে চুন্নু বলেন, ‘মহাসড়ক বিলটি অনেক গুরুত্বপূর্ণ। এই বিলটি অনেক দিন রাস্তায় ঘোরাঘুরি করছে। পাস করার কথা আরও আগে। নানা কারণে পাস হয়নি। আমার বাড়ি কিশোরগঞ্জ, গাজীপুর-টঙ্গী-পাকুন্দিয়া হয়ে আমার রাস্তা গত সাত-আট বছর ধরে ব্যবহার করতে পারি না। টঙ্গী থেকে গাজীপুর যাওয়া যায় না। ইহজনমে পাবো কি না এটি যদি মন্ত্রী মহোদয় বলেন, উপকার হয়। বৃহত্তর ময়মনসিংহ ও উত্তরবঙ্গের মানুষ এই রাস্তা দিয়ে যায়। তাদের যে কি দুর্ভোগ! কি যে অসুবিধা তা ভাষায় বলতে পারবো না। ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে থাকতে হয়। আপনি যদি একদিন সকাল ৮টা ৯টার সময় যান, দেখতে পাবেন।’

সড়কের নিরাপত্তার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের সড়কের নিরাপত্তা কী অবস্থায় আছে সেটা গত কয়েকদিনের পত্রিকা দেখেন। গত দুইদিনে উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ময়লার গাড়ির চালক নেই, কেমন নিরাপত্তা, কেমন মাতবর চালক, ১০ হাজার টাকায় অন্য লোক দিয়ে গাড়ি চালাই! সেই লোক গাড়ি ওঠিয়ে দেয় ছাত্রের ওপর। মানুষ মেরে ফেলে।’

তিনি বলেন, ‘আমার পাশে বসে আছেন বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সভাপতি (মসিউর রহমান রাঙ্গা)। মালিক সমিতির সভাপতি জাতীয় পার্টির, সাধারণ সম্পাদক আওয়ামী লীগের (এনায়েত উল্লাহ)। শ্রমিক সংগঠনের সভাপতি আওয়ামী লীগের (শাজাহান খান), আর সাধারণ সম্পাদক কমিউনিস্ট পার্টির (ওসমান আলী)। যেখানে কিছু বলবো ভালো করে, কোন সময় জানি কি হয়! ভয়ও পাই, তবু বলতে হয়।’

(ওএস/এএস/নভেম্বর ২৮, ২০২১)