রঘুনাথ খাঁ, সাতক্ষীরা : ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে বাসায় ফেরার পথে এক ব্যাবসায়িকে ইজিবাইক থেকে নামিয়ে মারপিট করে এক লাখ ৩৫ হাজার টাকা, একটি মোবাইলসেটসহ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের চাবির তোড়া ছিনতাই করা হয়েছে। বরিবার রাত পৌনে নয়টার দিকে সাতক্ষীরা শহরের শহীদ আব্দুর রাজ্জাক পার্কস্থ অডিটোরিয়ামের পিছনে এ ঘটনা ঘটে।

সাতক্ষীরা সদর থানার পশ্চিম পার্শ্বের বই সাগর লাইব্রেরীর মালিক পুরাতন সাতক্ষীরার আব্দুর রশিদ জানান, খুলনা জেলার পাইকগাছা উপজেলার শ্রীকণ্ঠপুর গ্রামের জিএম শহীদুল ইসলামের কাছ থেকে ২১০৪ সালের ১৩ মার্চ মাসিক পাঁচ হাজার টাকা ভাড়া চুক্তিতে পাঁচ বছর মেয়াদী দোকান ভাড়া নিয়ে বই সাগর লাইব্রেরী নামক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করে আসছিলেন তিনি। শহীদুল ইসলাম বিদেশে চলে যাওয়ার কারণে ওই ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বিক্রি করে দেওয়ার শর্তে শহীদুল ইসলামের মামা আশাশুনির খাজরা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের তৎকালিন প্রধান শিক্ষক সাঈদার রহমান ও শহীদুলের ছোট ভাই মোস্তাফিজুর রহমান কয়েক দফায় তার কাছ থেকে ১২ লাখ লাখ টাকা গ্রহণ করেন।

পরবর্তীতে দোকান লিখে না দেওয়ায় টাকা ফেরৎ চাইলে তাকে দোকান থেকে উচ্ছেদের পরিকল্পনা করে সাঈদুর রহমান ও মোস্তাফিজুর রহমান। তার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলাও দেওয়া হয়। একপর্যায়ে তিনি সদর সহকারি জজ আদালতে মামলা করেন দোকান পাওয়ার দাবিতে। একই সাথে তিনি রেন্ট কন্টোলে মামলা করে মাসিক দোকান ভাড়া আদালতে জমা দিয়ে আসছেন। এরপরও তাকে বারবার পুলিশ ও সন্ত্রাসী দিয়ে দোকান থেকে উচ্ছেদ করার চেষ্টা করা হয়। সাঈদার রহমান মারা যাওয়ার পর সম্প্রতি তার জামাতা/ ভাগ্নে মোস্তাফিজুর তাকে দোকান থেকে তাড়ানোর জন্য সন্ত্রাসী ভাড়া করার পাশপাশি সদর থানার উপপরিদর্শক মঞ্জুরুল ইসলামকে দিয়ে চাপ সৃষ্টি করে আসছিলেন।

আব্দুর রশীদ অভিযোগ করে বলেন, রবিবার রাত পৌনে নয়টার দিকে তিনি দোকান বন্ধ করে পাকা পুলের পাশ থেকে একটি ইজিবাইকে উঠে বাসায় যাচ্ছিলেন। ইজিবাইকটি শহীদ আব্দুর রাজ্জাক পার্কের অডিটোরিয়ামের পিছনের দিকে পৌঁছালে পুরাতন সাতক্ষীরার হাটখোলা এলাকার বিএনপি নেতা (গত পৌরসভা নির্বাচনে তিন নং ওয়ার্ড থেকে নির্বাচনে অংশ নেওয়া বিএনপি নেতা) সুমনুর রহমান সুমন ও মোস্তাফিজুর রহমানসহ ১০/১২ জন তাকে ইজি বাইক থেকে নামিয়ে জোরপূর্বক একটি মোটর সাইকেলে তোলার চেষ্টা করে। রাস্তায় লোক এসে পড়ায় তাকে সেখান থেকে তুলে এনে পানির ট্যাংক এর পিছনে নিয়ে এলোপাতাড়ি মারপিট করা হয়। কেড়ে নেওয়া হয় তার কাছে থাকা এক লাখ ৩৫ হাজার টাকা, একটি মোবাইল সেট ও দোকনের চাবির তোড়া। এ সময় তাকে দোকান ছেড়ে না দিলে জীবনে মেরে ফেলার হুমকি দেওয়া হয়। তার চিৎকারে একজন ভ্যান চালক ছুঁটে এলে সন্ত্রাসীরা চলে যায়। এরপর ওই ভ্যান চালকের সহায়তায় তিনি সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নেন।

এ ব্যাপারে মোস্তাফিজুর রহমান ও সুমনুর রহমান সুমনের সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি। মোবাইল ফোনে যোগযোগের চেষ্টা করেও কথা বলা যায়নি সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা দোলোয়ার হুসেনের সঙ্গে।

(আরকে/এসপি/নভেম্বর ২৮, ২০২১)