এমদাদুল হক স্বপন, ঝালকাঠি : ঝালকাঠিতে কেওড়া ইউপি সদস্য নজরুল ইসলামের বিরুদ্ধে মিরাজ শেখ (৩৫) নামের এক শ্রমিককে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। নিহত মিরাজ সদর উপজেলার নৈকাঠি গ্রামের শেখ সত্তারের ছেলে।

নিহতের পরিবারের অভিযোগ, কেওরার ইউপি সদস্য নজরুল ইসলাম তার দলবল নিয়ে এ হত্যাকান্ড ঘটিয়েছে। বুধবার রাত সারে ৩ টার দিকে বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মিরাজের মৃত্যু হয়। মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করেছে সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক রিজভী আহম্মেদ ।

প্রত্যক্ষদর্শী ও নিহতের স্বজনরা জানায়, কেওরা ইউনিয়নের নৈকাঠি বাজারে মঙ্গলবার রাত ১০ টার দিকে মিরাজকে এলোপাতাড়ি পিটিয়ে ও কুপিয়েছে স্থানীয় ইউপি সদস্য নজরুল ইসলাম ও তার লোকজন। এসময় তার দুটি পা গুড়িয়ে চোখ তুলে ফেলা হয়। রাতেই আহত মিরাজকে মুমুর্ষ অবস্থায় উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

নিহত মিরাজের মা মাকসুদা বেগম বলেন, 'ইউপি সদস্য নজরুল ইসলামের সাথে আমাদের জমিজমা সংক্রান্ত পূর্ব শত্রুতা ছিলো। তাই তারা আমার ছেলেকে কুপিয়ে হত্যা করেছে।

নিহতের বোন রোজিনা আক্তার বলেন, দলবল নিয়ে দেশীয় অস্ত্রদিয়ে আমার ভাইকে হত্যা করেছে নজরুল মেম্বার। আমরা থানায় আজকেই মামলা করবো। মঙ্গলবার রাত ১০ টার দিকে মিরাজের উপর হামলার পর স্থানীয়রা আহত অবস্থায় উদ্ধার করে ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে নিয়ে আসে। সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক সিয়াম হাসান বলেন, রোগীর একটি হাত এবং দুটি পা ভেঙে গেছে। সেই সাথে একটি চোখ জখম হয়েছে। পায়ের ভিতরে ব্লিডিং হয়েছে। ব্লাড প্রেসার থাকায় তার মৃত্যু ঝুকি হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশালে প্রেরন করা হয়েছে।

অভিযুক্ত ইউপি সদস্য নজরুল ইসলাম ঘটনার পর থেকে এলাকা থেকে গা ঢাকা দিয়েছে। তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি বন্ধ থাকায় তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।

তবে এ বিষয়ে কেওরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবু সাইদ খান বলেন, ঘটনা শুনে রাতেই আমি ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে গিয়েছি, রোগীর খোজ নিয়েছি। এই হত্যাকান্ডে মেম্বারের জড়িত থাকার বিষয়টি প্রমান পাওয়া গেলে তা কিছুতেই ছাড় দেয়া হবেনা।

ঝালকাঠি সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খলিলুর রহমান বলেন, মিরাজ নিহতের ঘটনা শুনেছি, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। এ বিষয়ে ১৩ জনের নাম এবং আরো ১০/১২ জন অজ্ঞাত রেখে আসামী করে মামলা লিপিবদ্ধ করার জন্য নিহতের আত্মীয় স্বজরা থানায় এসেছে। মামলাটি গ্রহনের প্রস্তুতি চলছে।

(এস/এসপি/ডিসেম্বর ১৫, ২০২১)