আন্তর্জাতিক ডেস্ক : জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি মুন শান্তিপূর্ণ উপায়ে মতপার্থক্য দূর করতে রাজনৈতিক সংলাপের ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন। জাতিসংঘে বাংলাদেশের অন্তর্ভুক্তির চার দশক পূর্তিতে দেওয়া বাণীতে তিনি এ তাগিদ দেন।

বাণীটি জাতিসংঘে বাংলাদেশের চার দশক পূর্তি উপলক্ষে গতকাল বুধবার প্রকাশিত সরকারি ক্রোড়পত্রে ছাপা হয়নি। সংলাপের বিষয়টি থাকার জন্যই কি বাণীটি ক্রোড়পত্রে ব্যবহার করা হয়নি—গতকাল সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলীকে এ প্রশ্ন করা হলে জবাবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বহিঃপ্রচার অনু বিভাগের মহাপরিচালক নুর-ই-হেলাল সাইফুর রহমান বলেন, সময়ের অভাবে বক্তব্যটি ছাপা হয়নি।

এ সময় পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, উনি (বান কি মুন) তো অনেক ভালো ভালো কথাও বলেছেন।

বাণীর বিষয়ে নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি এ কে আবদুল মোমেন গতকাল সন্ধ্যায় মুঠোফোনে বলেন, জাতিসংঘে বাংলাদেশের সংযুক্তির চার দশক পূর্তি উপলক্ষে নিউইয়র্কের একটি প্রকাশনার জন্য বান কি মুনের বাণীটি নেওয়া হয়েছে। গত সপ্তাহে তা ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।
বান কি মুন বাণীতে বাংলাদেশের সঙ্গে নিজের পেশাগত জীবনের স্মৃতিময় অধ্যায়ের পাশাপাশি গত চার দশকে এ দেশের অর্জনের কথা উল্লেখ করেন।

তিনি বলেন, ১৯৭৩ সালে দক্ষিণ কোরিয়ার একজন নবীন কূটনীতিক হিসেবে তিনি দিল্লিতে কর্মরত ছিলেন। সে সময় বাংলাদেশের সঙ্গে তাঁর দেশের কূটনীতিক সম্পর্ক স্থাপনের প্রক্রিয়ায় যুক্ত থাকায় তিনি গর্বিত। ওই সম্পর্ক স্থাপনের অনুষ্ঠানে ব্যবহার করা ঝরনা কলমটি বন্ধুত্বের স্মারক হিসেবে তিনি এখনো সযত্নে রেখেছেন।

বান কি মুন সংলাপ প্রসঙ্গে বলেন, সব গণতান্ত্রিক দেশকেই প্রয়োজনীয় রাজনৈতিক উন্নয়নের মধ্য দিয়ে যেতে হয় এবং বাংলাদেশও এর ব্যতিক্রম নয়। শান্তিপূর্ণভাবে মতপার্থক্য দূর করা এবং দেশের ভবিষ্যতের স্বার্থে একটি ব্যাপকভিত্তিক সমঝোতায় পৌঁছানোর লক্ষ্যে রাজনৈতিক সংলাপ অপরিহার্য।

বান কি মুনের এ বক্তব্যে এটাই স্পষ্ট যে বাংলাদেশের প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর মতপার্থক্য দূর করতে সংলাপের আহ্বান থেকে জাতিসংঘ এতটুকু সরেনি। গত ১৯ জুন নিউইয়র্কে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের সঙ্গে বৈঠকে বিএনপির নাম উল্লেখ না করলেও জাতিসংঘ মহাসচিব সংসদের বাইরের রাজনৈতিক দলগুলোকে নিয়ে সংলাপে বসার আহ্বান জানান।

১৯৭৪ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘের ১৩৬তম সদস্য হিসেবে যোগ দেয় বাংলাদেশ।

(ওএস/এএস/সেপ্টেম্বর ১৮, ২০১৪)