ওয়াজেদুর রহমান কনক, নীলফামারী : সদর উপজেলার লক্ষীচাপ ইউনিয়নে ৮ বিঘা জমিতে ২ হাজার চারা গাছ রোপণ করে বাণিজ্যিকভাবে চা চাষ শুরু হয়েছে। পরীক্ষামূলকভাবে সফলতা পাওয়ায় নতুন আশায় স্বপ্ন বুনছেন এখানকার মানুষ। চা চাষি আমিরুল ইসলাম বলেন, ৮ বিঘাতে ২ হাজার চারা গাছ রোপণ  করে এবং মাসে প্রতি বিঘায় ২০০০ টাকা খরচ হয়। ৪৫ দিন অন্তর অন্তর ৩ হাজার কেজি চা পাতা বিক্রি হয় যার বাজার মূল্য ৩০ থেকে ৩৫ টাকা কেজি। বাগানে ১০ থেকে ১৫ জন পুরুষ ও মহিলা কাজ করছেন বলে তিনি জানান।

চাষী আমিরুল বলেন, কৃষি অফিস বা সরকার যদি সুদৃষ্টি দিত তাহলে আমরা আরও উপকৃত হতে পারতাম।মানুষ চা চাষ করলে লাভবান হতে পারবে যদি তাকে সঠিক প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়।

উল্লেখ্য, পুনর্বাসিত ভিক্ষুক ও দরিদ্র মানুষের জন্য কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে প্রাথমিকভাবে ১ একর জমিতে প্রায় ৭ হাজার চা গাছের চারা রোপণ করা হয়েছিল। যা অল্প কিছু দিনের মধ্যে সেই চা চাষে সাফল্য পাওয়ার পর উপজেলা পরিষদের প্রায় ৫ একর জমিতে এবং ব্যক্তি মালিকানায় আরো ৩২ বিঘা জমিতে চা চাষ শুরু হয়েছে। পরবর্তীতে সিনহা, নীলসাগর গ্রুপসহ কয়েকটি গ্রুপ বাণিজ্যিকভাবে চায়ের চাষ শুরু করে। এসব চা বাগানে প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৪০-৫০ জন শ্রমিক কাজ করছেন। ফলে কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে, দূর হয়েছে বেকারত্ব।

বাংলাদেশ চা বোর্ডের নর্দান বাংলাদেশ প্রজেক্টের প্রকৌশলী জানান, এই এলাকার মাটি চা চাষের জন্য খুবই উপযোগী। তিনি বলেন, নীলফামারী জেলার প্রায় সব উপজেলায় বিষবৃক্ষ তামাকের চাষ হত এখন তামাকের পরিবর্তে আবাদ হচ্ছে চা। নীলফামারী সদর উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মোঃ কামরুল হাসান বলেন, এই এলাকার ভূমি সমতল হওয়ার কারণে চায়ের চাষ কৃষকের অর্থনৈতিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখছে।

তিনি বলেন, তুলনামূলকভাবে চা চাষে পরিচর্যা কম এবং আয় বেশি পাশাপাশি রোগ বালাইয়ের আক্রমণও অনেকগুন কম হওয়ায় চা চাষে দিনদিন জনপ্রিয়তা বাড়ছে।

নীলফামারী সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জেসমিন নাহার জানান, এই অঞ্চলে চা চাষের ফলে শতাধিক অসহায় দরিদ্র মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে। তাছাড়া তামাক চাষের বিকল্প হিসেবে চা চাষের জন্য ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা চালানো হচ্ছে।

(ওআরকে/এএস/ডিসেম্বর ২৯, ২০২১)