শাহ্ আলম শাহী, দিনাজপুর : ধানের জেলা দিনাজপুরে গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ চাষ বাড়ছে। এই পেঁয়াজ চাষ করে ভালো ফলন পাচ্ছেন কৃষক। মসলাজাতীয় ফসল পেঁয়াজ চাষে ঘুরছে, অনেক কৃষকের ভাগ্যের চাকা। পেঁয়াজ চাষে কৃষককে সহযোগিতা, প্রশিক্ষণ ও পরামর্শ দিচ্ছে কৃষি বিভাগ।

দিনাজপুরের বিরল উপজেলার পুরিয়া গ্রামের রাষ্ট্রীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত আদর্শ কৃষক মতিউর রহমান এবারেই প্রথম দুই বিঘা জমিতে বারী-৫ গ্রীস্মকালীন পেঁয়াজ চাষ করেছেন। তিনি ফলনও পেয়েছেন ভালো।

কৃষক মতিউর রহমান জানান, আগামীতে এ জাতের পেঁয়াজ চাষ জমির পরিধি তিনি আরো বাড়িয়ে দিবেন। তিনি হর্টি কারচার থেকে এই পেঁয়াজের চারা এনে রোপণ করেছিলেন বলে জানান। তার পেঁয়াজের ফলন দেখে এখন এ জাতের পেঁয়াজ চাষে অনেকে আগ্রহী।

শুধু কৃষক মতিউর রহমান নয়, দিনাজপুরে এখন গ্রীস্মকালীন পেঁয়াজ চাষ অনেকে চাষ করছেন। ফলন দেখে অনেক কৃষকের আগ্রহ বাড়ছে, এ জাতের পেঁয়াজ চাষে।

বরাবরই দেশের পেঁয়াজের ঘাটতি মেটাতে ভারত থেকে আমদানি করা হয়ে আসছে। ভারতের অভ্যন্তরীণ সংকটে গত এবং এ বছর থেকে আগাম কোনো তথ্য ছাড়াই হুট করে পেঁয়াজ রপ্তারি বন্ধ করে তারা। এতে বাংলাদেশের বাজারে পেঁয়াজের ব্যাপক দাম বৃদ্ধি পায়। পরিস্থিতি সামালে সরকারকে হিমশিম খেতে হয়। তাই,বাংলাদেশ মসলা গবেষণা কেন্দ্রের গবেষণার ফসল পেঁয়াজের গ্রীষ্মকালীন জাত দশ বছর আগে উদ্ভাবিত হলেও এই জাতের পেঁয়াজের চাষ এবার হয়েছে দিনাজপুরে।

এতদিন পেঁয়াজ এক মৌসুমে ফলানোয় উৎপাদনের পর চাষি যেমন দাম পেত না আবার বছরের অন্য সময় সংকটের কারণে বাজারে দামের ঝাঁঝ বেড়ে যেত। তখন বিদেশ থেকে পেঁয়াজ এনেও ঘাটতি পূরণ করা যেত না মন্তব্য কৃষিবিদদের।

দিনাজপুরে গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজের ফলন দেখে মুগ্ধ সংশ্লিষ্টরা। তাই, গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ চাষকে সারাদেশে ছড়িয়ে দিতে কৃষি মন্ত্রণালয় কৃষকদের প্রণোদনাসহ করণীয় নির্ধারণ করে ব্যাপক কর্মসূচি হাতে নিয়েছে বলে জানালেন, দিনাজপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের যুগ্ম পরিচালক প্রদীপ কুমার।

তিনি বলেন, গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ চাষ প্রকল্পের আওতায় জেলায় দুই হাজার ২’শ জন কৃষককে গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ চাষ বিষয়ক এবং ৭৮০ জন কৃষককে গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজের বীজ উৎপাদন বিষয়ক কারিগরী প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে।

এ জাতের পেঁয়াজ “৯০ থেকে ১১০ দিনে মধ্যে বিঘায় ১২০ থেকে ১৫০ মন উৎপাদন হয়। গ্রীষ্মকালীন এ পেঁয়াজ প্রতি বিঘায় চাষ করতে ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকা খরচ হয়।

আবহাওয়া অনূকুল হওয়ায় এ পেঁয়াজ চাষে ঝুঁকি কম।নভেম্বর-ডিসেম্বর এবং জানুয়ারির মাঝামাঝি ক্ষেত থেকে এ পেঁয়াজ ওঠানো হয়।

(এসএএস/এএস/জানুয়ারি ০৭, ২০২২)