এ কে আজাদ, রাজবাড়ী : রাজবাড়ীতে বাংলাদেশ পুলিশের সন্ত্রাস ও আন্তর্জাতিক অপরাধ প্রতিরোধ কেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় উগ্রবাদ প্রতিরোধে ছাত্র, গণমাধ্যমকর্মী ও সুশীল সমাজের ভূমিকা নিয়ে দিন ব্যাপী সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে। 

বুধবার (১০ জানুয়ারি) সকাল থেকে রাজবাড়ী পৌরসভার অডিটোরিয়ামে উক্ত সভা অনুষ্ঠিত হয়।

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের উদ্যোগে রাজবাড়ী জেলা পুলিশের সহযোগিতায় অতিরিক্ত জেলা মোঃ সালাউদ্দিনের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা পুলিশ সুপার এম এম শাকিলুজ্জামান, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাজবাড়ী সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ দিলীপ কর, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর) মাইন উদ্দিন চৌধুরী, রাজবাড়ী প্রেসক্লাবের সভাপতি এডভোকেট মোঃ জহুরুল হক, সহ জেলা গণমাধ্যমকর্মী, ছাত্রছাত্রী ও সুশীল সমাজ প্রমুখ।

সংশ্লিষ্ট বিষয়ে পাওয়ার পয়েন্ট পেজেন্টেশন করেন ডিএমপি’র কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের উপ-কমিশনার নাছির উল্লাহ।

এ সময় বক্তারা বলেন, বাংলাদেশকে বিশ্বের বুকে একটি সুখী সমৃদ্ধ উন্নত ধর্মনিরপেক্ষ দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে। আর সেই লক্ষকে বাস্তবে রূপ দিতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কাজ করছেন। বর্তমানে পৃথিবীতে আমাদের দেশসহ অনেক দেশেই উগ্রবাদ বিশেষ করে ধর্মীয় উগ্রবাদ একটি সমস্যা হয়ে দেখা দিয়েছে। আর এই উগ্রবাদী তৈরী করছে বিভিন্ন দেশী-বিদেশী আন্তর্জাতিক উগ্রবাদী গোষ্ঠী। যাদের দ্বারা দেশের ধনী-নিম্ন আয়ের পরিবারের যুবকরা প্রভাবিত হয়ে এই উগ্রবাদ ও জঙ্গী তৎপরতায় ঝুঁকে পড়ছে। আমাদের একসময় ধারণা ছিল শুধু নিম্ন আয়ের পরিবারের যুবকরা তাদের হতাশা থেকে উগ্রবাদ ও জঙ্গীবাদের দিকে ঝুঁকছে। কিন্তু হোলি আর্টিজান রেঁস্তোরার জঙ্গী সন্ত্রাসী হামলাসহ দেশে ঘটে যাওয়া বিভিন্ন জঙ্গী হামলা সেই ধারণাকে পাল্টে দিয়েছে। হামলার পর দেখা যাচ্ছে শুধু নিম্ন আয়ের পরিবারের যুবকরাই নয়, জঙ্গীবাদী গোষ্ঠী ধর্মভীরু উচ্চ, মধ্যম ও নিম্ন আয়ের কোমলমতি যুবকদের টার্গেট করে তাদের দলে অন্তর্ভূক্ত করছে।

সুতরাং আমাদের সকলকে আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম যাতে তাদের টার্গেটে পরিণত না হয় সে জন্য সচেতন থাকতে হবে।

এ সময় আরও বলেন, রাজবাড়ী জেলা একটি শান্তিপ্রিয় ধর্মীয় সম্প্রীতির জেলা। এখানে সব ধর্মের মানুষ পাশাপাশি শান্তিতে বসবাসসহ একে অন্যের ধর্মীয় উৎসব মিলেমিশে পালন করে। যার কারণেই সনাতন ধর্ম পালনকারীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গা পূজাসহ সকল পূজা ও খ্রিস্টান ধর্ম পালনকারীদের বড়দিন কোন রকম সন্ত্রাসী কর্মকান্ড বা গোলোযোগ ছাড়া অত্যন্ত সুন্দরভাবে পালন করা সম্ভব হয়েছে। আবার এই জেলার সাংস্কৃতিক অঙ্গন অত্যন্ত উচ্চ ও খোলাধুলার প্রতিও সকলের অনেক আগ্রহ, যা উগ্রবাদ ও জঙ্গীবাদ থেকে এই জেলাকে অনেকটাই মুক্ত রেখেছে। সকলের সচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমে ভবিষ্যতে রাজবাড়ী জেলাকে উগ্রবাদ ও জঙ্গীবাদমুক্ত রাখা সম্ভব।

(ওএস/এসপি/জানুয়ারি ১২, ২০২২)