দিলীপ চন্দ, ফরিদপুর : "আমার শেষ ইচ্ছা ফরিদপুরের গরীব দুঃখী মানুষের পাশে থেকে তাদের সেবা করতে চাই "এমনই ইচ্ছা পোষণ করলেন ফরিদপুরের মানবতার ফেরিওয়ালা নামে খ্যাত শিল্পপতি ও সমাজসেবক গরিব-দুঃখী মানুষের শেষ আশ্রয়স্থল ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি শামীম হক।

১৯৭৫ পরবর্তী সময়ের তুখোড় ছাত্রলীগ নেতা শামীম হক। ১৯৭৯ সালে তিনি ফরিদপুরে ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ছিলেন। ছাত্র জীবন থেকেই বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে ধারণ করে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বুকে লালন করে সুস্থ ধারার রাজনীতিতে ওতপ্রোতভাবে জড়িত ছিলেন তিনি। মুজিব আদর্শের অকুতোভয় সৈনিক ছাত্রজীবন থেকেই আওয়ামী লীগের রাজনীতেতে সক্রিয় ভূমিকায় ছিলেন।

তিনি বলেন, আমি দীর্ঘ ৪০ বছরের ঊর্ধ্ব কাল ধরে আওয়ামী রাজনীতিতে সততা, আদর্শ ও দলের প্রতি আনুগত্যের পরীক্ষা দিয়ে চলেছি।

সাম্প্রতিক সময়ের ফরিদপুরের রাজনীতি ও আওয়ামী লীগের ভেতরে শুদ্ধি অভিযান কে স্বাগত জানিয়ে তা অব্যাহত রাখার ব্যক্ত করে নেতাকর্মীদের পাশে থাকার অঙ্গীকার ব্যক্ত করলেন ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি বিশিষ্ট সমাজসেবক শামীম হক।

তিনি তাঁর একান্ত সাক্ষাৎকারে বলেন, আমার এখন আর পাবার কিছু নেই সাধারন গরিব দুঃখী মানুষের পাশে থেকে তাদের সেবার মাধ্যমে আমার জীবনের শেষ সময়টুকু কাটিয়ে দিতে চাই। টাকা-পয়সার সৃষ্টিকর্তার আমাকে অনেক দিয়েছে এখন তিনি গরিব দুঃখী অসহায় মানুষের পাশে থেকে খেদমত করার সুযোগ চান তিনি।

ফরিদপুরের আলোকিত একজন মানুষ শামীম হক। ফরিদপুর ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে তার ২০ বছরের অধিক সময় ধরে ফরিদপুর ও তার পার্শ্ববর্তী এলাকার শত শত মানুষকে ইউরোপিয়ান ডাক্তার দিয়ে বিনামূল্যে চক্ষু রোগের, তালুকাটা, ঠোঁটকাটা রোগীদের চিকিৎসা সেবা দিয়ে মানব সেবার ব্রত নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছেন।

হল্যান্ড চাইল্ড হোম (সেকুলার অরফানেজ) প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি শামীম হক এতিম শিশুদের অভিভাবকের দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। সেখানে সকল ধর্ম-বর্ণের এতিম শিশুরা আদর-স্নেহে লালিত-পলিত হচ্ছেন এই অসাম্প্রদায়িক চেতনার মানুষটির কাছে।

মুজিব আদর্শের অকুতোভয় সৈনিক যিনি সবসময় অসহায় গরীব দুঃখী মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে সাহায্য হাত বাড়িয়ে দেন। সদর উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের হতদরিদ্র হাজার হাজার মানুষকে অর্থসাহায্য, খাদ্যসাহায্য, দিয়ে বিপদে মানুষের পাশে দাঁড়ান প্রতিটি মুহূর্ত। মোটকথা শামীম হক মানবিক গুণাবলী সম্পন্ন এই মানুষটির কথা স্বল্প পরিসরে বর্ণনা করা সম্ভব নয়।ফরিদপুরের মানুষের কাছে তিনি মানবতার ফেরিওয়ালা নামে খ্যাত।

শামীম হক একজন অসাম্প্রদায়িক চেতনার মানুষ। মন্দির মসজিদ মাদ্রাসা এতিমখানা সহ অসংখ্য সামাজিক ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে তিনি অনুদান দিয়ে থাকেন।

মানবতার ফেরিওয়ালা শামীম হক, ৭ বছরের শিশু ঐশীকে বাঁচাতে প্রাণপণ চেষ্টা করেছেন তিনি। তার হার্টে ছিদ্র মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে। ঐশীর বাবা-মা টাকার অভাবে তার চিকিৎসা করাতে পারছেন না। তার বাবা-মা আসেন সামিউল হক এর কাছে, মেয়েকে বাঁচানোর চেষ্টায়। মায়ের চোখের জলে সিক্ত হয় ধুলদীর হল্যান্ড চাইল্ড হোম। শামীম হকের কোমল হৃদয় কেঁদে ওঠে। তিনি ঐশির চিকিৎসার ভার নেন চেষ্টা করতে থাকে ঐশির কে বাঁচানোর । কিন্তু অনেক চেষ্টা করেও বাঁচানো গেল না ঐশী কে। ভারতের নেওয়ার পথেই ঐশী মারা যায় ।চোখের জলে সিক্ত হান শামীম হক।

ক্যান্সারে আক্রান্ত ডলি বেগম। বেশ কিছুদিন ধরেই ক্যান্সারে আক্রান্ত। সংসারে তার ১২ বছরের একটি শিশু সন্তান আছে। এই অবস্থায় তাকে ফেলে চলে যান তার স্বামী। অসহায় হয়ে পড়েন ডলি বেগম, কী করবেন এখন তিনি? অসহায় স্বামী পরিত্যাক্তা ক্যান্সারাক্রান্ত ডলি বেগম আসেন শামিম হকের কাছে, তিনি তার সমস্ত কথা শুনেন। ডলি বেগমের সমস্ত কথা শুনে তিনি তার চিকিৎসার খরচ বাবদ ৫০ হাজার টাকা প্রদান এবং তার ১২ বছরের ছেলের দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নেন এই মানবতার ফেরিওয়ালা শামীম হক।

ভোলার একটি দরিদ্র মেয়ে আগুনে দগ্ধ হয়ে দেশে ও ভারতের বিভিন্ন জায়গায় চিকিৎসা করে যখন ব্যর্থ হয়ে ফিরে আসে তখনই দৈবক্রমে যোগাযোগ হয় শামিম হকের সাথে। তিনি ইউরোপের অভিজ্ঞ প্লাস্টিক সার্জন এর সহায়তায় ফরিদপুর ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে সম্পূর্ণ সুস্থ করে তোলেন।

বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকান্ড তার অবদান অনস্বীকার্য। শেখ রাসেল ক্রীড়া কমপ্লেক্স তৈরী, রাজবাড়ী রাস্তার মোড়ে বঙ্গবন্ধু স্কয়ার তৈরি করে সেখানে একটি মিনিপার্ক তৈরিসহ মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য একটি লাইব্রেরী তৈরি করেন। যে লাইব্রেরীতে মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধুর উপর লেখা বই থাকবে। খুব শীঘ্রই উদ্বোধন হবে এই লাইব্রেরী।

ফরিদপুরের ক্রীড়াঙ্গনেও তার অবাধ বিচরণ। শিশু-কিশোরদের কে তিনি ফিরিয়ে আনতে চেষ্টা করছেন খেলার মাঝে, যাতে তারা হারিয়ে না যায় মাদকের করাল গ্রাসে।

সম্প্রতি সময়ে ফরিদপুরের রাজনীতিতে স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিরোধীদের করাল গ্রাসে নিমজ্জিত হয়ে গিয়েছিল। তখন ফরিদপুরের রাজনীতি ও আওয়ামী লীগের ভেতরে শুদ্ধি অভিযান কে স্বাগত জানিয়ে তা অব্যাহত রাখার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করে তৃণমূল নেতাকর্মীদের পাশে থাকার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ সভাপতি বিশিষ্ট সমাজসেবক ও শিল্পপতি শামীম হক। তিনি তার বাসভবনে একান্ত সাক্ষাৎকারে বলেন বাংলাদেশের সফল রাষ্ট্রনায়ক মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশনেত্রী শেখ হাসিনার তীক্ন চোখ পর্যবেক্ষণ করছেন। তার নির্দেশনায় চূড়ান্ত। ফরিদপুরের আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের কোন হাইব্রিড অনুপ্রবেশকারী জামাত-বিএনপি'র স্থান পাবে না। লুটেরা দুর্বৃত্তায়নের বিরুদ্ধে যে শুদ্ধি অভিযান শুরু হয়েছে তা আমাদেরকে শুভ আলোর জ্যোতি তে পৌঁছে দিবে। আমরা সকল অশুভ শক্তির বিরুদ্ধে লড়াই করে যাব। আমাদের রাজনৈতিক প্রজ্ঞা ও আদর্শ দেশরত্ন শেখ হাসিনা ‌।

ফরিদপুরে দলের নেতাকর্মীদের উপর হামলা নির্যাতন বিষয়ে তিনি বলেন যারা সুদুরপ্রসারী চক্রান্ত করে এখানে এসেছিল তাদের ছদ্দবেশী চেহারা উন্মোচন হয়ে গেছে। অভিযান চলছে অনেকে গ্রেপ্তার হয়েছেন অনেকে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন, কারো রক্ষা নাই। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা শাশ্বত বিস্তৃত বিস্তৃত বৃক্ষের মত একে বিনাশ করা সম্ভব নয়। তিনি বলেন স্বাধীনতাবিরোধী যুদ্ধাপরাধীদের কোন ষড়যন্ত্রই এ দেশের মানুষ মেনে নেবে না। ফরিদপুরে জয় বাংলার অবস্থান আগেও সুদৃঢ় ছিল, আগামীতেও থাকবে। আমি আমার সাধ্যমত নেতাকর্মীদের পাশে থেকে আমৃত্যু কাজ করে যাব।

গত দুই দশক ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগকে নানাভাবে পৃষ্ঠপোষকতা করেছেন দলের নেতাকর্মীদের দুঃখ-দুর্দশায় পাশে দাঁড়িয়েছেন যিনি তিনি আমাদের শামীম হক। তিনি বলেন মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় নতুন প্রজন্মকে গড়ে তুলতে আসুন আমরা শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করি।

বর্তমানে তিনি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার হাতকে আরও শক্তিশালী করার লক্ষ্যে ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগকে সুশৃংখল ও শক্তিশালী সংগঠন হিসেবে গড়ে তোলার চেষ্টা করে যাচ্ছেন ‌‌।

(ডিসি/এসপি/জানুয়ারি ১৪, ২০২২)