সমরেন্দ্র বিশ্বশর্মা, কেন্দুয়া : নেত্রকোণার কেন্দুয়ায় কথা সাহিত্যিক প্রয়াত হুমায়ুন আহম্মেদ স্মৃতি বিজড়িত তার পৈত্রিক বাড়ির বৈঠকঘর ভাংছুরের ঘটনায় দূর্বৃত্তদের বিচারের দাবীতে শুক্রবার দুপুরে বাড়ির প্রাঙ্গণে এক মানববন্ধন করেছে পরিবারের সদস্যরা ও এলাকাবাসী। 

এসময় একই গ্রামের হারিছ মিয়া সহ তার সহযোগিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবী করে বক্তব্য রাখেন নূরুল ইসলাম ফকির, সাইফুল ইসলাম ফকির, বর্তমান ইউপি সদস্য আমির হামজা, ইছহাক ভূঞা, আবুল কালাম ফকির, ও হুমায়ুন আহম্মেদের চাচাতো ভাই শফিকুল ইসলাম শফিক এবং বখতিয়ার আহম্মেদ আজম।

গত ৫ জানুয়ারী অনুষ্ঠিত ইউপি নির্বাচনে উপজেলার ১২ নং রোয়াইলবাড়ি আমতলা ইউনিয়ন পরিষদের ০৩ নং ওয়ার্ডে মেম্বার প্রার্থী হন কুতুবপুর গ্রামের হুমায়ুন আহম্মেদের চাচাতো ভাই শফিকুল ইসলাম শফিক। তার প্রতীক ছিল মোরগ। একই ওয়ার্ডের অপর প্রার্থী মোঃ হারিছ মিয়া ফুটবল প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করেন। শফিকুল ইসলাম শফিক অভিযোগ করে বলেন, ভোটের দিন কলসাটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে একই গ্রামের হারিছ মিয়া ভোট কারচুপি করতে বল প্রয়োগের মাধ্যমে তাকে কেন্দ্র থেকে বের করে দেন। এর তীব্র প্রতিবাদ করেন তিনি। এরই জের ধরে সন্ধ্যার পর নির্বাচনে জয় লাভ করে হারিছ মিয়া বিজয় মিছিল নিয়ে শফিকুল ইসলামের বাড়ির দিকে আসেন।

এসময় মিছিলকারীরা শফিকুল ইসলামের বৈঠকঘর ও কথা সাহিত্যিক হুমায়ুন আহম্মেদ স্মৃতি বিজড়িত বৈঠক ঘর সহ ৮/১০টি ঘর ভাংছুর করেন। এ ঘটনায় শফিকুল ইসলাম বাদী হয়ে হারিছ মিয়া সহ ১৮ জনকে আসামী করে কেন্দুয়া থানায় ৭(১) ২২ নং মামলা দায়ের করেন। মামলায় আদালত থেকে জামিনে মুক্তি পেয়ে ৯ জানুয়ারী সন্ধ্যা অনুমান ৭টার দিকে ধারালো অস্ত্র নিয়ে মামলার বাদী সহ স্বাক্ষীদেরকে মামলা প্রত্যাহারের হুমকি দেন আসামী পক্ষের লোকেরা। এদিকে গত ১৮ই জানুয়ারী কুতুবপুর মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে এক সংবাদ সম্মেলন করে ভাংছুরের ঘটনা হুমায়ুন আহম্মেদের চাচাতো ভাইয়ের কাঁধে চাপিয়ে দেন হারিছ মিয়া।

এ ঘটনায় এলাকাবাসী ক্ষিপ্ত হয়ে শুক্রবার হুমায়ুন আহম্মেদের পৈত্রিক বাড়ির প্রাঙ্গণে বিশাল মানববন্ধন করেন। মানববন্ধন থেকে বলা হয় হুমায়ুন আহম্মদের স্মৃতি বিজড়িত বৈঠকঘর ভাংছুরের মাধ্যমে আমাদের কলিজায় আঘাত করা হয়েছে। যে ঘরটিতে হুমায়ুন আহম্মেদ তার জীবদ্দশায় কবি সাহিত্যিকদের নিয়ে আড্ডা বসাতেন, সেই ঘরটি যারা ভাংছুর করেছে তারা সাহিত্য সংস্কৃতির প্রধান শত্রু। আমরা তাদের এ ন্যাক্কারজনক ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।

(এসবি/এসপি/জানুয়ারি ২১, ২০২২)