ডা.মুহাম্মাদ মাহতাব হোসাইন মাজেদ


আজ ২৮ জানুয়ারি বিশ্বব্যাপী পালিত হতে যাচ্ছে ডাটা প্রাইভেসি ডে বা তথ্য সুরক্ষা দিবস ২০২২। প্রতি বছর এই দিবস উপলক্ষে ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষার প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে সচেতনতা তৈরিতে বিশ্বে নানান রকম ক্যাম্পেইন চালানো হয়, ১৯৮১ সালে ইউরোপের বৃহৎ সংগঠন ‘কাউন্সিল অব ইউরোপে’ কনভেনশন ১০৮ স্বাক্ষরের মধ্যদিয়ে বিশ্বে প্রথম ডাটা প্রাইভেসি ডে বা তথ্য সুরক্ষা দিবস উদযাপন শুরু হয়।

‘কনভেনশন ১০৮’ গোপনীয়তা ও তথ্য সুরক্ষা নিয়ে প্রথম কোনো আন্তর্জাতিক চুক্তি যা প্রতিপালনের আইনি বাধ্যবাধকতা রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রে প্রতি বছর ২৮ জানুয়ারি ন্যাশনাল সাইবার সিকিউরিটি অ্যালায়েন্স (এনসিএসএ) এর নেতৃত্বে দিবসটি পালিত হয়। ইউরোপে উদযাপন শুরু হওয়া তথ্য সুরক্ষা দিবস ২০০৮ সাল থেকে উত্তর আমেরিকায় পালন শুরু হয়। এই দিবসটি মূলত ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বেসরকারি ভোক্তাদের ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষার সর্বোত্তম কলাকৌশল ভাগাভাগি করার সুযোগ করে দেয়। ‘ডাটা প্রাইভেসি ডে’ বা তথ্য সুরক্ষা দিবস বিশ্বব্যাপী একটি বৃহত্তর ক্যাম্পেইনের অংশ, যেখানে প্রাইভেসির প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে সচেতনতা তৈরি করা হয়। তুলে ধরা হয় ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষার সহজ সব পদ্ধতি। পাশাপাশি সংগঠনগুলোকে স্মরণ করিয়ে দেওয়া হয় যে, সব কাজে প্রাইভেসি গুরুত্বপূর্ণ। অলাভজনক প্রতিষ্ঠান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, করপোরেশন, সরকারি প্রতিষ্ঠান, পৌরসভা ও ব্যক্তি পর্যায়ে বাসাবাড়ি ও কর্মস্থলে সচেতনতা তৈরির ক্রমবর্ধমান বৈশ্বিক এই ক্যাম্পেইনে যুক্ত হয়েছে সাইবার ক্রাইম অ্যাওয়ারনেস ফাউন্ডেশন। সকল ‘ডাটা প্রাইভেসি ডে চ্যাম্পিয়ন’ই সহযোগিতা ও সমন্বয়ের মাধ্যমে প্রাইভেসি ও ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষা সম্পর্কে সামঞ্জস্যপূর্ণ বার্তা প্রচার করে। এর মধ্য দিয়ে তথ্য সুরক্ষা ও আস্থা প্রতিষ্ঠায় ব্যক্তিগত ও ব্যবসায়িক সচেতনতা বিকাশের সাধারণ লক্ষ্য অর্জনে কাজ করছে সংগঠনগুলো। আর আমরা আমাদের দৈনন্দিন জীবনে অবিরাম তথ্য প্রবাহ তৈরি করছি। সরকারি হিসাবে

বর্তমানে বাংলাদেশে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা বিটিআরসি’র প্রতিবেদন বলছে, এক মাসের ব্যবধানে দেশে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা বেড়েছে ৩৪ লাখ ২৫ হাজার। আর মোবাইল সংযোগের সংখ্যা বেড়েছে ১২ লাখ ৭৩ হাজার।প্রতিবেদনের তথ্যমতে, ২০২১ মার্চ মাসের শেষে দেশে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে মোট ১১ কোটি ৬১ লাখ ৪০ হাজারে। ফেব্রুয়ারি মাসে এই সংখ্যা ছিল ১১ কোটি ২৭ লাখ ১৫ হাজার। এক মাসের ব্যবধানে ইন্টারনেট ব্যবহারকারী বেড়েছে ৩৪ লাখ ২৫ হাজার। এরমধ্যে মোবাইলে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা ১০ কোটি ৬৩ লাখ ৩০ হাজার।অপরদিকে ব্রডব্যান্ড (আইএসপি ও পিএসটিএন) ইন্টারনেট গ্রাহকের সংখ্যাও বেড়েছে। ব্রডব্যান্ড গ্রাহকের সংখ্যা কোটি ছুঁই ছুঁই। মার্চ মাস শেষে এই সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৯৮ লাখ ১০ হাজারে। ফেব্রুয়ারি মাসের শেষে যা ছিল ৯৫ লাখ ২২ হাজার। আজকে আমরা আমাদের জীবনের বেশিরভাগ সময় ইন্টারনেট ও আমাদের সঙ্গে সংযুক্ত থাকা ডিভাইসগুলোতে ব্যয় করছি। এখনও খুব কম মানুষই জানে যে, আমাদের ব্যবহৃত ডিভাইস ও অনলাইন সেবা থেকে অসংখ্য ব্যক্তিগত তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে এবং তা শেয়ার করা হচ্ছে।

এসব তথ্য অনির্দিষ্টভাবে গচ্ছিত করা হতে পারে এবং আমাদের ব্যক্তিগত এসব তথ্য উপকারে ব্যবহার করা হতে পারে আবার অবাঞ্চিতভাবেও ব্যবহার করা হতে পারে। এমনকি দেখা গেছে, অনলাইনে অনুপকারী তথ্য শেয়ার করার ফলেও তা আপনার আর্থসামাজিক অবস্থান সম্পর্কে হস্তক্ষেপ করতে ব্যবহার করা হয়েছে। যেমন আপনার প্রিয় রেস্টুরেন্ট অথবা অনলাইনে যেসব আইটেম আপনি ক্রয় করেছেন তা শেয়ার করা। আর আইনগত বিষয় শক্তিশালী আইনের অনুপস্থিতিতে দেশি-বিদেশি অনেক কোম্পানি তাদের ইউজার ও ক্রেতাদের ব্যক্তিগত আচরণ পর্যবেক্ষণ করার সুযোগ পাচ্ছে এবং ভোক্তাদের এসব তথ্য তারা লাভের জন্য বিক্রি করে দিচ্ছে। ভোক্তাদের বোঝা প্রয়োজন যে তাদের তথ্যের সঠিক মূল্য আসলে কতটা এবং কিভাবে এই তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে, ব্যবহার করা হচ্ছে এবং তা শেয়ার করা হচ্ছে। এছাড়া তাদের ব্যক্তিগত তথ্যের ভালোভাবে ব্যবস্থাপনা করা জানতে হবে।

বাংলাদেশ সংবিধানের ৪৩ (খ) নম্বর অনুচ্ছেদে প্রাইভেসি রাইটস বা ব্যক্তির তথ্য সুরক্ষা ও গোপনীয়তা মৌলিক মানবাধিকার হিসেবে স্বীকৃত। একইসঙ্গে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনের ৬৩ ধারায় অনুমতি ছাড়া কারো ব্যক্তিগত তথ্য প্রকাশকে অপরাধ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার ঘোষণা (অনুচ্ছেদ ১২) নাগরিক ও রাজনৈতিক অধিকার বিষয়ে আন্তর্জাতিক সনদ (অনুচ্ছেদ ১৭), জাতিসংঘের কনভেনশন অন মাইগ্রেন্ট ওয়ার্কার্স (অনুচ্ছেদ ১৪) এবং শিশু অধিকার সনদ (অনুচ্ছেদ ১৬)-এ প্রাইভেসিকে অধিকার হিসেবে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে। অথচ বাংলাদেশের কোনো আইনে নাগরিকের তথ্য সুরক্ষার বিষয়ে সুস্পষ্ট কোনো দিকনির্দেশনাই নেই। এখন সময় এসেছে তথ্য সুরক্ষা আইন প্রণয়নের।আর সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান দ্বারা ব্যক্তি সম্পর্কিত তথ্য সংগ্রহ, সংরক্ষণ, প্রক্রিয়াজাতকরণ, প্রচার ও প্রয়োগ করার ক্ষেত্রে ব্যক্তির সর্বাধিক নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা কিভাবে বজায় থাকবে তা নিশ্চিত করতে হবে। আর বিভিন্ন দেশের মতো বাংলাদেশেও মানুষের ব্যক্তিগত গোপনীয়তা লঙ্ঘনের মতো চরম নৈতিক অপরাধকে প্রতিহত করার জন্য আইনি ব্যবস্থা থাকা জরুরি। কেউ ইচ্ছা করলেই যাতে আরেক নাগরিকের অধিকার ক্ষুন্ন করতে না পারে সেজন্য শক্ত আইন থাকা উচিত।

আইন ব্যক্তির পক্ষে তার অধিকার সংরক্ষণে দায়িত্ব পালন করে। এর সঙ্গে সঙ্গে আইন মেনে চলার জন্য জনসচেতনতাও প্রয়োজন। শুধু আইন দিয়ে এই অপকর্ম বন্ধ করা যাবে না। মানুষ নৈতিক মূল্যবোধের বিষয়ে সজাগ হলে ব্যক্তিগত গোপনীয়তা লঙ্ঘনের মতো চরম নৈতিক অপরাধ নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।★ইসলামের দৃষ্টিতে মানুষের ব্যক্তিগত তথ্য প্রকাশে বিধি-নিষেধ আরোপ করেছেঃ-ইসলাম ধর্মে ব্যক্তির মান-মর্যাদা সুরক্ষার বিষয়ে জোর তাগিদ দেয়া হয়েছে। ব্যক্তিগত গোপনীয়তা রক্ষাকে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির আমানত রক্ষা হিসেবে বিবেচনা করা হয়। কোনো মুসলমান ভাইয়ের দৃষ্টিতে অপর মুসলমান ভাইয়ের দোষত্রুটি পরিলক্ষিত হলে, সে ক্ষেত্রে কতর্ব্য হলো ওই দোষত্রুটি গোপন করা, জনসম্মুখে প্রকাশ করে তাকে হেয় বা লাঞ্ছিত না করা। এ বিষয়ে ইসলামের সুস্পষ্ট দৃষ্টিভঙ্গি হলো, আবু হুরায়রা রা: থেকে বর্ণিত মহানবী সা: বলেছেন, ‘এক মুমিন আরেক মুমিনের আয়না ও ভাই।’ (আবু দাউদ, হাদিস-৪৯১৮)ইসলাম ব্যক্তির গোপনীয়তা সুরক্ষার ব্যাপারে তার অনুসারীদেরকে জোর তাগিদ দিয়েছে।

ব্যক্তিগত গোপনীয়তা সুরক্ষায় ইসলামের দৃষ্টিভঙ্গি খুবই গুরুত্বপূর্ণ ও বাস্তবসম্মত। পবিত্র কুরআন মাজিদে আল্লাহপাক ইরশাদ করেন, ‘হে মুমিনগণ, তোমরা অনেক ধারণা থেকে বেঁচে থাকো। নিশ্চয়ই কতক ধারণা গোনাহ এবং গোপনীয় বিষয় সন্ধান করো না। তোমাদের কেউ যেন কারো পশ্চাতে নিন্দা না করে। তোমাদের কেউ কি তারা মৃত ভ্রাতার মাংস ভক্ষণ করা পছন্দ করবে? বস্তুত তোমরা তো একে ঘৃণাই কর। আল্লাহকে ভয় করো। নিশ্চয় আল্লাহ তওবা কবুলকারী, পরম দয়ালু।’ (সূরা হুজরাত, আয়াত-১২) পবিত্র কুরআনের সূরা হুজরাতের উল্লেখিত আয়াতে গুরুত্বপূর্ণ তিনটি বিষয় সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। ১. প্রবল ধারণা (অসৎ উদ্দেশ্যে, মন্দ ভাবনায়); ২. কারো কোনো গোপন দোষ সন্ধান করা এবং ৩, গিবত করা। ইসলামে এ তিনটি বিষয় স্পষ্টত হারাম।

আয়াতের প্রথম অংশ প্রবল ধারণা প্রসঙ্গে রাসূলুল্লাহ সা: বলেন, ‘তোমাদের কারো আল্লাহর প্রতি সু-ধারণা পোষণ ব্যতীত মৃত্যুবরণ করা উচিত নয়।’ (সহিহ মুসলিম-৫১২৫, আবু দাউদ-২৭০৬, ইবনে মাজাহ-৪১৫৭) অন্য এক হাদিসে আছে ‘আমি আমার বান্দার সাথে তেমনি ব্যবহার করি, যেমন সে আমার সম্বন্ধে ধারণা রাখে। এখন সে আমার প্রতি যা ইচ্ছা ধারণা রাখুক।’ (মুসনাদে আহমাদ-১৫৪৪২) এ থেকে জানা যায়, আল্লাহর প্রতি ভালো ধারণা পোষণ করা ফরজ এবং কু-ধারণা পোষণ করা হারাম। এমনিভাবে যেসব মুসলিম বাহ্যিক অবস্থার দিক দিয়ে সৎকর্মপরায়ণ দৃষ্টিগোচর হয়, তাদের সম্পর্কে প্রমাণ ব্যতিরেকে কু-ধারণা পোষণ করা হারাম। রাসূলুল্লাহ সা: বলেন, ‘তোমরা ধারণা থেকে বেঁচে থাকো। কেননা, ধারণা মিথ্যা কথার নামান্তর।’ (সহিহ বুখারি-৪০৬৬, মুসলিম-২৫৬৩)
আয়াতে আলোচিত দ্বিতীয় নিষিদ্ধ বিষয় হচ্ছে, কারো দোষ সন্ধান করা, যাকে আমরা ‘ব্যক্তিগত গোপনীয়তা’ বুঝি। ব্যক্তিগত গোপনীয়তাকে প্রকাশ করার দ্বারা নানা রকম ফিতনা-ফ্যাসাদ সৃষ্টি হয়।

এ কারণে একবার নবী সা: তার খুতবার দোষ অন্বেষণকারীদের সম্পর্কে বলেছেন, ‘হে সেই সব লোকজন, যারা মুখে ঈমান এনেছ কিন্তু এখনো ঈমান তোমাদের অন্তরে প্রবেশ করেনি, তোমরা মুসলিমদের ‘গোপনীয়’ বিষয় খোঁজে বেড়িও না। যে ব্যক্তি মুসলিমদের দোষ-ত্রুটি তালাশ করে বেড়াবে আল্লাহ তার দোষ-ত্রুটির অন্বেষণে লেগে যাবেন। আর আল্লাহ যার ত্রুটি তালাশ করেন তাকে তার ঘরের মধ্যে লাঞ্ছিত করে ছাড়েন।’ (সুনানে আবু দাউদ-৪৮৮০) মুআবিয়া রা: বলেন, আমি নিজে রাসূলুল্লাহ সা:কে বলতে শুনেছি ‘তুমি যদি মানুষের গোপনীয় বিষয় জানার জন্য পেছনে লাগো। তাদের জন্য বিপর্যয় সৃষ্টি করবে কিংবা অন্তত বিপর্যয়ের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে দেবে।’ (সুনানে আবু দাউদ-৪৮৮৮) অন্য এক হাদিসে রাসূলুল্লাহ সা: বলেন, ‘মুসলিমদের গিবত করো না এবং তাদের দোষ অনুসন্ধান করো না। কেননা, যে ব্যক্তি মুসলিমদের দোষ অনুসন্ধান করে, আল্লাহ তার দোষ অনুসন্ধান করেন। আল্লাহ যার দোষ অনুসন্ধান করেন, তাকে স্বগৃহেও লাঞ্ছিত করে দেন।’ (সুনানে আবু দাউদ-৪৮৮০) ব্যক্তির ব্যক্তিগত গোপনীয়তা লঙ্ঘন করে দোষ-ত্রুটি অনুসন্ধান না করার এ নির্দেশ শুধু ব্যক্তির জন্যই নয়, বরং ইসলামী সরকারের জন্যও।

এ ক্ষেত্রে উমর রা:-এর এ ঘটনা অতীব শিক্ষাপ্রদ। একবার রাতের বেলায় তিনি এক ব্যক্তির কণ্ঠ শুনতে পেলেন। সে গান গাইছিল। তাঁর সন্দেহ হলো। তিনি তার সাথী আবদুুর রহমান ইবনে আওফ রা:কে বললেন, ‘এ ঘরটি কার?’ বলা হলো, এটি রবিআ ইবনে উমাইয়া ইবনে খালফের ঘর। তারা এখন শরাব খাচ্ছে। আপনার কী অভিমত? অতঃপর আবদুর রহমান ইবনে আওফ বললেন, আমার অভিমত হচ্ছে যে, আমরা আল্লাহ যা নিষেধ করেছে তা-ই করে ফেলছি। আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে তা করতে নিষেধ করে বলেছেন, ‘তোমরা গোপন বিষয়ে অন্বেষণ করো না’। (সূরা হুজুরাত, আয়াত-১২) তখন উমর ফিরে এলেন এবং তাকে ছেড়ে গেলেন। (মুস্তাদরাকে হাকিম-৮২৪৯, মাকারিমুল আখলাক : আবু বকর মুহাম্মদ ইবনে জাফর আল খারায়েতি-৩৯৮, ৪২০, মুসান্নাফে আব্দির রাজ্জাক-১০/২২১) এ থেকে প্রমাণিত হয় যে, খুঁজে খুঁজে মানুষের গোপন দোষ-ত্রুটি বের করা এবং তারপর তাদেরকে পাকড়াও করা শুধু ব্যক্তির জন্যই নয়, ইসলামী সরকারের জন্যও জায়েজ নয়। একটি হাদিসেও এ কথা উল্লিখিত হয়েছে।

ওই হাদিসে নবী সা: বলেছেন, ‘শাসকরা যখন সন্দেহের বশে মানুষের দোষ অনুসন্ধান করতে শুরু করে তখন তা তাদের চরিত্র নষ্ট করে দেয়।’ (সুনানে আবু দাউদ-৪৮৮৯)পরিশেষে কোনো তথ্য সমাজে প্রচার পেয়ে গেলেই তা প্রচার করা উচিত নয়। কেননা সমাজে প্রচারিত বহু তথ্যই ভিত্তিহীন হয়ে থাকে। আল্লাহ বলেন, ‘যখন তারা এটা শুনল, তখন মুমিন পুরুষ ও মুমিন নারীরা আপন লোকদের সম্পর্কে কেন ভালো ধারণা করল না এবং বলল না, এটা তো সুস্পষ্ট অপবাদ।’ (সুরা : নুর, আয়াত : ১২)আল্লাহ সবাইকে অন্যের তথ্য প্রকাশের প্রবণতা থেকে রক্ষা করুন। আমিন।

লেখক : সম্পাদক ও প্রকাশক, দৈনিক স্বাস্থ্য তথ্য, প্রতিষ্ঠাতা, জাতীয় রোগী কল্যাণ সোসাইটি।