জে.জাহেদ, চট্টগ্রাম : প্রতিনিয়তই চরপাথরঘাটাবাসীর দুর্ভোগ চলছে। পাকা সেতু হবে এ আশায় এলাকাবাসীর ২৪ বছর ধরে অপেক্ষায় আছেন। কিন্তু চট্টগ্রাম কর্ণফুলীর নয়াহাট সেতুটি সংস্কার হয় কিন্তু পাকা হয় না। জনপ্রতিনিধিরা বারবার শুধু প্রতিশ্রুতিই দিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু আজ অবধি ওই সেতু পাকা হয়নি। 

চরপাথরঘাটা ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডস্থ কর্ণফুলী নদীর শাখা খালের ওপর লোহার তৈরি নয়াহাট সেতুটি র্দীঘদিন ধরে ঝুঁকিপূর্ণ থাকায় এবারও সংস্কার চলছে। গত ২৪ বছরে প্রায় ৮/১০ বার সংস্কার কাজ হয়েছে।

চরপাথরঘাটা এলাকার স্থায়ী বাসিন্দা মার্শাল মনির জানান, নয়াহাট সেতুর সংস্কার কাজ চলছে দেখে খুব আনন্দ লাগছে। যদি পাকা করা হতো আরো বেশি খুশি হতাম। পাশাপাশি বলবো, সেতুর সংস্কার কাজে যেন ৭/৮টা পিলার বাড়িয়ে দেওয়া হয়। কেননা এতে সেতুর স্থায়িত্ব বাড়বে। সেতুর পাটাতনে দেয়া স্পীড ব্রেকার গুলো ওয়েল্ডিং করে যদি ফিনিশিং করে দেওয়া হয়। তখন গাড়ি চলাচলে সুবিধা হতো।

দুই যুগ লোহার তৈরি পাটাতনের সেতুর উপর দিয়ে প্রতিদিন যেত হাজার হাজার মানুষ। ঝুঁকিপূর্ণ সেতুটি দেখেও কোন প্রকার পাকা করার উদ্যোগ নেয়নি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। যদিও সব সরকারের আমলে আশ্বাস পেয়েছে শুধু স্থানীয়রা। অনেকেই আবার জনপ্রতিনিধিদের আন্তরিকতার অভিযোগ তুলেছেন।

দেখা যায়, চরপাথরঘাটা পুরাতন ব্রিজঘাট থেকে মাত্র অল্প কিছু দুরে এই সেতুটি অবস্থিত। এই সেতু দিয়ে চরপাথরঘাটা ১,২,৩ নং ওয়ার্ডের ৩৫ হাজারেরও অধিক মানুষের চলাচল। এলাকার মানুষ ঝুঁকিপূর্ণ এই সেতুটি পাকা করার দাবি জানিয়েছেন।

যদিও কিছুদিন আগে চরপাথরঘাটা ইউনিয়ন পরিষদ থেকে আড়াই লক্ষ টাকা ও কর্ণফুলী উপজেলা পরিষদ থেকে ৪ লক্ষ টাকা মিলে মোট ৬ লক্ষ ৫০ হাজার ব্যয় করে সংস্কার কাজ করা হয়। কিন্তু তিন মাসেই তা জলে যায়। মূলত টেকসই উন্নয়ন না হওয়ায় সব সময় সেতুটি চরপাথরঘাটাবাসীর বিষ ফোঁড়ায় পরিণত হয়ে রয়েছে।

স্থানীয়রা জানান, এলাকাবাসীর কষ্ট দেখে ১৯৯৬ সালে প্রয়াত মেয়র মহিউদ্দিন চৌধুরী সিটি কর্পোরেশন এর পক্ষ থেকে নয়াহাট সেতু, যাত্রীছাউনী, আয়ুব বিবি স্কুল এন্ড কলেজ তৈরিতে এগিয়ে এসেছিলেন বলে তথ্য দেন।

উপজেলা এলজিইডি অফিস সূত্র জানায়, এলাকাবাসীর কষ্ট দূর করার জন্য দ্রুত মেরামতের ব্যবস্থা করা হয়েছে এবং সেতুটি নতুন তৈরীর বিষয়ে মন্ত্রী মহোদয় অবগত রয়েছেন।

উল্লেখ্য, ১৯৯৬ সালের ১৯শে ডিসেম্বর চরপাথরঘাটা মুক্ত বিহঙ্গ ক্লাবের ৫ম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে যোগদান করতে প্রয়াত মেয়র আলহাজ্ব এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী চরপাথরঘাটায় আসেন। সে সময় সংগঠনের পক্ষ থেকে দাবি তোলা হলে নয়াহাট সেতু লোহার পাটাতন দিয়ে তৈরী করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন মেয়র। যা পরে ১৯৯৮ সালে তৈরি শুরু করে এবং ২০০০ সালের ২৯ জানুয়ারী উদ্বোধন করেন তিনি। এর পুর্বে ১৯৯৫-৯৬ সালের দিকে স্থানীয় মানুষের সহযোগিতায় তৈরি করা হয়েছিল কাঠের একটি সাকোঁ। যা দিয়ে কোনমতে মানুষ পারাপার করতেন।

(জেজে/এসপি/জানুয়ারি ২৮, ২০২২)