রিপন মারমা, রাঙামাটি : রাঙামাটি কাপ্তাই জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রে স্থাপিত ১৯৫৩ সালে নির্মিত শীতল পাথর দিয়ে তৈরি কাপ্তাই জল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জামে মসজিদটি দেশের মধ্যে সবচেয়ে বড় এক গম্বুজ বিশিষ্ট মসজিদ। আধুনিক যুগে দৃষ্টিনন্দন স্থাপত্যের এক অনন্য দৃষ্টান্ত হতে পারে মনমুগ্ধকর মসজিদটি।

বিউবো উচ্চ বিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস যেমন সবুজ শ্যামলে ভরপুর। ক্যাম্পাসে সামনে ঐতিহ্যবাহী এক গম্বুজ মসজিদ।তেমনি এখানে রয়েছে অনন্য স্থাপত্যের কিছু পিডিবি কোয়ার্টার

মসজিদটি দেশের বৃহত্তর এক গম্বুজ বিশিষ্ট মসজিদ।অনন্য স্থাপত্যের মধ্যে এটি অন্যতম। মসজিদটির অসাধারণ নির্মাণশৈলী ক্যাম্পাসের সৌন্দর্যকে এক নতুন রুপ দিয়েছে।

নজরকাড়া নকশায় নির্মিত এই মসজিদটি বাংলাদেশের আধুনিক নির্মাণশৈলীর এক অনন্য নিদর্শন।স্থাপনাটি রাঙামাটি জেলা কাপ্তাই উপজেলার ৪ নং কাপ্তাই ইউনিয়নে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড কাপ্তাই প্রজেক্ট এলাকায় অবস্থিত। স্থানীয়দের মতে এই স্থাপনাটি গত ৬০ বছরে বাংলাদেশে নির্মিত বিরল স্থাপত্যের একটি।

সুন্দর মসজিদ দেখতে এসেছেন মোহাম্মদ কামরুল, মোহাম্মদ আক্তার আলম, জাবেদ হোসেন ও বেলাল হোসেন বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিষয়টি জানতে পেরে মসজিদটি দেখতে আসি। আধুনিক যুগে তৈরি এমন স্থাপনা আগে কখনো দেখা যায়নি। স্থাপনাগুলোর কারুকার্য ও নির্মাণশৈলী দেখতে চোখ ধাঁধানো। সাধারণত মুঘল স্থাপনা এই ধরনের নকশা দিয়ে নির্মিত হয়।

মসজিদটিতে দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামায ছাড়াও শুক্রবার জুম্মার নামায পড়ানো হয়। শুক্রবার যেন মসজিদের পিডিবি কর্মকর্তা কর্মচারী শিক্ষার্থী এবং শিক্ষকদের মিলনমেলায় পরিনত হয়। ওই দিন দুপুড় ১২ টা থেকেই যেন এলাকায় বাইরে ছেলেরা দল বেধে শিক্ষার্থীরা নামায আদায় করতে আসে বৃহত্তর এই মসজিদটিতে। শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীতে মসজিদটি ভরে ওঠে কানায় কানায়।

জুম্মার নামায ছাড়াও মসজিদে ঈদের নামাযও আদায় করা হয়। ঈদের দিনে শিক্ষক, কর্মচারী-কর্মকর্তা সহ আশেপাশের এলাকা থেকে মুসল্লিরা নামাজ আদায় করতে আসে। এসময় মুসল্লিদের আগমন যেন মিলনমেলায় রুপ নেয়।

পর্যটন এলাকায় কাপ্তাইয়ে যখনি বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রতিদিন পর্যটকরা বেড়াতে আসলেই অসংখ্য দর্শনার্থী এই মসজিদটি দেখতে পিডিবি কর্তৃপক্ষের নিকট আসতে দেখা যায়। মসজিদটির গম্বুজ বা শুধু নকশাতেই নয়, এই মসজিদের কিছু অনন্য বৈশিষ্ট্য রয়েছে।

দর্শনার্থীরা জানান, বাংলাদেশের আর কোনো মসজিদে এটি দেখা যায় না। মসজিদটির সৌন্দর্য এবং নির্মল পরিবেশ মহান আল্লাহর সাথে একাগ্রতা বৃদ্ধি করে। এর অসাধারণ নির্মাণশৈলী দেখেই মন জুড়িয়ে যায়। তাইতো হাজারো ব্যস্ততা ভুলে গিয়ে ছাত্রশিক্ষক,বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডে কর্মকর্তা-কর্মচারিসহ অন্যান্য মুসলমানরা একই কাতারে এক আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করতে হাজির হয় অসাধারণ নির্মাণশৈলী এই মসজিদটিতে।

কাপ্তাই বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড ম্যানেজার এটিএম আব্দু জ্জাহের জানান, এই মসজিদের প্রধান বৈশিষ্ট্য হল মসজিদটির স্থপতি একটি বাংলাদেশী স্থাপত্য প্রতিষ্ঠানের দ্বারা ডিজাইন করা হয়েছে।

মসজিদটির একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য হলো, সেখানে ইবাদত করতে আসা মুসল্লিরা মসজিদের ভেতরে বসে রোদ, বৃষ্টি ও কুয়াশার দৃশ্য উপভোগ করতে পারবেন। কারণ এই মসজিদটি এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে যাতে গরম আবহাওয়ায় মসজিদকে শীতল করার জন্য এর ভিতরে রয়েছে শীতল পাথর দিয়ে তৈরী এক গম্বুজ বিশিষ্ট মসজিদটিকে গরমকালে শীতল রাখে।

এর দুপাশে রয়েছে প্রাকৃতিক বন ও নদীর শীতল জলাধার। মুসল্লিদের জন্য একটি শান্তিপূর্ণ জায়গা তৈরি করতে মসজিদটিতে মনমুগ্ধকর প্রাকৃতিক আলো রয়েছে। পুরো মসজিদের দেয়াল বাইরে থেকে দেখলে মনে হয় পুরো দেয়ালটি ইটের তৈরি। পুরো মসজিদে একসঙ্গে প্রায় দুই হাজার ১০০ শত মুসল্লিরা জামাতে নামাজ আদায় করতে পারেন। বিউবো জামে মসজিদ নিয়মিত নামাজের পাশাপাশি ঈদগাহ হিসেবে ব্যবহার করারও উপযুক্ত স্থান।

(আরএম/এসপি/ফেব্রুয়ারি ১১, ২০২২)