ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি : ঠাকুরগাঁও পৌর-শহরের মুসলিম নগর এলাকায় জহির খান নামের এক প্রবাসীর নির্মাণধীন বাড়ি পুলিশের উপস্থিতিতে ভেঙ্গে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। বর্তমানে সেই প্রবাসী মানবেতার জীবনযাপন করছেন। প্রানের ভয়ে পরিবার নিয়ে ন্যায় বিচারের আশায় প্রশাসনের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন তিনি।

সোমবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) সকালে প্রায় ৩০জনের একটি দুর্বৃত্তের দল ওই প্রবাসীর বাড়ি-ঘর ভাঙচুর চালায় ও মালামাল নিয়ে যায়। পরে থানায় মামলা করতে গেলে পুলিশ মামলা না নিয়ে ফিরিয়ে দেন।

জানাযায়, প্রবাসী জহির খান ২০১৫ সালে স্থানীয় শহিদুল ইসলামের কাছে ৬’শতক জমি ক্রয় করেন। জহির খান গ্রীস থেকে ৩মাসের ছুটিতে এসে বাড়ির কাজ শুরু করলে হঠাৎ জমির মালিক দাবি করে বসে আনোয়ারা পারভিন নামে এক নারী। ওই নারী সোনালী ব্যাংক ঠাকুরগাঁও শাখার লোকজন, দু’জন পুলিশ ও ২৫/৩০ জন দুর্বৃত্তকে সঙ্গে নিয়ে ওই প্রবাসী নির্মাণধীন বাড়ির সীমানা প্রাচীর, ৪টি আরসিসি পিলারের দুটি পিলার ভেঙ্গে ফেলে আর বাড়ির বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।

প্রত্যক্ষদর্শী শফিকুল ইসলাম জানান, জোহার স্ত্রী আনোয়ারা একদল সন্ত্রাসী নিয়ে এসে প্রবাসী জহিরের বাড়িঘর ভাঙতে শুরু করেন। এসময় বাড়ির মহিলারা বাধা দিলে পুলিশের সামনেই মহিলাদের চুল ধরে ধাক্কায় ফেলেন দেন। আমরা কয়েকজন এগিয়ে গেলে রাম দা, চাইনিস কুড়াল নিয়ে আমাদের দিকে সন্ত্রাসীরা তেড়ে আসেন।

ভিকটিম প্রবাসী জহির খান বলেন, ৭ বছর আগে জমিটা ক্রয় করে বাড়ি করে বসবাস করছি। আমি ঢাকায় ভিসার কাজ শেষে বাসায় এসে দেখী সন্ত্রাসীরা আমার বাড়িঘর ভেঙ্গে দিয়েছে। ২২ বছরের পরিশ্রমের টাকায় আমি বাড়িটা করেছি। পুলিশ প্রশাসনকে ফোন করেছি তারা আসেননি। দুই দিন ধরে স্ত্রী ও ৭বছরের শিশুকন্যাকে নিয়ে নিরাপত্তার জন্য থানায় ঘুরাঘুরি করছি কিন্তু পুলিশ কোন কথা শুনছে না। মামলা দিতে গেলে মামলাও নিচ্ছে না। বরং পরামর্শ দিচ্ছেন কোর্টে মামলা করতে।

তিনি আরো জানান, ২২ বছর ধরে সরকারকে আমি রেমিটেন্স দিচ্ছি। আমি কি ন্যায় বিচার পাবো না। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে অনুরোধ আমি একজন প্রবাসী, রেমিটেন্স যোদ্ধা। আমার প্রতি একটু সদয় হোন।

অভিযোগ প্রসঙ্গে আনোয়ারা পারভিনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ঐ জায়গাটা আমার স্বামীর। সোনালী ব্যাংক ঠাকুরগাঁও শাখার আওয়াতাধীন রয়েছে। প্রবাসী জহির বাড়ির কাজ শুরু করলে আমি ব্যাংক ম্যানেজারকে বিষয়টি অবগত করি। ম্যানেজার তখন ওসিকে ফোন করেন। পরে পুলিশ ও ব্যাংকের লোকদের সামনেই বাড়ির সীমানা প্রাচীর ও আর সিসি পিলার গুলো ভেঙ্গে দেওয়া হয়।

সদর থানার ওসি তানভিরুল ইসলাম জানান, মুসলিম নগরে একটি জমি সংক্রান্ত ঝামেলা হওয়ায় আমি অফিসারকে ঘটনাস্থলে পাঠাই। পরে জানতে পারি বন্ধকী সম্পত্তি ব্যাংক কর্তৃক। পরে আমার অফিসার কাগজপত্র সংগ্রহ করে ডায়রিতে নোট করেছে।

এ বিষয়ে সোনালী ব্যাংক ঠাকুরগাঁও শাখার ম্যানেজার নিরঞ্জন চন্দ্র রায়ের সঙ্গে কথা বলতে গেলে তিনি কথা বলতে রাজী হননি।

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু তাহের মো: সামশুজ্জামান বলেন, এই বিষয়ে আমার কিছুই জানা নেই। কেও যদি বলে থাকে আমি ভাঙ্গার অনুমতি দিয়েছি সেটা ভিত্তিহীন হীন।

(এফআর/এসপি/ফেব্রুয়ারি ১৭, ২০২২)