অরিত্র কুণ্ডু, ঝিনাইদহ : ঝিনাইদহের সদর উপজেলার ধোপাবিলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মাঠ দখল করে রাখা হয়েছে রাস্তার কাজের নির্মাণ সামগ্রী। দীর্ঘদিন ধরে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ওই স্কুল মাঠে ফেলে রেখেছেন বালুমিশ্রিত পাথর ও বুলডোজার। এতে খেলাধুলা,পাঠদান ও স্কুলে যাতায়াত করতে গিয়ে দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা। অনেক শিক্ষার্থী পাথরকুচির আঘাতে আহত হচ্ছে। দীর্ঘদিন ধরে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান স্কুল মাঠে নির্মাণ সামগ্রী ফেলে রাখলেও সেগুলো সরানোর ব্যাপারে কোনো উদ্যোগ নেয়নি সংশ্লিষ্ট দফতর। এ নিয়ে এলাকাবাসীদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।কাজের মান নিয়েও নানা রকম অভিযোগ এলাকাবাসীর। নির্মিত রাস্তায় টান দিলেই অনেক জায়গায় পিচ উঠে যাচ্ছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, উপজেলা প্রকৌশল বিভাগের (এলজিইডি) অধীনে ২০২১-২০২২ অর্থবছরে কুমড়াবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের সামনে থেকে শোলমারী বাজার পর্যন্ত ৩.২ কিলোমিটার রাস্তার নির্মাণ কাজ শুরু হয় গত বছর। কাজের ব্যয় ধরা হয়েছে ৮৬ লাখ টাকা। কাজটি পায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান অনিক এন্টারপ্রাইজ। শুরুর কিছুদিনের মাথায় অজানা কারণে স্কুল মাঠ দখল করে নির্মাণ সামগ্রী রাখে ওই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। সাথে আরো রেখে যায় নির্মাণ কাজের জন্য আনা বালু-পাথর, বিটুমিনের ড্রাম এবং একটি বুলডোজার।

সরেজমিন দেখা যায়, স্কুল মাঠের অধিকাংশ জায়গায় ফেলে রাখা হয়েছে পাথর। মাঠজুড়ে ছড়িয়ে আছে পাথরের কুচি। মাঠের এক কোণে রাখা হয়েছে বুলডোজার। ছোট ছোট পাথরকুচি ছড়িয়ে পড়েছে পুরো মাঠে। বন্ধ হয়ে গেছে খেলাধুলা। আর একটু বাতাস হলেই উড়ছে ধুলোবালি। শ্রেণিকক্ষে জমা হচ্ছে ধূলার আস্তরণ। অসুবিধার কারণে অতি সম্প্রতি মাঠে রাখা বেশ কিছু বিটুমিনের খালি ড্রাম স্কুলের প্রধান শিক্ষক লোকজন দিয়ে অন্য জায়গায় সরিয়ে রাখেন। স্কুল মাঠে নির্মাণ সামগ্রী ফেলে রাখায় ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন এলাকাবাসী।

এ ব্যাপারে ধোপাবিলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. মিজানুর রহমান বলেন, স্কুল মাঠে নির্মাণ সামগ্রী রাখতে নিষেধ করা হয়েছিল। কিন্তু তারা শোনেননি। বালু ও পাথরের কারণে ছোট ছোট ছেলেমেয়েরা স্কুলে যাতায়াত এবং খেলাধুলা করতে পারছে না। এটা নিয়ে খুব বিব্রতকর পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছি। বিষয়টি উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে শীঘ্রই জানানো হবে বলেও জানান তিনি।

বিষয়টি জানতে চাইলে ঠিকাদার স্বপন পোদ্দার জানান, আমি সাবেক চেয়ারম্যান আশরাফ সাহেবের কাছ থেকে অনুমতি নিয়ে নির্মাণ সামগ্রী রেখেছি।

এ বিষয়ে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম শাহীন জানান, স্কুল মাঠে নির্মাণ সামগ্রী রেখে শিক্ষার্থীদের অসুবিধা করা ঠিক হয়নি।আমি সরেজমিনে গিয়ে অতি সত্বর এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

সদর উপজেলা নির্বাহী প্রকৌশলী আহসান হাবিব জানান, কাজের মান অনেক ভালো। এতে কোন সন্দেহ নেই। কেউ শত্রুতা করে এই পিচ উঠিয়েছে।

বিদ্যালয়ে নির্মাণ সামগ্রী রাখার ব্যাপারে তিনি জানান একটি নির্দিষ্ট স্থানে রেখে তো কাজ করতে হবে। ঠিকাদার কোথায় সামগ্রী রেখে কাজ করেছে সেটা আমাদের দেখার বিষয় না।

(একে/এসপি/ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০২২)