মাদারীপুর প্রতিনিধি : ইউক্রেনে রকেট হামলায় বাংলাদেশী জাহাজ বাংলার সমৃদ্ধিতে থাকা মাদারীপুরের মেয়ে ক্যাডেট ফারজানা ইসলাম মৌ বর্তমানে নিরাপদে আছেন বলে পারিবারিক সুত্রে জানা গেছে। রাশিয়া ২৩ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে হামলা শুরু করে। তারপর থেকেই উদ্বেগ আর উৎকন্ঠায় দিন কাটাচ্ছিলেন মৌ এর পরিবারের লোকজন। বৃহস্পতিবার রাতে মৌ নিরাপদে আছেন সংবাদের ভিত্তিতে তাদের পরিবারে স্বস্তি ফিরে এসেছেন। তবে মৌ এখন কোথায় আছেন তা জানাতে পারেননি তার পরিবার। তিনি মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলা সদরের ফকরুল ইসলামের মেয়ে।

পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, ফারজানা ইসলাম মৌ ২০১৫ সালে রাজৈর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক এবং ঢাকার একটি কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করে চট্টগ্রাম মেরিন একাডেমীতে ৫৪ তম ব্যাচে ভর্তি হন। লেখাপড়া শেষ করে ইন্টার্নি করার জন্য ১ বছর আগে বাংলার সমৃদ্ধি জাহাজে বিভিন্ন দেশে অবস্থান করেন। সর্বশেষ তুরস্ক থেকে রওনা হয়ে ২২ ফেব্রুয়ারি জাহাজটি ইউক্রেনের অলিভিয়া বন্দরে পৌঁছায়। ২৩ ফেব্রুয়ারি থেকে যুদ্ধ শুরু হওয়ায় জাহাজটি বন্দর ত্যাগ করতে পারেনি। এ অবস্থায় ২ মার্চ বাংলার সমৃদ্ধি জাহাজে রাশিয়া রকেট হামলা চালায়। হামলায় বরগুনার বেতাগী উপজেলার জাহাজের থার্ড ইঞ্জিনিয়ার হাদিসুর নিহত হন। জাহাজে বাংলাদেশী আরও ২৯ জন ছিলেন। এরপর ৩ মার্চ সকালে মৌ নিজের ফেসবুক আইডিতে লাইভে এসে বিপদের কথা জানিয়ে তাদেরকে নিরাপদে নিয়ে যাওয়ার আকুতি জানান। তারপর রাতে একটি বোট গিয়ে তাদেরকে উদ্ধার করে নিরাপদ স্থানে নিয়ে গেছেন।

ফারজানা ইসলাম মৌ-এর বড় ভাই ফাহাদ মাহমুদ লিমন বলেন, “যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকেই আতঙ্কে ছিলাম। ঠিকমত ছোট বোনের সাথে যোগাযোগও করতে পারিনি। বৃহষ্পতিবার রাতে ছোট বোনের সাথে কথা হয়েছে। সে নিরাপদে আছে। তবে কোথায় কি অবস্থায় আছে তা জানিনা।”

মৌ এর মা মাহমুদা বিউটি বলেন, “ইউক্রেনে যুদ্ধ শুরুর পর থেকে মেয়ের চিন্তায় ঠিকমত গোসল করতে পারিনি, খেতে পারিনি। রাতে ঘুমাতে পর্যন্ত পারিনি। বৃহষ্পতিবার রাতে মৌ-এর সাথে কথা হয়েছে। সে নিরাপদে আছে। আল্লাহর কাছে প্রার্থণা করি আমার মৌ যেন নিরাপদে দেশে ফিরে আসতে পারে।”

ফারজানা ইসলাম মৌ লাইভে এসে জানান, “আমি ইঞ্জিন ক্যাডেট মৌ। বাংলার সমৃদ্ধি থেকে বলছি। আমাদের থার্ড ইঞ্জিনিয়ার স্যার মারা গেছেন। আমাদের শিপে বম্বিং হইছে। আমরা এখনও শিপের মধ্যে আছি। আমরা সবাই চাচ্ছি এখান থেকে বের হতে। আপনারা প্লিজ আমাদের কোন একটি উপায়ে বের করুন। আমরা এখানে থাকতে চাচ্ছিনা।”

(এএসএ/এএস/মার্চ ০৫, ২০২২)