নিউজ ডেস্ক : প্রতিবছরের ৮ মার্চ বিশ্বব্যাপী পালিত হয় আন্তর্জাতিক নারী দিবস। এ বছর নারী দিবসের মূল প্রতিপাদ্য ‘সবার জন্য সমতা’ বা ‘ইচ ফর ইক্যুয়াল’। নারী-পুরুষের সমতার লক্ষ্যেই ও নারী প্রতি সম্মান প্রদর্শনেই প্রতিবছর এই দিবস পালিত হয়ে আসছে।

তবে আন্তর্জাতিক এই দিবসের সঙ্গে বেগুনি রঙের কী সম্পর্ক, সে বিষয়ে কখনো ভেবে দেখেছেন? নারী দিবসের প্রতীক হলো বেগুনি রং। যেমন বিশ্ব শান্তি দিবস সবুজাভ নীল, বিশ্ব শ্রম দিবস বা মে দিবসে লাল, পরিবেশ দিবসে সবুজ রং ইত্যাদি। প্রতিটি দিবসে আলাদা রঙের প্রতীক হওয়ার পেছনেও আছে ভিন্ন ইতিহাস।

আন্তর্জাতিক নারী দিবস মূলত বেগুনির সঙ্গে সাদার মিশেল কিংবা শুধুই বেগুনি। নারী দিবসের বেগুনি রং ভেনাসের। যা কি না নারীরও প্রতীক। কারণ বেগুনি নির্দেশ করে সুবিচার ও মর্যাদার। যা দৃঢভাবে নারীর সমতায়নের সঙ্গে সংশ্নিষ্ট। দীর্ঘ আন্দোলন সংগ্রাম শেষে বেগুনি রং এখন নারীবাদীদের প্রতিবাদের এক অনন্য প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়েছে।

কেন বেগুনিই হলো নারীর প্রতীকী রং?
আন্তর্জাতিক নারী দিবসের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট আইডব্লিউডি ডটকমের ব্যাখ্যায় গেছে, কেন বেগুনিকেই দিবসের প্রতীক রং ধরা হলো। আন্তর্জাতিকভাবে নারীর প্রতীক হিসেবে ধরা হয় বেগুনি রংকে। এ রঙের ঐতিহাসিক কারণও আছে।

বেগুনি রঙের সংমিশ্রণ যার সবুজ এবং সাদা দেখা হয় নারীর সমমর্যাদার প্রতীক হিসেবে। এর সূত্রপাত ঘটেছিল ১৯০৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রে নারীর সামাজিক ও রাজনৈতিক ইউনিয়ন থেকে। বেগুনিকে দেখা হতো নারীর ন্যায়বিচার ও সম্মানের প্রতীক।

সবুজ হলো আশা ও সাদা বিশুদ্ধতার প্রতিনিধিত্ব করে। ২০১৮ সাল থেকে নারী দিবসের থিম কালার হিসেবে স্থান করে নিয়েছে বেগুনি। ওই বছর আন্তার্জাতিক প্রতিষ্ঠান প্যান্টন বেগুনি রংকে নারী দিবসের রং হিসেবে ঘোষণা দেয়। এই বেগুনি দিয়ে সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মিকে বোঝানো হয়। আর নারীরা হবে ঠিক অতিবেগুনি রশ্মির মতো শক্তিশালী।

১৮৫৭ সালে যুক্তরাষ্ট্রে নারী শ্রমিকদের হাত ধরেই সূচনা ঘটে নারী দিবসের। নারীর ক্ষমতায়ন ও ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠায় কয়েকজন সাহসী নারী এক্ষেত্রে মুখ্য ভূমিকা পালন করেন। প্রায় ১৫ হাজার নারী সেদিন নিউইয়র্ক সিটির রাস্তায় নেমেছিলেন।

নারীর অধিকার রক্ষার আন্দোলন করেছিলেন তারা। ফলে বিশ্বব্যাপী প্রতি বছর পালন করা হয় আন্তর্জাতিক নারী দিবস। তাই ১৯৯৬ সাল থেকে জাতিসংঘ প্রতি বছর নারী দিবসের মূল প্রতিপাদ্য ঘোষণা করে আসছে। নারীর সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক সাফল্যগাথা ও লিঙ্গ সমতার মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো প্রাধান্য দিয়ে করা হয় এসব প্রতিপাদ্য।

১৯৭৫ সালে প্রথমবার যুক্তরাষ্ট্র পালন করে নারী দিবস। ১৯৭৭ সালে জাতিসংঘ সদস্য দেশকে নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠা ও বিশ্বশান্তির লক্ষ্যে দিবসটি উদযাপনের আহ্বান জানানোর পর থেকে ৮ মার্চ বিশ্বব্যাপী পালিত হয় দিবসটি। বিশ্বের অনেক দেশে সরকারি ছুটির দিন হিসেবে পালিত হয়।

(ওএস/এএস/মার্চ ০৮, ২০২২)