ওহিদুজ্জামান কাজল, মাদারীপুর : মাদারীপুরের কালকিনিতে মাশরুম চাষে এক নতুন সম্ভাবনার সৃষ্টি হয়েছে। কামরুল হাসান নামের এক বেকার যুবক মাশরুমের খামার চালু করেছেন। এরপর থেকেই উপজেলার সর্বত্র এখন মাশরুম চাষ নিয়ে স্থানীয় কৃষকসহ বেকার যুবক যুবতিদের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে। ডায়াবেটিসসহ বিভিন্ন রোগের ঔষধি গুণ থাকায় উপজেলার অনেক পরিবার এখন মাশরুমকে নিয়মিত খাদ্য তালিকায় অন্তর্ভূক্ত করছেন। ফলে দিন দিন এর চাহিদাও বৃদ্ধি পাচ্ছে।

সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে, কালকিনি উপজেলার শিকারমঙ্গল এলাকার আনোয়ার হোসেন চৌকিদারের ছেলে মো. কামরুল হাসান জীবন জীবীকার তাগিদে দীর্ঘদিন প্রবাসে থাকেন। সেখানে তিনি ঔষধিগুণ সমৃদ্ধ মাশরুমের ব্যাপক চাহিদা দেখতে পান। এতে উদ্বুদ্ধ হয়ে মাশরুম চাষের স্বপ্ন নিয়ে দেশে ফিরে আসেন তিনি। কিন্তু মাশরুম চাষের স্বপ্ন থাকলেও পরিবার ও স্থানীয়দের পরামর্শে প্রথমে মুরগির খামার করেন তিনি। মুরগির খামারে লোকসানের কবলে পরতে হয় তাকে। তাই নিজের স্বপ্ন পূরণ করতে মাশরুম চাষের চিন্তা করেন। গেন চিন্তা থেকেই মাগুরার ড্রিম মাশরুম প্রশিক্ষণ সেন্টারে ১০ দিনের প্রশিক্ষণ নেন। এরপর নিজ বাড়িতে একটি মাশরুমের খামার প্রতিষ্ঠা করেন। মাশরুম চাষ করে স্বপ্ন পূরণের পাশাপাশি উপজেলার বেকার যুবকদের দেখাচ্ছেন বেকারত্ব ঘুঁচিয়ে স্বাবলম্বী হওয়ার পথ।

স্থানীয় হাবিবুর রহমান, মলি বেগম, কলেজ ছাত্র আসাদুজ্জামান, সুজন মোল্লা, শাওন চৌকিদার, স্কুল ছাত্রী রুবিসহ একাধিক ব্যক্তি জানান, মাশরুমের চাহিদা বেশি থাকায় তারাও এখান থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে মাশরুম চাষের খামার গড়ে তুলবেন। এতে করে তাদের বেকারত্ব দুর হবে।

খামার মালিক মো. কামরুল হাসান বলেন, সরকারী-বেসরকারীভাবে সহযোগিতা পেলে মাশরুম চাষ কালকিনিতে একটি নতুন সম্ভাবনার সৃষ্টি হবে।

স্থানীয় পরিবেশবাদী সংগঠন ফ্রেন্ডস অভ নেচারের প্রতিষ্ঠাতা রাজন মাহমুদ বলেন, পোল্টি মুরগির খামারসহ বিভিন্ন খামার করে যেসব কৃষক এখন হতাশ হয়ে পরেছেন, তাদের জন্য নতুন সম্ভাবনার দ্বার খুলেছে মাশরুম চাষ। ঔষধিগুণ সমৃদ্ধ মাশরুম মানুষের উপকারী খাদ্য হওয়ায় দিন দিন দেশে বিদেশে এর ব্যাপক চাহিদাও রয়েছে। তাই স্বল্প পুঁজিতে খামার প্রতিষ্ঠা করে স্বাবলম্বী হওয়া যায়।

কালকিনি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মিল্টন বিশ্বাস বলেন, মাশরুম চাষে আগ্রহীদের ব্যাংক লোনের মাধ্যমে খামার প্রতিষ্ঠায় সহযোগিতা করা হলে অন্য বেকার যুবক যুবতিরাও স্বাবলম্বী হতে পারবেন।

(ওকে/এসপি/মার্চ ১৫, ২০২২)