গৌরাঙ্গ দেবনাথ অপু, ব্রাহ্মণবাড়িয়া : ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার পূর্বাঞ্চলে আবারও সন্ত্রাসীদের গুলিতে আতিকুর রহমান সুমন (৩০) নামে এক ফার্নিচার ব্যবসায়ী নৃশংসভাবে খুন হয়েছেন। আজ সোমবার (৪ এপ্রিল) ভোর আনুমানিক ৫টার দিকে উপজেলার পূর্বাঞ্চলের শিবপুর ইউনিয়নের বাঘাউড়া গ্রামে এ নৃশংস ঘটনাটি ঘটে। 

নিহত সুমনের পৈত্রিক বাড়ি মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলার আলিপুর গ্রামে। সুমন ওই গ্রামের মৃত আবু মিয়ার ছেলে।

পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, ফার্ণিচার ব্যবসায়ী সুমন গত ছয় সাত বছর ধরে বাঘাউড়া বাজারে একটি কাঠের দোকান খুলে (ফার্ণিচার) ব্যবসা করতো। সুমন ছিলেন অবিবাহিত। তার দোকানে সোহেল নামের একজন কর্মচারীও কাজ করতো।

পুলিশ জানায়, ঢাকায় থাকা বাঘাউড়া গ্রামের জনৈক হাসান মিয়ার বাড়িতে মাসিক ৮০০ টাকা ভাড়ায় সুমন ও সোহেল বসবাস করতো। ঘটনার দিন সোমবার ভোরে সেহেরী খাওয়ার পর সুমন নামাজ পড়ার জন্য দরজা খুলে বের হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই, পূর্ব থেকে ওৎ পেতে থাকা কে বা কারা খুব কাছ থেকে সুমনকে গুলী করে পালিয়ে যায়। এরপর ঘটনাস্থলেই সুমন মাটিতে লুটিয়ে পড়ে।

খবর পেয়ে নবীনগর সার্কেলের দায়িত্বে থাকা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. সিরাজুল ইসলাম, নবীনগর থানার ওসি আমীনুর রশীদ, শিবপুর পু্লিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এস আই নজরুল ইসলাম ঘটনাস্থলে ছুটে যান। পরে সুমনের লাশ উদ্ধার করে জেলা মর্গে পাঠায় পুলিশ।

এলাকাবাসী জানান, 'মাত্র কয়েকমাস আগে পাশ্ববর্তী কুড়িঘর এলাকায় একজন চেয়ারম্যান প্রার্থীসহ দুজনকে গুলী করে হত্যা করা হয়। এই ঘটনার পর আবারও গ্রামে গুলি করে একজন ব্যবসায়ীকে এরকম নৃশংসভাবে খুনের ঘটনার পর পুরো এলাকায় ফের নতুন করে প্রচন্ড ভীতি ও আতংক দেখা দিয়েছে।'

এ বিষয়ে কথা বলতে একাধিকবার নবীনগর থানার ওসি আমীনুর রশীদের মুঠোফোনে কল করলেও, তিনি ফোন ধরেননি।

পরে জেলার নবীনগর সার্কেলের দায়িত্বে থাকা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. সিরাজুল ইসলামের সঙ্গে দুপুর ১ টার দিকে কথা বললে, তিনি খুনের ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে উত্তরাধিকার ৭১ নিউজকে বলেন, 'ঘটনার খবর পেয়েই আমরা ঘটনাস্থলে ছুটে যাই এবং লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠাই। এলাকার সার্বিক পরিস্থিতিও এখন স্বাভাবিক।'

কেন এই নৃশংস হত্যাকান্ড? কোন 'ক্লু' পাওয়া গেছে কি? এরকম বারবার হত্যাকান্ডের ঘটনায় এখন পুলিশী ভূমিকা কি হবে? এমন সব প্রশ্নের জবাবে পুলিশের এই উর্ধতন কর্মকর্তা জানান, 'প্রাথমিকভাবে আমরা এখনও কোন কারণ খুঁজে পাইনি। তবে পুলিশ হত্যাকান্ডের বিষয়টি খুবই গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করছে। আশা করছি, শিগগীরই আপনারা (সাংবাদিক) সব জানতে পারবেন। তবে একটি প্রত্যন্ত গ্রামে কিভাবে আগ্নেয়াস্ত্র আবারও ঢুকল, পুলিশ সেটি যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়ে খতিয়ে দেখছে।'

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আরও জানান, 'ঘটনার বিস্তারিত জানতে ও সার্বিক পরিস্থিতির খোঁজ খবর নিতে মাননীয় জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার মহোদয়ও ঘটনাস্থলে দুপুরের দিকে সরজমিনে আসছেন।'

(জিডি/এসপি/এপ্রিল ০৪, ২০২২)