মাদারীপুর প্রতিনিধি : মেয়েদের স্টাইলে কথা বলার কারণেই কাল হয়ে দাঁড়ালো ১৮ বছরের ইয়াছিন আরাফাতের। জোর করে তাকে মাদারীপুর থেকে মাইক্রোবাসে তুলে খুলনা নিয়ে গিয়ে পুরুষাঙ্গ কেটে ফেলার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় হিজড়া ও তাদের ভ্যানচালকের বিরুদ্ধে। ঘটনার ৪দিন পর ওই কিশোরকে প্রাইভেটকারে নিয়ে এসে পুনরায় ফেলে রেখে যায় অভিযুক্তরা। বিষয়টি জানাজানির পর পুরো জেলাজুড়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।

পুলিশ সুপার জানান, অপরাধীদের খুঁজে বের করে নেয়া হবে আইনগত ব্যবস্থা। ইয়াছিন মাদারীপুর চর গোবিন্দপুর এলাকার রেজাউল মোড়লের ছেলে। সে স্থানীয় একটি মাদ্রাসার শিক্ষার্থী। এদিকে ঘটনার পর পলাতক রয়েছে অভিযুক্তরা। প্রধান অভিযুক্ত নুরু নকতি বাবনাতলা মোড় এলাকার খলিল নকতির ছেলে।

ভুক্তভোগীর পরিবার, হাসপাতাল ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার সকালে মাদারীপুর সদর উপজেলার মঠের বাজার থেকে ১৮ বছরের ইয়াছিন আরাফাতকে জোড় করে মাইক্রোবাসে তোলে স্থানীয় হিজড়াদের ভ্যানচালক নুরু নকতি। পরে তাকে নিয়ে যাওয়া হয় খুলনার একটি বেসরকারি ক্লিনিকে। সেখানে ওই কিশোরকে অচেতন করে পুরুষাঙ্গ ফেলার অভিযোগ ওঠে। পরে অবস্থা খারাপ হওয়ায় রবিবার সকালে একটি প্রাইভেটকারে ইয়াছিনকে মাদারীপুর শহরের পানিছত্র এলাকায় রেখে পালিয়ে যায় অভিযুক্তরা। খবর পেয়ে পরিবারের লোকজন তাকে উদ্ধার করে জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করে।

স্বজনদের অভিযোগ, স্থানীয় হিজড়া ও তাদের ভ্যানচালক নুরু নকতি তাদের দলে নিতেই ওই কিশোরের লিঙ্গ পরিবর্তণ করে। ইয়াছিনের মেয়েদের স্টাইলে কথা বলার অভ্যাস থাকার কারনেই হিজড়াদের দল ভাড়ী করতে ইয়াছিনের সাথে এমন অমানবিক ঘটনা হয়েছে উল্লেখ করে, সুষ্ঠু বিচার দাবি করেছেন স্বজন ও এলাকাবাসী।

ইয়াছিনের দাদী ফুলজান বিবি বলেন, আমার নাতীর জীবনের সবচে’ বড় ক্ষতি করেছে। এই ঘটনার বিচার চাই।

মানবধিকার কর্মী সুবল বিশ্বাস বলেন, এমন অমানবিক ঘটনার সাথে যারা জড়িত, তাদের দ্রুত খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনা উচিৎ। পৃথীবির ইতিহাসে এমন ঘটনা জানা নেই। বিষয়টি খুবই দুঃখজনক।

মাদারীপুর সদর হাসপাতালের ইমারজেন্সি মেডিকেল অফিসার ডা. রিয়াদ মাহমুদ বলেন, ইয়াছিন পুরুষাঙ্গ বিচ্ছিন্ন করা অবস্থা হাসপাতালে ভর্তি হয়। প্রসাবের জন্য আলাদা একটি পাইপ বসানো হয়। ইয়াছিনের অবস্থা গুরুতর।

মাদারীপুরের পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেল জানান, বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখা হচ্ছে। এই ঘটনায় যারা জড়িত তাদের সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে।

(এএসএ/এএস/এপ্রিল ০৪, ২০২২)