গৌরাঙ্গ দেবনাথ অপু, ব্রাহ্মণবাড়িয়া : 'এক কেজি মিষ্টি কেনার পর সেই মিষ্টি প্যাকেট থেকে বের করে পরক্ষণে ওজন দিতেই এক কেজি মিষ্টির ওজন হয়ে গেল ৭২৫ গ্রাম ! দেখা গেল, শুধু মিষ্টির প্যাকেটটির ওজনই ২৭৫ গ্রাম ! ভাবা যায়, ক্রেতার সঙ্গে ওজনে কতটা প্রতারণা করা হচ্ছে?  আর এভাবেই মিষ্টির দোকানীরা প্রতিদিন সাধারণ ক্রেতাদের ওজনে ঠকিয়ে অবৈধভাবে মুনাফা করে যাচ্ছেন।'

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার এসি ল্যান্ড ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. মোশারফ হোসাইন আজ দুপুরে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা শেষে দৈনিক বাংলা ৭১ ও উত্তরাধিকার ৭১ নিউজের কাছে মোবাইল কোর্টের বর্ণনা দিতে গিয়ে এভাবেই উপরোক্ত কথাগুলো বলছিলেন।

আজ বুধবার দুপুরে উপজেলার বাঙ্গরা বাজারে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করতে গেলে, প্রশাসনের কাছে এরকম অভিনব প্রতারণার ঘটনাটি ধরে পড়ে।

পরে বাঙ্গরা বাজারে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন লংঘনের দায়ে পাঁচজন অসাধু ব্যবসায়ীকে নগদ ৪১ হাজার টাকা অর্থদন্ড প্রদান করা হয়।

জানা গেছে, উপজেলার বিভিন্ন বাজারে রমজান উপলক্ষে বাজারে পণ্যের দাম স্থিতিশীল রাখার পাশাপাশি মেয়াদ উত্তীর্ণ পণ্য, ওজনে কম দেয়া, দোকানে মূল্য তালিকা না টাঙ্গানোসহ নানা বিষয়ের প্রতিকারে উপজেলা প্রশাসন ধারাবাহিকভাবে বাজার মনিটরিং ও ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে আসছিলেন।

এরই ধারাবাহিকতায় আজ দুপুরে উপজেলার জিনদপুর ইউনিয়নের বাঙ্গরা বাজারে এসি ল্যান্ড মোশারফ হোসাইন মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করেন। এ সময় বাজারে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন লংঘনের দায়ে পৃথক পৃথক ৫টি মামলায় বাজারের ৫ জন অসাধু ব্যবসায়ীকে মোট ৪১ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এসময় তাঁর সাথে জিনদপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও বাঙ্গরা বাজার পরিচালনা কমিটির সভাপতি রবিউল আউয়াল রবি, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী হারুনূর রশিদ, সাবেক ইউপি সদস্য নাজিম উদ্দিন উপস্থিত ছিলেন।

এসময় বাজারের ব্যবসায়ীদেকে প্রতিটি দোকানে মূল্যতালিকা টাঙ্গানো সহ সরকারের সকল নির্দেশনা মেনে চলার জন্য এসি ল্যান্ড সকলকে কঠোরভাবে নির্দেশনা প্রদান করেন। পরে বাজারের দুইটি মুদি দোকান থেকে মেয়াদ উত্তীর্ণ কিছু মালামাল জব্দ এবং মিস্টির দোকানে থাকা অতিরিক্ত ওজনকৃত প্যাকেট ধ্বংস করা হয়।

এসময় বাজারে মোবাইল কোর্টের অভিযানের কথা শুনে দোকান খোলা রেখেই কয়েকজন ব্যবসায়ী পালিয়ে যায়। পরে সেইসব দোকান জব্দ করে স্থানীয় চেয়ারম্যান ও বাজার কমিটির সভাপতির জিম্মায় সেগুলো হস্তান্তর করা হয়।

বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করে এসি ল্যান্ড ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. মোশারফ হোসাইন বলেন, 'উপজেলার প্রতিটি বাজারে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে এ ধরণের কঠোর অভিযান অব্যাহত থাকবে।'

(জিডি/এসপি/এপ্রিল ০৬, ২০২২)