নামজারি করতে এসে নাজেহালের শিকার
হিন্দু পরিবারের সম্পত্তি প্রভাবশালীর দখলে
.jpg)
তুষার কান্তি বিশ্বাস, গোপালগঞ্জ : গোপালগঞ্জের কাশিয়ানীতে একটি হিন্দু পরিবারের ১০ কোটি টাকা মূল্যে ৫৬ শতাংশ সম্পত্তি স্থানীয় এক প্রভাবশালী দখল করে নিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এ সম্পত্তির নাম জারি করতে এসে হিন্দু পরিবারের সদস্য নাজেহালের শিকার হয়েছেন । এ ব্যাপারে তিনি কাশিয়ানী থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
হিন্দু পরিবারের ওই সদস্যের নাম রতন কুমার সাহা (৪০)। তিনি পৈতৃক সুত্রে পাওয়া ওই সম্পত্তি উদ্ধার করতে নাটোর থেকে কাশিয়ানীতে আসেন। প্রতিপক্ষ সম্পত্তির দখলদার মো. সাহেব আলী মোল্যা প্রভাব খাটিয়ে রতন কুমার সাহাকে প্রাণনাশ ও ভারতে পাঠিয়ে দেয়ার হুমকি দিয়েছেন।
রতন কুমার সাহা নাটোর জেলার কানাইখালী গ্রামের মৃত নারায়ণ চন্দ্র সাহার ছেলে। এ ব্যাপারে রতন কুমার সাহা বাদী হয়ে কাশিয়ানী থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন।
রতন কুমার সাহা বলেন, আমার দাদু বিনোদ বিহারী সাহার রেখে যাওয়া ৩৬ নং কাশিয়ানী মৌজার এসএ ৫৯, ৬০, ৮২২, ৭৮৫ নং খতিয়ানের ৪০৬, ৪০৭, ৪০৮, ২৮৬ ও ২৮৭ নং দাগের ৫৩ শতাংশ জমি প্রভাবশালী সাহেব আলী মোল্যা জোরপূর্বক দখল করে রেখেছেন। এসব সম্পত্তি প্রভাবশালীর দখল থেকে উদ্ধার ও নামজারির জন্য জেলা প্রশাসক নির্দেশ দিয়েছে। গত বুধবার কাশিয়ানী উপজেলা সহকারি কমিশনারের (ভূমি) কার্যালয়ে জমির নাম জারি করতে যাই। এ সময় সাহেব আলী মোল্যা আমাকে দেখে অফিসের মধ্যেই মারধর করার জন্য উদ্যত্ত হন। এছাড়া ফের কখনও সম্পত্তির মালিকানা দাবি করলে আমাকে জীবনে মেরে ফেলার হুমকি দেন ওই প্রভাবশালী। বিষয়টি এসি ল্যান্ডকে জানানোর পর তিনি আমাকে থানায় অভিযোগ করার পরামর্শ দেন। তার পরামর্শে আমি থানায় অভিযোগ করি।
রতন আরো বলেন, এ ব্যাপারে স্থানীয়দের কাছে অভিযোগ করেও কোনো প্রতিকার পাইনি। তাই আমি শঙ্কা ও নিরাপত্তাহীনতায় ভূগছি। সম্পত্তি উদ্ধার ও জীবনের নিরাপত্তার দাবিতে দ্বারে দ্বারে ঘুরছি।
অভিযুক্ত সাহেব আলী মোল্যার সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি হুমকি দেয়ার কথা অস্বীকার করে বলেন, ‘ওখানে রতনের দাদুর কোন সম্পত্তি নেই। এসএ, আরএস ও সিএস পর্চায় রতনের দাদুর নাম রয়েছে। কিন্তু বিআরএস রেকর্ড আমাদের নামে হয়েছে। এ সম্পত্তি নিয়ে আদালতে মামলা চলমান রয়েছে। আদালত সম্পত্তির মালিকানা ঠিক করবে। আমরা এ সম্পত্তির দখলে রয়েছি। রতন শুধু ঝামেলা পাকাচ্ছে। তাই তার সাথে বাক বিতন্ডা হয়েছে। ওই বাড়িটি আমাদের সম্পত্তি। আপনারা সাংবাদিকরা যা পরেন লেখেন। এতে আমার কিছুই হবে না।’
কাশিয়ানী থানার ওসি মোহাম্মদ মাসুদ রায়হান বলেন, ‘এ ব্যাপারে রতনের একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। হুমকি ধামকির বিষয়ে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। কিন্তু জমি জমার মালিকানা সংক্রান্ত বিরোধ আদালত নিষ্পত্তি করবে।’
এ ব্যাপারে কাশিয়ানী উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) মোরশেদুল ইসলামের সাথে কথা হলে তিনি অফিসের মধ্যেই মারধরে উদ্যত ও হুমকি ধামকির বিষয়টি এড়িয়ে যান। এ বিষয়ে তিনি কোন মন্তব্য করতে রাজি হন নি। বিভিন্ন প্রশ্ন করা হলে তিনি বিষয়টি জানেন না বলে জানান।
(টিকেবি/এসপি/এপ্রিল ০৯, ২০২২)