তুষার কান্তি বিশ্বাস, গোপালগঞ্জ : গোপালগঞ্জ শহরের এস.এম মডেল সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের অপসারনের দাবীতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে শিক্ষার্থীরা। বিক্ষোভ শেষে শিক্ষার্থীরা ওই শিক্ষকের বিভিন্ন অনিয়ম ও দূর্নীতির প্রতিবাদে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান কর্মসূচী করে। পরে তারা জেলা প্রশাসক বরাবর স্মরকলিপি প্রদান করে ।

আজ সোমবার (১১ এপ্রিল) দুপুরে শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করে। মিছিলটি জেলা শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে গিয়ে শেষ হয়। পরে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনের সড়কে অবস্থান নিয়ে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মোঃ মাইন উদ্দিন ভূঁইয়াকে অপসারনের দাবীতে বিভিন্ন শ্নোগান দেয় শিক্ষার্থীরা।

পরে শিক্ষার্থীদের ৩ সদস্যের একটি দল অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বক) মোঃ রাশেদুর রহমানের কাছে প্রধান শিক্ষকের বিভিন্ন অনিয়ম তুলে ধরে জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেন । এসময় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন অভিযোগর কথা গুরুত্বের সাথে শোনেন।

স্মারকলিপিতে বলা হয়, ক্লাস রুমের সংকট রয়েছে। এ অবস্থায় প্রধান শিক্ষক ৩ টি ক্লাস রুম দখল করে নিজের বাস ভবন তৈরী করেছেন। স্কুলের ২৫টি কম্পিউটারের মধ্যে ১৫টি কম্পিউটার তিনি বিক্রি করে দিয়েছেন। বোর্ড নির্ধারিত রেজিস্ট্রেশন ফি ৭০ টাকার বদলে ২৫০ টাকা আদায় করেছেন। টিফিন ফান্ড থেকে প্রতি মাসে প্রধান শিক্ষক ১২ হাজার টাকা নিজের সম্মানীভাতা হিসাবে নিচ্ছেন।

এস.এম মডেল সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষার্থী আল আমিন বলেন, আমরা জেলার একটি ঐতিহ্যবাহী স্কুলে পড়াশোনা করি। এখানে আমরা দূর্নীতি শিখতে আসিনি। আমাদের টিফিন ফান্ড থেকে প্রতি মাসে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ১২ হাজার টাকা নিচ্ছেন । এ কারনে আমাদের নিম্নমানের টিফিন দেয়া হচ্ছে।

৯ম শ্রেনীর শিক্ষার্থী তাওশীন ইসলাম নাহিয়ান বলেন, আমাদের বেতন হলো ১২৫ টাকা। সেখানে তিন মাসে বেতন হয় ৩৭৫ টাকা। কিন্তু আমাদের প্রত্যেক শিক্ষার্থীর কাছ থেকে ৮৪০ টাকা নিয়েছেন। বেশি টাকা নেয়ার জবাব প্রধান শিক্ষককে দিতে হবে।

১০ শ্রেনীর শিক্ষার্থী সিয়াম আহম্মেদ বলেন, আমাদের কম্পিউটার ল্যাবে ২৫টি কম্পিউটার ছিল। কিন্তু এর মধ্যে ১৫টি কম্পিউটার বিক্রি করে দিয়েছেন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক। আমারা দুর্নীতিবাজ প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি গঠন করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি ।

এ ব্যাপারে স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মোঃ মাইন উদ্দিন ভূঁইয়া সবকিছু প্রতিষ্ঠানের স্বার্থে করার দাবি করে বলেন, আমি ব্যক্তি স্বার্থে কিছুই করিনি। স্কুলের শিক্ষার পরিবেশ বজায় রাখতেই আমি কাজ করে যাচ্ছি।

অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বক) মোঃ রাশেদুর রহমান বলেন, এস.এম মডেল সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দূর্নীতির অভিযোগ এনে শিক্ষার্থীরা রাস্তায় নেমেছে। আমি তাদের কথা শুনেছি। শিক্ষার্থীরা একটি অভিযোগ দিয়েছে। বর্তমানে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ছুটিতে ঢাকায় রয়েছেন। অভিযোগের প্রেক্ষিতে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

(টিকেবি/এসপি/এপ্রিল ১১, ২০২২)