মিঠুন গোস্বামী, রাজবাড়ী সদর : ফরিদপুরের মধুখালি উপজেলাধীন মেগচামির জগন্নাথদী-রুকুনী সার্বজনীন মহাশ্মশনের ৫৮ শতাংশ জমি পানি উন্নয়ন বোর্ড নিজেদের নামে বি.এস করে নেয়,তবে শ্মশানের নামেই ফিরে পেতে চায় হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন। যদিও এই জমি তৎকালীন জমিদারেরা হিন্দু সম্প্রদায়ের মৃত লোকজনের শেষকৃত্য সম্পূর্ণ করার জন্য দান করে যান।

এস, এ কাগজ মূলে দেখা যায়, মধুখালি উপজেলাধীন জগন্নাদী মৌজার ৭৬২ ও ৭৬১ দাগের ৫৮ শতাংশ জমি শ্মশান বলে উল্লেখ করা রয়েছে।

বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড রাজবাড়ী পওর বিভাগের আওতায় জগন্নাদী মৌজার বিএস ৮১৫ দাগে ৯ একরের ও অধিক জমি তাদের নামে করে নেয়। এই অধিগ্রহণ কৃত জমির মধ্যে শ্নাশানের ৫৮ শতাংশ জমি ও রয়েছে।

এতে স্থানীয় কিছু ভুমি দশ্যু ও কুচক্রী মহল পূর্বের দানকৃত শ্মশানের জমি ভোগদখল করে আসছিলো। শুধু তাই নয় তারা ওই শ্মশানের জমিতে শেষকৃত্য সম্পূর্ণ করার ক্ষেত্রেও বিভিন্ন সময় বাধা প্রদান করে আসছে। দখল করে নিয়েছে শ্মশানের রাস্তাও তারা৷ ফলে হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন তাদের মৃত দেহ নিজ নিজ বাড়ির আঙ্গিনায় দাহ করে আসছে। যাদের দাহ করার মত জাইগা নাই তারা শ্মাশানের জাইগাতে মৃত দেহ নিয়ে গেলে ভুমি দশ্যু ও কুচক্রী মহলের বাধায় চন্দনা নদীর পারে শেষকৃত্য সম্পূর্ণ করছে৷ এতে স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন ক্ষুব্ধ হয়ে আছে৷

মেগচামি ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আলেপ সিকদার বলেন, শ্মশানের জাইগা যারা দখল করে আছে তাদের উচিৎ নিজ নিজ অবস্থান থেকে সরে গিয়ে শ্মশানের যাইগা খালি করে দেওয়া। এছাড়াও শ্মশানে যাবার রাস্তা স্থানীয় ভাবে সমাধান করে রাস্তা তৈরি করা। যেহেতু এটা এখন আর কোন মালিকানা সম্পত্তি নাই সেহেতু ধর্মের কাজে ব্যবহার করতে দিতে হবে। এ সময় তিনি শ্মশানের জাইগা ফিরে পেতে সর্বাত্মক সহযোগিতার আশ্বাস দেন।

জগন্নাথদী-রুকুনী সার্বজনীন মহাশ্নাশনের সভাপতি সমীর কুমার ঘোষ বলেন, তৎকালীন জমিদারেরা এই জাইগা শ্মশানের নামে লিখে দিছে। এই ৫৮ শতাংশ জমি আরএস, এসএ শ্মশানের নামে রয়েছে। যার সকল বৈধ কাগজ আমাদের কাছে আছে। তবে কেনো পানি উন্নয়ন বোর্ড বিএস খতিয়ানে ৮১৫ দাগে শ্মশানের জমি অধিগ্রহণ করে নিয়েছে। আমরা গ্রাম বাসি এবং শ্মশান কমিটি আশা করি পানি উন্নয়ন বোর্ড অধিগ্রহণ কৃত শ্মশানের জমি শ্মশানের নামে ফিরিয়ে দেবে। যদি না দেওয়া হয় আমার মামলা করবো৷

রাজবাড়ী পানি উন্নয়ন বোর্ডের এ আর ও গিয়াস উদ্দিন বলেন, আমি কাগজ পত্র দেখেছি ইতিপূর্বে এটা শ্মশানের ছিল। তবে পানি উন্নয়ন বোর্ড বিএস এ এসে ওই জমি অধিগ্রহণ করে নিয়েছে। তবে এটা শ্মশানের নামে ফিরে দেওয়া হবে কি না জানি না, এটা কতৃপক্ষের কাজ। তবে শ্মশান কমিটি এই জমি যাতে সাধারণ মানুষকে লিজ না দেওয়া হয় তার জন্য আবেদন করেছে। আমি আশ্বস্ত করছি এই জমি কাউকে লিজ দেওয়া হবে না। জমিতে কিছু লোক চাষাবাদ করছে এমন প্রশ্নে তিনি বলেন আমরা ওই স্থানে গিয়ে দেখেছি, তবে যারা আবাদ করছে তাদের জমি ছেড়ে দিতে বলা হয়েছে। শ্মশানের বিষয়ে তিনি বলেন, ওই স্থানে হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন মৃত দেহ দাহ করে আসছি দীর্ঘদিন যাবত। তারা ওই জমি তাদের প্রয়োজনীয় ব্যবহার করতে পারে।

(এমজি/এএস/এপ্রিল ১৩, ২০২২)