এ কে আজাদ, রাজবাড়ী : রাজবাড়ী পৌরসভার বর্জ্যের দুর্গন্ধে আমার পেটে পাঁক দিয়ে আমার রোজা ভাঙ্গার উপক্রম, এই পবিত্র রমজান মাসে যত্রতত্র এই ময়লা আবর্জনা ফেলার কোন মানে হয়! হে আল্লাহ্ এদের হেদায়েত দিন, বোঝার তৌফিক দান করুন- রোজাদার মা ছালেহা। এমনটাই বলছিলেন অনিক পরিবহনের এক মহিলা যাত্রী। তিনি কুষ্টিয়া জেলার কুমারখালী উপজেলার চড়ুইখোল এলাকার হাসেম খাঁর স্ত্রী ছালেহা বেগম।

তিনি যানান, আমি ঢাকা থেকে আসতেছি। ভেঙে ভেঙে আসার পর দৌলতদিয়া থেকে টিকিট কেটে অনিক পরিবহনে উঠি। রাজবাড়ী শহরে ঢুকার আগে একটু দুর্গন্ধ পেয়েছি আর এই মুরগিরর্ফাম (নতুন বাজার) এলাকায় মোড়ে গাড়ি সোলো হলে এখানকার দুর্গন্ধ এতটাই বিকট যে আমার নিশ্বাস বন্ধ হওয়ার মতো। দুর্গন্ধের কারনে আমার রোজা ভাঙবার মতো হয়ে যায়। পরে আমার ব্যাগে ঢাকা থেকে আনা কমলালেবু ছিল। কমলালেবুর গন্ধ শুঁকে আমার বমিভাব কাটে। এই পবিত্র রমজা মাসে এইভাবে বর্জ্য আবর্জনা ফেলে। আমার মত হাজার হাজার যাত্রী এই রমজান মাসে প্রতিদিন রোজা রেখে যাতায়াত করে। নিশ্চয়ই তাদেরও আমার মতো কষ্ট হয়। আল্লাহ যেন এদের বোঝার তৌফিক দান করে।

সরেজমিনে ২৮ শে এপ্রিল মঙ্গলবার দেখা যায়, রাজবাড়ী পৌরসভার বর্জ্য-আবর্জনা কুষ্টিয়া দৌলতদিয়া মহাসড়কের পাশে নতুন বাজার পুলিশ লাইন্সের সামনে ফেলে রাখায় চৈত্র মাসের প্রখর রোদে বিকট দুর্গন্ধের সৃষ্টি হয়েছে। এই বর্জ্য ফেলানোর জায়গা হতে ৫০ মিটার দুরেই রয়েছে রাজবাড়ী আইডিয়াল স্কুল ও পুলিশ লাইন্স। নতুন বাজারের ময়লা-আবর্জনা, মরা মাছ, হোটেলের ডিমের খোসা, মুরগী ড্রেসিংয়ের ফৌর পাখনা সহ সোনালী মুরগীর অব্যবহিত চামরা সহ নানা ধরনের নষ্ট কাচামাল ফেলায় রৌদ্রের তাপ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ আশপাশের যাতায়াতকৃত লোকজন সহ স্থানীয় জনগণ। দীর্ঘদিন যাবত রাজবাড়ী পৌরসভার অব্যবস্থাপনা থাকলেও পবিত্র রমজান মাসে দুর্গন্ধে ভোগান্তির পাশাপাশি পাশের মহাসড়ক দিয়ে চলাচল কষ্টসাধ্য হয়ে উঠেছে নানা গন্তব্যে যাওয়া ব্যক্তি সহ আশপাশের যাতায়াত কারি ও স্থানীয়দের।

স্থানীয় রিকশা চালক শফিক ও মোঃ মুক্তার শেখ জানান, আমরা নতুন বাজার থেকে রেলগেট বা বাজার লাইনে বেশি গাড়ি চালাই। আমাদের দিনে অন্তত ৮ থেকে ১০ বার যাতায়াত পরে আমাদের অনেক কষ্ট হয়। আর বেশি কষ্ট হচ্ছে এই রমজান মাসে। আমাদের পাশাপাশি যাত্রীদেরও অনেক কষ্ট হয়। অনেক সময় যাত্রীরা এ পথে চলতেও দিধা করেন।

এ বিষয়ে রাজবাড়ী পৌরসভার মেয়র আলমগীর শেখ তিতুর মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে তিনি রিসিভ করেন নাই।

এ বিষয়ে প্রধান স্যানিটারী ইন্সপেক্টর বকুলের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি দ্যা ডেইলি ট্রাইবুনাল, দৈনিক আমার বার্তা ও জনতার মেইল ডটকমের প্রতিনিধি কে জানান জানান, নতুন বাজারে আমাদের একটি পাঁকা ডাস্টবিন ছিল। কিন্তু রাস্তা সংস্করণের সময় তা ভেঙে ফেলা হয়েছে। পুনরায় তা নির্মান না করায় এই সমস্যা বিদ্যমান রয়েছে। আমাদের পৌড়সভার গাড়ি সকালে তা পরিষ্কার করলেও নির্দিষ্ট ডাস্টবিন না থাকায় যেখানে সেখানে বর্জ্য ফেলায় এই সমস্যা হচ্ছে। আমরা দ্রুত এই সমস্যার সমাধান করার জন্য মেয়র মহদয়ের সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করবো।

(একে/এসপি/এপ্রিল ২৯, ২০২২)