মামলা দায়ের
গোপালগঞ্জে ছাত্রলীগ নেতার ওপর সন্ত্রাসী হামলা, সড়ক অবরোধ
.jpg)
তুষার কান্তি বিশ্বাস, গোপালগঞ্জ : গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ মাসুমের ওপর হামলার প্রতিবাদে ও জড়িতদের গ্রেফতারের দাবিতে মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে কাশিয়ানী উপজেলা ছাত্রলীগ।
শনিবার (৩০ এপ্রিল) বেলা ১১ টায় ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের কাশিয়ানী উপজেলার গোপালপুর বাজার এলাকায় এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
কাশিয়ানী উপজেলা ছাত্রলীগ ও রামদিয়া সরকারি এসকে কলেজ ছাত্রলীগ ঘন্টাব্যাপী এ কর্মসূচী পালন করে।
এ সময় সন্ত্রাসী হামলার প্রতিবাদে ও জড়িতদের বিচারের দাবিতে সড়কে টায়ারে আগুন জ¦ালিয়ে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন বিক্ষুব্ধ নেতা-কর্মী ও শিক্ষার্থীরা। এতে সড়কের উভয়পাশে শতশত যানবাহন আটকা পড়ে। ওই সড়কে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়।
দুপুর ১২ টার দিকে গোপালগঞ্জের সিনিয়র সহকারি পুলিশ সুপার (মুকসুদপুর সার্কেল) মো. শাহিনুর চৌধুরীসহ প্রশাসনের কর্মকর্তারা ২৪ ঘন্টার মধ্যে জড়িতদের গ্রেফতারের আশ্বাস দেন। তাদের আশ্বাসের প্রেক্ষিতে দুপুর ১২টার দিকে বিক্ষুব্ধরা কর্মসূচী প্রত্যাহার করে নেন। তারপর ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়ে আসে।
বৃহস্পতিবার (২৮ এপ্রিল) বিকালে গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার হরিদাসপুর সম্প্রসারিত বিসিক শিল্পনগরী এলাকায় কাশিয়ানী উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ মাসুমের (২৯) ওপর হামলা চালিয়ে গুরুতর আহত করে একদল সন্ত্রাসী।
গোপালগঞ্জ আদালত থেকে মামলার হাজিরা দিয়ে বাড়ি ফেরার পথে সদর উপজেলার হরিদাসপুর বিসিক এলাকায় বাস থেকে টেনে হিচড়ে নামিয়ে মাসুমের ওপর এ বর্বরোচিত হামলার ঘটনা ঘটানো হয়।
এ সময় বেধড়ক মারপিটে তিনি অজ্ঞান হয়ে মাটিতে লুটে পড়েন। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে গোপালগঞ্জ আড়াই শ’ বেড জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন।
এ ঘটনায় গোপালগঞ্জ জেলা ও কাশিয়ানী উপজেলা ছাত্রলীগের মাঝে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। গত শুক্রবার (২৯ এপ্রিল) সন্ধ্যায় ছাত্রলীগ নেতা শেখ মাসুম বাদী হয়ে গোপালগঞ্জ সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন।
আহত কাশিয়ানী উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ মাসুম বলেন, গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার হরিদাপুর গ্রামের ইনছান মুন্সী আমাদের সরাইকান্দি গ্রামে সাব ঠিকাদার হিসেবে একটি রাস্তার কাজ করছে। কাজের মান খারাপ হওয়ায় আমাদের এলাকার ছোট ভাই-ব্রাদাররা এ কাজে বাঁধা দেয়। এ নিয়ে ওই ঠিকাদারের সাথে আমাদের গ্রামের ছোটদের সাথে কথা কাটাকাটি ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। পরে আমি গিয়ে বিষয়টি মিটিয়ে দেই। এ ঘটনায় ক্ষিপ্ত হয়ে ইনছান মুন্সী আমার বিরুদ্ধে গোপালগঞ্জের আদালতে একটি চাঁদাবাজি মামলা দায়ের করেন।
বৃহস্পতিবার এ মামলার হাজিরা দিতে আমি গোপালগঞ্জ আদালতে যাই। হাজিরা শেষে বাসে করে গ্রামের বাড়ি কাশিয়ানী উপজেলার সরাইকান্দি গ্রামে ফিরছিলাম। হরিদাসপুর সম্প্রসারিত বিসিক শিল্পনগরী এলাকায় পৌঁছালে ঠিকাদার ইনছান মুন্সী, সাদ্দাম মুন্সী, হাসিবুর ও ইব্রাহিম মোল্লাসহ অজ্ঞাতনামা ১০/১২ জন যুবক বাস থামাতে চালককে সংকেত দেন। চালক বাস থামালে তারা বাসের মধ্যে ঢুকে আমাকে টেনে-হিঁচড়ে বাস থেকে নামিয়ে লোহার রড, হকিষ্টিক ও কোদালের আছাড়ি দিয়ে বেধড়ক পিটিয়ে আহত করে সড়কের পাশে ফেলে রেখে যায়। এ সময় আমার পকেটে থাকা টাকা ও মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নিয়ে যায়। পরে স্থানীয়রা আমাকে রাস্তার পাশে পড়ে থাকতে দেখে উদ্ধার করে গোপালগঞ্জ আড়াই শ’ বেড হাসপাতালে ভর্তি করেন। এ ঘটনায় আমি বাদী হয়ে শুক্রবার সন্ধ্যায় গোপালগঞ্জে সদর থানায় ইনছান মুন্সী সহ ১২ জনকে আসামী করে একটি মামলা দায়ের করেছি।
কাশিয়ানী উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আজাদ হোসেন মৃধা বলেন, ‘আমার সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক শেখ মাসুমের ওপর ন্যাক্কারজনক সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটেছে। আমরা ঘটনার প্রতিবাদে ও জড়িতদের গ্রেফতারের দাবিতে রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ মিছিল সমবেশ করেছি। এছাড়া ১ ঘন্টা আমরা সড়ক অবরোধ কর্মসূচী করেছি। আমরা ২৪ ঘন্টার আল্টিমেটাম দিয়ে প্রশাসনের আশ্বাসে আন্দোলন কর্মসূচী প্রত্যাহার করেছি। জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতার করা না হলে কঠোর কর্মসূচী ঘোষণা করা হবে।’
অভিযুক্ত সাদ্দামের মোবাইলে ফোন দিলে ফোন বন্ধ পাওয়া গেছে। এ কারণে অভিযুক্তদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি। ( সাদ্দামের মোবাইল নাং ০১৭০০৬০৩৭.০৭) গোপালগঞ্জ সদর থানার ওসি মোঃ মনিরুল ইসলাম বলেন,‘ভিকটিম লিখিত অভিযোগ দেয়ার পর শুক্রবার রাতেই মামলা দায়ের করা হয়। এ ঘটনার তদন্ত ও জড়িতদের গ্রেফতারে পুলিশি তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে।’
(টিকেবি/এসপি/এপ্রিল ৩০, ২০২২)