গৌরাঙ্গ দেবনাথ অপু, ব্রাহ্মণবাড়িয়া : ‘বই হোক শ্রেষ্ট বন্ধু’ এমন একটি নতুন শ্লোগানকে সামনে রেখে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলায় স্বাধীনতার ৫০ বছর পর ‘একাত্তুর পাঠচক্র’ নাম দিয়ে গতকাল থেকে নতুন উদ্যমে বই পড়া কর্মসূচির মতো একটি ব্যতিক্রমী পথচলা শুরু হয়েছে। 

নবীনগর মহিলা কলোজ মিলনায়তনে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় এক ব্যতিক্রমী আয়োজনে অনুষ্ঠিত 'একাত্তুর পাঠচক্র' নামের এই বই পড়া কর্মসূচির উদ্বোধন করেন নবীনগরের নাট্যগুরু খ্যাত ব্যতিক্রম থিয়েটারের সভাপতি, বিশিষ্ট নাট্যাভিনেতা ও নাট্য নির্দেশক আবদুল ওয়াদুদ।

নান্দনিক এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন নবীনগর পৌরসভার মেয়র এডভোকেট শিব শংকর দাস। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন নবীনগর মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ সংস্কৃতিজন কান্তি কুমার ভট্টাচার্য।

অনুষ্ঠানটির পরিকল্পনা ও সঞ্চালনায় ছিলেন অনুষ্ঠানের উদ্যোক্তা লেখক, কবি কামরুল হুদা পথিক। তাঁকে উপস্থাপনায় সহযোগিতা করেন শিফাতুল শিবলী।

ব্যতিক্রমী এ আয়োজনোর ভূয়সী প্রশংসা করে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব বিশিষ্ট লেখক মনিরুজাজামান মনির, শিক্ষয়ত্রী শাহীন আরা বেগম, খেলাঘর আসরের সভাপতি, দৈনিক বাংলা ৭১ পত্রিকার বিশেষ প্রতিনিধি ও নবীনগরের কথার সম্পাদক গৌরাঙ্গ দেবনাথ অপু, ক্লিন এন্ড গ্রিন ফাউন্ডেশন ও গরিব ফাউন্ডেশন এর প্রতিষ্ঠাতা জিএম কিবরিয়া, প্রধান শিক্ষক রেজাউল করিম সবুজ, আবৃত্তির প্রশিক্ষক কবি তিতাস বিপ্লব, লেখক আবাবাস উদ্দিন হেলাল, ছড়াকার হাবিবুর রহমান স্বপন, নবীনগরনামার প্রতিষ্ঠাতা, অনলাইন এ্যাক্টিভিস্ট, সেনাসদস্য আশরাফুল হক প্রমুখ।

পরে কামরুল হুদা পথিক রচিত দর্শকনন্দিত নাটক 'দু:খী মাইনষের প্যাঁচাল' গ্রন্থের কয়েকটি চরিত্র অভিনয় করে দেখান নাট্যগুরু আবদুল ওয়াদুদ, ব্যতিক্রম থিয়টারের সাধারণ সম্পাদক সাংবাদিক গৌরাঙ্গ দেবনাথ অপু ও প্রধান শিক্ষক রেজাউল করিম সবুজ।

এ সময় নান্দনিক আবৃত্তি করে দর্শকদের মুগ্ধ করেন খেলাঘরের আবৃত্তিশিল্পী সুভেন্দু চক্রবর্তী, হামিদুল হুদা স্টেভান, জয়নব হাসান প্রমুখ।

এর আগে নবীনগরে একাত্তর পাঠচক্রের মাধ্যমে মানুষজনকে নতুন করে বই পড়ার মাধ্যমে পাঠাভ্যাস গড়ে তুলতে অনুষ্ঠান উদ্যোক্তার সহধর্মিনী বইপ্রেমি শিক্ষয়ত্রী শাহীন আরা বেগম তাঁর নিজস্ব অর্থায়ানে উপস্থিত দর্শকদের হাতে প্রায় অর্ধশত বই বিনামূল্যে তুলে দেন।

অনুষ্ঠান শেষে আয়োজকদের পক্ষ থেকে আমন্ত্রিত অতিথি ও উপস্থিত দর্শকদেরকে আপ্যায়িত করা হয়।

নবীনগরে বিশুদ্ধ সংস্কৃতি চর্চা যখন দীর্ঘদিন ধরে অনেকটাই মুখ থুবরে পড়ে আছে, তখন এ ধরণের বৈচিত্রময় একাত্তর পাঠচক্রের এমন নান্দনিক অনুষ্ঠান উপস্থাপন নবীনগরের হারানো সংস্কৃতির ঐতিহ্যকে ফিরিয়ে আনতে অনেকটাই নতুন করে পথ দেখাবে, অনুষ্ঠান শেষে এমন মন্তব্য অনুষ্ঠানে আগত বোদ্ধা অনেক উপস্থিত দর্শকদেরকেই নি:সংকোচে বলতে শুনা গেছে।

(জিডি/এসপি/মে ০৬, ২০২২)