শফিকুল ইসলাম মিন্টু, গৌরীপুর : ময়মনসিংহের গৌরীপুর শেখ রাসেল মিনি ষ্টেডিয়ামের একমাত্র গ্যালারীটি মেয়াদোত্তীর্ণ হয়ে এখন বেহাল দশা। বিভিন্ন অংশ ভেঙ্গে পড়ে, প্লাস্টার উঠে, বিভিন্ন স্থানে ফাটল ধরায় বিপদজনক আকার ধারণ করেছে এটি। কতৃপক্ষ এটি ঝুঁকিপূর্ণ হিসাবে ঘোষণা করে লাল নিশান টানিয়ে দিয়েছে অনেক আগেই। ব্যবহারের অনুপযোগী হলেও বিভিন্ন জাতীয় দিবসে কুচকাওয়াজ দেখতে, ফুটবল, ক্রিকেট, হা-ডু-ডুসহ বিভিন্ন খেলাধূলা উপভোগ করতে মাইকে বারবার বিপদজনক ঘোষণার পরও শতশত দর্শক তা ব্যবহার করছে। যেকোন মুর্হুতে গ্যালারীটি ধ্বসে প্রাণহানির আশংকা বিরাজ করছে। 

জানা যায়, ১৯৮৩ সালে উপজেলা পরিষদের ক্রীড়া ও সংস্কৃতি তহবিলের অর্থায়নে গৌরীপুর স্টেডিয়ামের গ্যালারীটি নির্মান করা হয়। ৯০ দশকের শুরু থেকেই গ্যালারীর বিভিন্ন স্থানে ফাটল সহ প্লাস্টার খসে পড়তে শুরু করে। এ নিয়ে ওই সময় দেশের বিভিন্ন জাতীয় ও স্থানীয় দৈনিকে লেখালেখির পরও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এটি সংস্কার বা মেরামতের কোনো উদ্যোগ নেয়নি। গ্যালারী নির্মানের পর থেকে দীর্ঘ ৪০ বছরে স্টেডিয়ামের এই গ্যালারীটির কোনো ধরনের সংস্কার বা রক্ষনাবেক্ষনের উদ্যোগ গ্রহন করা হয়নি। ফলে উপযুক্ত সংস্কার বা মেরামতের অভাবে বর্তমানে গ্যালারীটি প্রায় জরাজীর্ন ও পরিত্যাক্ত অবস্থায় কোনোমতে দাঁড়িয়ে আছে।

সরজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, গ্যালারীটির নিচের অংশ মাটিতে ধেবে গেছে। সিঁড়ি গুলোর বিভিন্ন অংশের প্লাস্টার খসে পড়ে রড বেরিয়ে আছে। গ্যালারীর ছাদসহ বিভিন্ন জায়গায় কয়েক মিটার লম্বা লম্বা কংক্রিটের অংশ ধসে পড়ে গিয়ে সুরঙ্গের মতো সৃষ্টি হয়েছে। পিলারগুলোর অবস্থা আরো নাজুক। বিভিন্ন অংশে দীর্ঘ ফাটল সহ প্রতিদিনই গ্যালারীটির ছাদের প্লাস্টার ও কংক্রিটের বিভিন্ন অংশ খসে পড়ছে। টানা বৃষ্টি, হালকা ভূমিক¤প ও কোন প্রাকৃতি দুর্যোগ বা বড় কোন খেলার সময় দর্শকদের সামান্য ভারে যে কোনো সময় ধসে পড়তে পারে স্টেডিয়ামের এই গ্যালারীটি। এছাড়া ষ্টেডিয়ামের প্রাচীরের দক্ষিণাংশে ফাটল ধরেছে, অনেকাংশ প্রাচীর ভেঙ্গেও গিয়েছে।

স্থানীয় খেলোয়ারবৃন্দ ও এলাকাবাসী জানায়, প্রতি বছর এই স্টেডিয়ামে গৌরীপুর উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার উদ্যোগে শেখ রাসেল গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট, অনুর্ধ ১৪ ক্রিকেট প্রশিক্ষণ, ফুটবল প্রশিক্ষণ, ময়মনসিংহ জেলা ফুটবল এসোসিয়েশান আয়োজিত আন্তঃউপজেলা ফুটবল, হা-ডু-ডু খেলা, ইউএনও গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট, আন্তঃস্কুল-মাদ্রাসা ফুটবল প্রতিযোগিতা, আন্তঃব্যাচ ক্রিকেট টুর্ণামেন্ট, ক্লাব ভিত্তিক ফুটবল টুর্নামেন্ট নিয়মিত অনুষ্ঠিত হচ্ছে। প্রতিদিন খেলা দেখার জন্য মাঠে হাজার হাজার দর্শকের উপস্থিতি স্টেডিয়ামের জরাজীর্ন পরিত্যাক্ত এই গ্যালারীটি কানায় কানায় পরিপূর্ন হয়ে উঠে। পরিত্যাক্ত এই গ্যালারীটিতে কোনো ধরনের সর্তকতা বানী বা বিজ্ঞপ্তি না থাকায় অনেকটাই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এসব দর্শক খেলা উপভোগ করে থাকেন। তাই গ্যালারী ধসে যে কোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।

গৌরীপুর উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারন স¤পাদক আবুল কালাম আজাদ বলেন, আমরা গ্যালারীটির সংস্কার করার জন্য বিষয়টি ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। কিন্তু এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে কোনো ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।

(এস/এসপি/মে ০৭, ২০২২)