মোঃ আব্দুল কাইয়ুম, মৌলভীবাজার : মৌলভীবাজার শহরের অধিকাংশ পাইকারী ও খুচরা মুদি দোকানগুলোতে পাওয়া যাচ্ছেনা ভোজ্যতেল সোয়াবিন, এতে দেখা দিয়েছে তেলের চরম সঙ্কট। বিরাজ করছে অস্থিরতা। যেখানে থরে থরে সাজানো থাকত ১ লিটার থেকে ৫ লিটার ও ৮লিটার সোয়াবিন তেলের বোতলজাত তেলের জার,সেখানে এখন বিরাজ করছে তেলের সঙ্কট। বেশিরভাগ দোকানগুলোতে দেখায় যায় সব পণ্য পাওয়া গেলেও সেই তালিকায় নেই সোয়াবিন তেল। এতে বাধ্য হয়ে অনেকেই তেল না কিনে ফিরে যাচ্ছেন। কিছু কিছু দোকানে পাওয়া যাচ্ছে প্যাকেটজাত ১লিটার সোয়াবিন তেল। ব্যবসায়ীরা ওই প্যাকেটজাত তেল ১৯০টাকা দামেই বিক্রি করছেন। তবে প্যাকেটজাত তেলও যে খুব একটা পাওয়া যাচ্ছে তাও নয়। মাঝে মধ্যে দু একটি দোকানে মিলছে প্যাকেটজাত তেল। 

আজ মঙ্গলবার (১০ মে) দুপরে সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, শহরের পশ্চিমবাজারের সালাউদ্দিন স্টোর, বিসমিল্লাহ স্টোর, লিটন এন্টারপ্রাইজ, মৌলভী ক্যাশ এন্ড ক্যারী, এআর খান ব্রাদার্স ও মদনমোহন স্টোরসহ বেশ কয়েকটি পাইকারী দোকানগুলোতে সোয়াবিন তেল নেই।

ব্যবসায়ারীরা জানান, সর্বরাহ দু একদিনের মধ্যে শুরু হলে নতুন দামে সোয়াবিন তেল বাজারে আসবে। পশ্চিমবাজারের বিসমিল্লাহ স্টোরের সত্তাধিকারী আরিফুল হক জানান, যে পরিমান তেল ছিলো সেগুলো ঈদের আগেই শেষ হয়ে গেছে। নতুন তেলের জন্য ওয়ার্ডার দিয়েছি, আশা করছি দু একদিনের মধ্যে বাজারে আসবে তেল।

এদিকে জাতীয় ভোক্তা সংরক্ষণ অধিকার সূত্রে জানা যায়,গত রবিবার মৌলভীবাজার সদর উপজেলার পশ্চিমবাজার, জুগিডর, সিলেট রোড, সেন্ট্রাল রোডসহ বিভিন্ন জায়গায় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের তদারকি কার্যক্রমের মাধ্যমে ও অন্যান্য উপজেলায় মোবাইল ফোনের মাধ্যমে এবং গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ডিলার ও পাইকারী ব্যবসায়ীদের ভোজ্য তেল সয়াবিনের মজুদের তথ্য সংগ্রহ করা হয়। ওইসব তথ্যের ভিত্তিতে সরেজমিনে গিয়ে ডিলার এবং পাইকারী ব্যবসায়ীদের কাছে অল্প পরিমাণ তেল মজুদ আছে বলে জানতে পারে জাতীয় ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদপ্তর। আবার কারো কাছে তেল না থাকার তথ্যও পাওয়া যায়। শ্রীমঙ্গলে অবস্থিত বসুন্ধরার ডিলার জননী ষ্টোর, কুলাউড়ায় অবস্থিত সাইদুল এন্টারপ্রাইজ নামক প্রতিষ্ঠান গুলোতে তেল নেই। সদর উপজেলায় অবস্থিত পাইকারী ব্যবসায়ী রিফাত ফুড, মৌলভী ক্যাশ এন্ড ক্যারী, সোহেল এন্টারপ্রাইজ, যারা তীর এবং রূপচাঁদার ডিলার, তাদের কাছেও তেল নেই।

অপরদিকে মৌলভীবাজার শহরের পশ্চিমবাজারে দুদিন আগে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের দেয়া তথ্য অনুযায়ী মেসার্স সালাউদ্দিন ষ্টোরে ৩ হাজার লিটার, লিটন এন্টারপ্রাইজে ২শত লিটার, তেল থাকার কথা থাকলেও মঙ্গলবার দুপুরে এসব দোকানে গিয়ে তেল পাওয়া যায়নি। ওই দোকানগুলোতে একসময়ে থরে থরে সাজানো তেলের বক্স্র গুলো খালি পরে থাকতেও দেখা যায়।

তেলের সঙ্কটের বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর মৌলভীবাজার জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো: আল-আমিন বলেন, ব্যবসায়ীদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে নতুন দামে তেল আসার আগ পর্যন্ত আগের তেল আগের দামেই বিক্রি করার জন্য।

তিনি কলেন, ব্যবসায়ীরা সর্বরাহকারী কোম্পানী গুলোতে তেলের নতুন ওয়ার্ডার দিয়েছেন দুদিন আগে, আগামী দু একদিনের মধ্যে এসব তেল বাজারে আসবে। আশা করছি তেল সর্বরাহ স্বাভাবিক হলে সঙ্কট আর থাকবে না।

(একে/এসপি/মে ১০, ২০২২)