শিতাংশু গুহ


জগন্নাথ বিশ্ব‌বিদ‌্যাল‌য়ের ইংরেজি বিভাগের (২০১৬-১৭বর্ষ) শিক্ষার্থী অঙ্কন বিশ্বাস বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে মারা গেছেন। অভিযোগ উঠেছে মেধাবী ছাত্রী এবং ভালো বিতার্কিক অঙ্কন বিশ্বাসকে বিষ খাইয়ে হত্যা করা হয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উচিত বিষয়টি তদন্ত করা। 

অঙ্কন বিশ্বাসের সাথে একই কলেজের ডিবেটিং সোসাইটির সাবেক সভাপতি ও আইন বিভাগের ২০১১-১২ বর্ষের শিক্ষার্থী শাকিল আহমদের একটি সম্পর্ক গড়ে উঠেছিলো। ২২শে মার্চ ২০২২ সম্পাদিত একটি এভিডেভিড অনুযায়ী তাঁরা বিবাহিত ছিলেন। অঙ্কনের বান্ধবীদের মতে তাঁদের বিয়ে হয়নি।

অঙ্কনের এক ঘনিষ্ট বান্ধবী জেবা সাজিদ মৌ সামাজিক মাধ্যমে একটি পোষ্ট দিয়ে ঘটনার বিস্তারিত জানিয়েছেন। তারমতে শাকিল বহুবিধ উপায়ে অঙ্কনকে নির্যাতন করতো। হাসপাতালে ভর্তির আগে শাকিল তাঁকে লেবুর শরবত খাইয়েছে বলেও জানায়। জেবা’র মতে অঙ্কন এ সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসার জন্যে বারংবার চেষ্টা করেছে, কিন্তু শাকিলের জন্যে তা পারেনি।

২৪শে এপ্রিল ২০২২ অঙ্কনকে আসগর আলী হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়, ৮ই মে রাতে তাঁর মৃত্যু ঘটে। শাকিল তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করে, এরপর তাঁকে আর পাওয়া যায়নি। অঙ্কনের মা-বাবা ঠিক কখন ঘটনা জেনেছেন তা স্পষ্ট নয়, তবে সেটা বেশ দেরিতে তা স্পষ্ট।

কার্ডিয়াক ফেইলার, ষ্ট্রোক বা কিডনি ফেইলারের কারণে অঙ্কনকে প্রথমে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়, ৩০শে এপ্রিল তাকে পিজিতে স্থানান্তর করা হয়। প্রশ্ন হলো ২৩ বছরের একটি মেয়ের এতগুলো বড় বড় রোগ আছে, তা পরিবার জানতো না? অঙ্কনের মৃত্যু অনেকগুলো প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। সন্দেহের তীর স্বামী বা বন্ধু শাকিলের দিকে।

অঙ্কন কি মারা গেছেন না তাকে হত্যা করা হয়েছে, এটি সুরাহা হওয়াটা দরকার, কারণ উজ্জ্বল ভবিষ্যতের একটি প্রাণবন্ত মেয়ের হটাৎ কিডনি ফেইলার কেমন যেন বেমানান। অঙ্কনের পরিবারের বক্তব্য জানা যাচ্ছেনা। এসব ক্ষেত্রে ভিকটিমের পরিবার সচরাচর ম্যান-সম্মানের ভয়ে মুখ খুলতে চায়না।

মোদ্দা কথা হচ্ছে, অঙ্কনের মৃত্যু’র তদন্ত হওয়া দরকার। কেউ হয়তো মামলা করেনি, তবু পুলিশ চাইলে সবই সম্ভব। শাকিল বা তাঁর বন্ধু হিমেল অনেক তথ্য জানেন। অনেক খবর আছে অঙ্কনের বান্ধবীদের কাছে। সামাজিক মাধ্যমে একে-ওকে দায়ী না করে তদন্তের মাধ্যমেই সমস্যার সমাধান হউক। অঙ্কনের বন্ধু আব্দুল মুকিত চৌধুরী সানি ও জেবা সাজিদা মৌ’র ভূমিকা ইতিবাচক।

লেখক : আমেরিকা প্রবাসী।