মোঃ সিরাজ আল মাসুদ, টাঙ্গাইল : টাঙ্গাইলে গত দুই দিনের বৃষ্টিতে নিম্নাঞ্চলের বোরো ধান তলিয়ে যাওয়ায় ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন কৃষক। ধান কাটার শ্রমিক সংকটে তলিয়ে যাওয়া ধান জমিতই নষ্ট হচ্ছে। 

কৃষি বিভাগ জানিয়েছে- মৌসুমের শুরুতেই ধান কাটা শুরু হওয়ায় ঘূর্ণিঝড় অশনির ফলে যে বৃষ্টিপাত হয়েছে তাতে তেমন কোন প্রভাব পড়েনি। ফলে নিম্নাঞ্চলের তলিয়ে যাওয়া বোরো ধানের তেমন একটা ক্ষতি হয়নি কৃষকের ।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, টাঙ্গাইলের ১২ উপজেলায় এ বছর ১ লাখ ৭১ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে। আর উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৭ লাখ ৩০ হাজার ৭৬৬ মেট্রিক টন। ২৮, ২৯ জাতের বোরো ধান কর্তন প্রায় শেষে দিকে। এ ছাড়া বিভিন্ন জাতের বোরো ধান ৬০ ভাগ পেকে গেছে। জেলায় ১৫০টি হারভেস্টার মেশিন দিয়ে ধান কাটা হচ্ছে। ইতোমধ্যে ৩০ শতাংশ জমির ধান কাটা হয়েছে।

জানা গেছে, জেলায় এ বছর বোরো ধানের আবাদ ভালো হলেও ঘুর্ণিঝড় অশনির প্রভাবে ঝোড়ো হাওয়া ও বৃষ্টিতে নিম্নাঞ্চলের উপজেলাগুলোতে ধানের ক্ষতি হয়েছে। টানা বৃষ্টি হওয়ায় ক্ষেতে পানি জমে ধান তলিয়ে গেছে। এ ছাড়া ধান কাটতে শ্রমিক প্রতি গুনতে হচ্ছে ৯০০-১০০০ টাকা। আর আর বাজারে ধানের দাম ৭০০-৮০০ টাকা মণ। ফলে এক মণ ধানের বিনিময়ে শ্রমিক পাচ্ছে না কৃষকরা।

মামুদনগর গ্রামের কৃষক রেফাজ মিয়া বলেন, গেল রোজার শেষের দিকে জমির ধান পেকেছিল। ধান কাটবো কাটবো করে আর কাটা হয়নি। এর মধ্যে টানা বৃষ্টি শুরু হয়ে ক্ষেতে হাঁটু পানি জমে ধান তলিয়ে গেছে। দ্রুত যে ধান কাটব সে উপায় নেই।

নাগরপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ আঃ মতিন বিশ্বাস বলেন, উপজেলায় ইতোমধ্যে ১৫ শতাংশ জমির ধান কাটা হয়েছে। তবে দুই দিনের বৃষ্টি আর অশনির প্রভাবে কিছু ধান শুয়ে পড়েছে। কিন্তু ধানের কোনো ক্ষতি হয়নি। তারপরও ধান কাটা অব্যাহত রয়েছে। আবহাওয়া ভালো হওয়ার পাশাপাশি কৃষকরা বৃষ্টি উপেক্ষা করে যদি ধান কাটতে পারে, তাহলে আগামী ১৫-২০ দিনের মধ্যে ধান কাটা শেষ হবে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মো. আহসানুল বাশার বলেন, অশনিতে ফসলের কোনো ক্ষতি হয়নি। জেলার ভূঞাপুর, নাগরপুর, টাঙ্গাইল সদর, দেলদুয়ার ও বাসাইল উপজেলার নিম্নাঞ্চলের ৫০ ভাগ জমির ধানে দুই দিনের বৃষ্টির পানি প্রবেশ করেছে। এতে জমির ধান শুয়ে পড়লেও কোনো ক্ষতি হয়নি।

(এসএম/এসপি/মে ১২, ২০২২)