গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি : গোপালগঞ্জে শোকাবহ পরিবেশে মার্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত বার্ডেমের চিকিৎসক বাসুদেব সাহার অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। শনিবার গভীর রাতে গোপালগঞ্জ পৌর শ্মশানে ধর্মীয় আচার আচরণ মেনে শেষকৃত্য সম্পন্ন করা হয়। এ অনুষ্ঠানে গোপালগঞ্জের শোকার্ত শত, শত মানুষ অংশ নেন।

রাত ৮ টার দিকে ডা. বাসুদেব সাহা তার স্ত্রী শিবানী রানী সাহা, বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া ছেলে স্বপ্নীল সাহার মরদেহ গোপালগঞ্জ পৌর শ্মশানে নেয়া হয়। পৌর শ্মশানের মুক্তিধামে ৩ জনের মরদেহ পৃথক ভাবে দাফন করা হয়। শনিবার রাত ২টার দিকে ওই ৩ জনের দাহ শেষ হয়।

সন্ধ্যার কিছু পর চিকিৎসক বাসুদেব সাহা, স্ত্রী ও ছেলের মরদেহ গোপালগঞ্জ আড়াই শ’ বেড জেনারেল হাসপাতাল থেকে এ্যাম্বলেন্সে করে উদয়ন রোডের বাড়িতে আনা হয়। পরিবারের সদস্য, স্বজন ও প্রতিবেশীদের আহাজারিতে এলাকার আকাশ-বাতাস ভারি হয়ে ওঠে। সেখানে এক হৃদয় বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়। পরে তার শবযাত্রা গোপালগঞ্জ শহরের উদয়ন রোড থেকে পৌর শ্মশানের উদ্দেশ্যে রওনা হয়।

ডা. বাসুদেব সাহার ভাই লেলিন সাহা বলেন, রাত সাড়ে ৮ টার দিকে অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া শুরু হয়। রাত ২ টার দিকে এটি শেষ হয়। শ্মশানে ৩টি চিতায় ৩ জনের মরদেহ পৃথকভাবে দাহ করা হয়েছে। অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় গোপালগঞ্জের সর্বস্তরের শোকার্ত মানুষ অংশ নেন।

প্রতিবেশি তুষার কান্তি বিশ্বাস বলেন, ডা. বাসুদেব সাহা অনন্য গুনের মানুষ ছিলেন। তিনি গোপালগঞ্জ বাসীর জন্য বারডেমে সব ধরণের সুযোগ সুবিধা করে দিতেন। এ কারণে সাধারণ মানুষের কাছে তিনি খুবই প্রিয়ভাজন ছিলেন। তারা এ মৃত্যু আমাদের কাছে অপ্রত্যাশিত। তার অকাল মৃত্যুতে আমরা মর্মাহত। আমরা তার আত্মার শান্তি কামনা করি। তার শোকার্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করছি।

প্রত্যক্ষদর্শী মো. এমদাদ হোসেন জানান, শনিবার সকালে ব্যক্তিগত প্রাইভেটকারে করে বারডেম হাসপাতালের চিকিৎসক গোপালগঞ্জ শহরের প্রফুল্ল কুমার সাহার ছেলে বাসুদেব সাহা স্ত্রী ও সন্তানকে নিয়ে ঢাকা থেকে অসুস্থ মাকে দেখতে গোপালগঞ্জ আসছিলেন।

অপরদিকে, কাশিয়ানীর ফুকরা থেকে একটি মটর সাইকেল নিয়ে অনিক মিয়া ও তার স্ত্রী জেসমিন আক্তার গোপালগঞ্জ শহরের দিকে আসছিলো। ঘটনাস্থলে প্রাইভেটকার ও ওই মটর সাইকেলের সংঘর্ষ হয়।

এ সময় বরগুনার পাথরঘাটা থেকে ঢাকাগামী রাজিব পরিবহনের একটি দ্রুতগামী যাত্রীবাহী বাস অপর একটি নসিমনকে সাইড দিতে গেলে প্রাইভেটকারের সাথে বাসের সংঘর্ষ ঘটে। তখন প্রাইভেটকারটি দুমড়ে মুচড়ে মহাসড়কের পাশে ধান মাড়াইরত মেশিনের ওপর ছিটকে পড়ে এবং যাত্রীবাহী বাসটি গাছের সাথে ধাক্কা লেগে রাস্তার উপর উল্টে পড়ে। এতে ঘটনাস্থলে ডাক্তার বাসুদেব সাহা, তার স্ত্রী, সন্তান ও ধান মাড়াইরত ফিরোজ মোল্লা ও তার স্ত্রী, মোটরসাইকেল চালক অনিক মিয়া ও তার স্ত্রীসহ ঘটনাস্থলে ৭ জন নিহত হন।

(টিকেবি/এএস/মে ১৫, ২০২২)