মো. সিরাজ আল মাসুদ, টাঙ্গাইল : "দেবনা দেবনা পানি দেবনা, রক্ত দিব জীবন দিব, পানি দিবনা" এই শ্লোগানকে সামনে রেখে টাঙ্গাইলে মজলুম জননেতা মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর ঐতিহাসিক ফারাক্কা লং মার্চের ৪৬ তম দিবস উদযাপন উপলক্ষে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। টাঙ্গাইল শহরের নিরালা মোড় সাধারণ গ্রন্থাগারে এ আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। ১৯৭৬ সালের এই দিনে রাজশাহীর ঐতিহাসিক মাদরাসা ময়দান থেকে শুরু হয় লংমার্চ। চাঁপাইনবাবগঞ্জের কানসাটে গিয়ে শেষ হয়। আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী পদ্মার পানির ন্যায্য হিস্যার দাবিতে মওলানা ভাসানী এ লংমার্চ করেন।

চুক্তি অনুযায়ী পানির ন্যায্য হিস্যার দাবি পূরণ না হওয়ায় মরুকরণের দিকে যাচ্ছিল বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল। যদিও সে অবস্থার এখনো পরিবর্তন হয়নি। ১৯৯৬ সালে ফারাক্কার পানি ভাগাভাগির বিষয়ে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে নতুন করে ৩০ বছর মেয়াদি চুক্তি হলেও বাংলাদেশ পানি পায়নি। ১৯৭৫ সালে বাংলাদেশের সীমান্ত থেকে মাত্র ১৮ কি.মি. দূরে ভারতের মনোহরপুরে ভারত এই ফারাক্কা বাঁধ নির্মাণ করে। আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, গঙ্গা নদীর বুকে দেওয়া ভারতের ফারাক্কা বাঁধের কারণে ভাটিতে বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলের প্রায় তিন কোটি মানুষ সেচের পানির অভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

দক্ষিণাঞ্চলের আরও প্রায় চার কোটি মানুষ ও এক-তৃতীয়াংশ এলাকা সেচের পানির অভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পরেছে। আরও নানামুখী ক্ষতি হচ্ছে বাংলাদেশের। এছাড়াও পানি নিয়ে ভবিষ্যত না না পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা করেন নেতৃবৃন্দ। এ অবস্থার জন্য যারা দায়ী তাদের কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ আদায় এবং গঙ্গার পানির ন্যায্য হিস্যা আদায়ে সরকারসহ সবাইকে সোচ্চার হওয়ার আহবান জানান তারা। মওলানা ভাসানী ফাউন্ডেশন আয়োজিত এ আলোচনা সভায় মওলানা ভাসানী ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান খন্দকার নাজিম উদ্দিনের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাতিংঘের সাবেক পানি বিশেষজ্ঞ ড.এস.আই খান, সৈয়দ ইরফানুল বারী, হারুন-অর-রশিদ, এডভোকেট আলরুহী প্রমুখ। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন ভাসানী ফাউন্ডেশনের মহাসচিব মাহমুদুল হক সানু।

(এসএএম/এএস/মে ১৬, ২০২২)