দিলীপ চন্দ, ফরিদপুর : ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলার কৃষ্ণপুর গ্রামে ১৯৭১ সালের ১৭ মে ঘটে বর্বরোচিত এক গন হত্যার ঘটনা । সেদিন সেই এলাকার ৮জন হিন্দুকে পরিবারের সদস্যকে হত্যা করা হয়। তারা হলেন শহীদ সুবর্ণ মিত্র, শহীদ মিহির মিত্র, শহীদ কৃষ্ণা দাসী সাহা, শহীদ ভুপতি সাহা, শহীদ ননী সাহা, শহীদ হরিপদ সাহা, শহীদ মলিন শীল, শহীদ অলোক সাহা। 

সেখানে একটি স্মৃতি ফলক নির্মিত করে দিয়েছেন বাংলাদেশ সরকার। যার উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেখানে হত্যার স্বীকার হওয়া শহীদ সুবর্ণ মিত্র ও শহীদ মিহির মিত্রদের নাম এখনো গেজেট ভুক্ত না হওয়ার কারনে তাদের পরিবারগন দাবি তুলেছেন তাদের নাম সরকারী গেজেটে অন্তভুক্ত হওয়ার জন্য।

এ বিষয়ে সুবর্ণ মিত্র এর মেয়ে নীলিমা রাহুত বলেন, ১৯৭১ সালের ১৭ মে আমার বাবা-ভাই কে হারায়। স্বাধীনতা যুদ্ধে পাকিস্থানী হানাদার বাহিনীর বুলেটের আঘাতে রক্তাক্ত হয় নিথুন দেহ, শহীদ হলেন আমার বাবা সুবর্ণ মিত্র ও আমার মেঝো ভাই শহীদ মিহির মিত্র সহ আরো অনেকে। স্মৃতি ফলকে নাম থাকার পরেও এখনো গেজেট ভুক্ত না হওয়ায় আমরা ব্যাথিত। বাবা হারা ভাই হারা আমি এখনো জীবিত। আমার জীবনে শেষ প্রান্তে এসে শুধু দেখে যেতে চায় শহীদ পরিবারের স্বীকৃতি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় এর নিকট আমার আকুল আবেদন মিত্র পরিবারকে শহীদ পরিবার হিসাবে স্বীকৃতি দেয়ার জন্য জোর দাবি জানাচ্ছি।

এদিকে কৃষ্ণপুর গ্রামে ১৯৭১ সালের ১৭ মে ঘটে বর্বরোচিত এই গন হত্যার দিনকে স্মরন করে মঙ্গলবার(১৭মে) সকালে বিনম্র শ্রদ্ধা জানানো হয় শহীদ বেদিতে।

সেখানে সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভায় শহীদ পরিবারের সন্তান লক্ষণ চন্দ্র সাহার সভাপতিত্বে প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন বীর মুক্তিযোদ্ধা পি.কে সরকার, অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন ১৯৭১ আমরা শহীদ পরিবার শহীদ স্মৃতি সংরক্ষনের সভাপতি মোঃ সাজ্জাদুল হক সাজ্জাদ, বিশেষ অতিথি ছিলেন প্রাণ চৌধুরী পিবু, বক্তব্য রাখেন শহীদ পরিবারের সন্তান সুবর্ণ মিত্রের কন্যা ও শহীদ মিহির মিত্রের বোন নীলিমা রাহূত, বীর মুক্তিযোদ্ধা সত্য রঞ্জন কর্মকার , শহীদ পরিবারের সন্তান প্রদীপ কুমার মিত্র, শহীদ পরিবারের নাতি অশোক কুমার রাহুত বাপন, স্থানীয় বাসিন্দা সরোজ কুমার মটু।

সভায় বক্তারা এই শহীদ পরিবারকে সরকারি গেজেটে অর্ন্তভুক্তি দাবি তোলেন।

বক্তারা বলেন, ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে একই পরিবারের ২ জন সদস্য সহ মোট ৮ জন পাকবাহিনীর বর্বরোচিত হামলায় হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন। অথচ দীর্ঘদিনেও এ তালিকাটি শহীদ পরিবারে অন্তভুক্ত না হওয়ার কারণে তার আক্ষেপ প্রকাশ করেন। তারা অবিলম্বে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে এই পরিবারের তালিকাটি সরকারিভাবে গেজেট ভুক্ত হবার জন্য দাবি করেন। বক্তারা ‌ অবিলম্বে শহীদ বেদিতে নাম থাকা সকল শহীদদের কে রাষ্ট্রীয় ভাবে স্বীকৃতি ও গেজেট ভুক্ত করার জোর দাবি জানান।

অন্যদিকে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে সুবর্ণ মিত্রের কন্যা নীলিমা রাহুত বলেন জীবদ্দশায় তাদের এই গেজেট টি শহীদ পরিবার অন্তভুক্ত হোক সেটা তাদের একমাত্র প্রত্যাশা।

(ডিসি/এএস/মে ১৮,২০২২)