আন্তর্জাতিক ডেস্ক : আফ্রিকার পর এবার ইউরোপ ও আমেরিকায় ছড়িয়ে পড়ছে বিরল রোগ মাঙ্কিপক্স। সম্প্রতি বেশ কয়েকটি দেশে তরুণদের আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। বিশেষ করে ফ্রান্স, ইতালি, যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, স্পেন, পর্তুগাল এবং যুক্তরাজ্যে সম্প্রতি মাঙ্কিপক্স রোগে আক্রান্ত ব্যক্তি শনাক্ত হয়েছে।

বিরল এ রোগে সর্বশেষ রোগী শনাক্ত হয়েছে ফ্রান্স, ইতালি, সুইডেন ও অস্ট্রেলিয়ায়ও। এর আগে সংক্রমণের ঘটনা ঘটে যুক্তরাষ্ট্রে। কানাডায় এ পর্যন্ত ১৩ জন মাঙ্কিপক্সে আক্রান্ত হয়েছেন। পর্তুগালে এ রোগে আক্রান্ত হয়েছেন পাঁচজন। এছাড়া স্পেনে সাতজন সংক্রমিত হয়েছেন বলে জানা গেছে। ব্রিটেনে আক্রান্ত হয়েছেন ৯ জন।

বিশ্বজুড়ে স্বাস্থ্য সংশ্লিষ্টরা এ রোগে আক্রান্ত হওয়ার বিষয়ে পর্যবেক্ষণ করছেন। এটি একবারও যারা আফ্রিকায় ভ্রমণ করেননি, তাদেরও শনাক্ত হচ্ছে বলেও জানা গেছে। যদিও সাধারণ মানুষের মধ্যে এ রোগ ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি কম।

মাঙ্কিপক্স আসলে কী?
জ্বর, গায়ে ব্যথা, আকারে বড় বসন্তের মতো গায়ে গুটি গজিয়ে ওঠাকে আপাতত মাঙ্কিপক্সের উপসর্গ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। মাঙ্কিপক্সের একটি রূপ এতটাই ভয়ংকর যে আক্রান্ত ব্যক্তিদের ১০ শতাংশ মারাও যেতে পারেন।

তবে এ ভাইরাসে আক্রান্ত বেশির ভাগ রোগী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে সুস্থ হয়ে যান। বৈশিষ্ট্যের দিক থেকে এটি অনেকটা জল বসন্তের ভাইরাসের মতো। পশ্চিম ও মধ্য আফ্রিকার নিরক্ষীয় বনাঞ্চলে এ রোগের প্রাদুর্ভাব বেশি।

১৯৫৮ সালে বিজ্ঞানীরা এই রোগটি প্রথম শনাক্ত করেন। তারা তখন গবেষণায় বানরদের মধ্যে ‘পক্স-সদৃশ’ রোগের অস্তিত্ব টের পান এবং পরে এটি মাঙ্কিপক্স নামকরণ হয়। মানব শরীরে এর সংক্রমণ ঘটে ১৯৭০ সালে। কঙ্গোর প্রত্যন্ত অঞ্চলে একটি নয় বছর বয়সী ছেলের মধ্যে ঘটে এ সংক্রমণ।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য বলছে, প্রতি বছর আফ্রিকার প্রায় ডজনখানেক দেশে মাঙ্কিপক্স সংক্রমণের খবর আসে। বেশিরভাগই কঙ্গোতে, যেখানে বছরে প্রায় চয় হাজার মানুষ শনাক্তের রিপোর্ট পাওয়া যায় এবং নাইজেরিয়ায় এ সংখ্যা কমপক্ষে তিন হাজার।

এ ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার কোনো চিকিৎসা নেই। তবে যে কোন ভাইরাস প্রাদুর্ভাবের মতোই উপযুক্ত পদক্ষেপ নিয়ে এর প্রকোপ রোধ করা যায় বলে মনে করেন চিকিৎসা বিশেষজ্ঞরা।

তথ্যসূত্র : রয়টার্স, ভয়েস অব আমেরিকা

(ওএস/এএস/মে ২০, ২০২২)