রঘুনাথ খাঁ, সাতক্ষীরা : সাতক্ষীরার কালিগঞ্জের জাফরপুরে অস্থায়ী হেফজোখানার ১১ বছরের এক শিক্ষার্থীকে সাত মাসেরও বেশি সময় ধরে বলাৎকারের অভিযোগে  বরেয়া মিলনী মাধ্যমিক বিদ্য্যালয়ের ধর্মীয় শিক্ষক আবু সাদ এর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। শুক্রবার সন্ধ্যায় বলাৎকারের শিকার ওই শিশুর বাবা বাদি হয়ে কালিগঞ্জ থানায় এ মামলা দায়ের করেন।

এদিকে শনিবার সাতক্ষীরার বিচারিক হাকিম ইয়াসমিন নাহারের কাছে ২২ জবানবন্দি শেষে সদর হাসপাতালে ওই শিশুর ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। মামলা হওয়ার খবর পেয়ে লাপাত্তা ওই শিক্ষক। তবে প্রতিষ্ঠানের বাইরে বলাৎকারের ঘটনা নিয়ে শিক্ষক আবু সাদকে নিয়ে কোথাও কোন মন্তব্য না করার জন্য সকল শিক্ষকের কাছ থেকে শনিবার সকালে সাক্ষর গ্রহণ করেছেন বরেয়া মিলনী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সুব্রত কুমার বৈদ্য।

বলাৎকারের অভিযোগে মামলা হওয়া শিক্ষক আবু সাদ শ্যামনগর উপজেলার ভুরুলিয়া ইউনিয়নের জাহাজঘাটার ফজলুল হকের ছেলে।

মামলার বিবরনে জানা যায়, আট মাস আগে একমাত্র ছেলেকে (১১) বরেয়া গ্রামের ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা কামাল হোসেনের ভাড়াটিয়া ও বরেয়া মিলনী মাধ্যমিক বিদ্য্যালয়ের ধর্মীয় শিক্ষক আবু সাদ এর হেফজখানায় মাসিক এক হাজার টাকা বেতনে ভর্তি করান বরেয়া গ্রামের এক মাছ চাষী। আড়াই মাস আগে ওই শিক্ষক জাফরপুর গ্রামের গ্রাম পুলিশ আব্দুল গফফারের বাড়ির দোতলায় ভাড়াটিয়া হিসেবে বসবাস শুরু করেন। সেখানে হেফজোখানা পরিচালনা করতেন আবু সাদ।

মামলার বিবরনে আরো জানা যায়, হেফজোখানায় ভর্তি করার কিছুদিন যেতে না যেতেই বাদির ছেলেকে গভীর রাতে কৌশলে শৌচাগারে ডেকে নিয়ে বলাৎকার করতো শিক্ষক আবু সাদ। বিষয়টি কাউকে জানালে খুন করে লাশ গুম করে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হতো। যৌন অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে বুধবার রাতে বলাৎকারের বিষয়টি বাবাকে জানায় ছেলে। বিষয়টি বৃহষ্পতিবার স্থানীয় চেয়ারম্যান ও মেম্বরকে অবহিত করে থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে অবহিত করা হয়।

কালিগঞ্জ থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ গোলাম মোস্তফা জানান, বলাৎকারের শিকার ওই ছেলের বাবা বাদি হয়ে আবু সাদ এর নাম উল্লেখ করে শুক্রবার সন্ধ্যায় থানায় মামলা (২৯) দায়ের করেছেন। শনিবার সাতক্ষীরা আদালতের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম কাছে ২২ ধারায় জবানবন্দি শেষে সদর হাসপাতালে তার ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। আবু সাদকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

(আরকে/এসপি/মে ২১, ২০২২)