তথ্যপ্রযুক্তি ডেস্ক : সাম্প্রতিক এক গবেষণায় উঠে এলো চাঞ্চল্যকর তথ্য, সুইচ অফ থাকাকালীনও আইফোন ম্যালওয়ার আক্রমণের শিকার হতে পারে। যা ব্যবহারকারীর কপালের দুশ্চিন্তার ভাঁজ বাড়িয়েছে আরও কয়েকটি।

জার্মানের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক এমনটাই জানিয়েছেন তাদের রিপোর্টে। জানা যাচ্ছে, আইফোন ডিভাইসের পাওয়ার অফ করলেও, তা পুরোপুরি কাজ করা বন্ধ করে না। এক্ষেত্রে চিপসেটসহ অন্যান্য বেশ কয়েকটি হার্ডওয়্যার কম পাওয়ারেও কাজ করা চালিয়ে যায়।

উদাহরণস্বরূপ বলা হয়েছে, আইফোন হারিয়ে গেলে তা যাতে সহজে খুঁজে বের করতে, ‘ফাইন্ড মাই নেটওয়ার্ক’ ফিচার নিয়ে আসা হয়েছিল। এই ফিচারটি ডিভাইসের ব্যাটারি শেষ হয়ে গেলেও, আইফোনকে সহজেই আবিষ্কার করতে সক্ষম এবং এমনটা করার জন্য চিপসেটসহ নির্দিষ্ট কয়েকটি হার্ডওয়ারের সাহায্য নিয়ে থাকে।

তবে এই স্মার্ট ফিচারেরই অপব্যবহার করছে হ্যাকাররা। যেহেতু আইফোনের সুইচ অফ করা থাকলেও তা পুরোপুরি বন্ধ হয় না, তাই তারা সহজেই সেটিকে হ্যাক করতে পারে। এটি প্রমাণ করতে, গবেষকরা এমন একটি ম্যালওয়ার তৈরি করেছেন, যা আইফোন বন্ধ থাকা অবস্থাতেও সক্রিয় ভাবে কাজ চালিয়ে যেতে পারে।

এই বিষয়ে জার্মানির ‘টেকনিক্যাল ইউনিভার্সিটি অব ডার্মস্টাড’ এর গবেষকদের মন্তব্য, ফাইন্ড মাই নেটওয়ার্ক ফিচারের মাধ্যমে আইফোনের জিওলোকেশন বা ভূ-অবস্থান জানাতে ব্যবহৃত ব্লুটুথ চিপ, তার দ্বারা চালিত ফার্মওয়্যারকে ডিজিটালভাবে সাইন বা এনক্রিপ্ট করতে পারে না।

অন্যদিকে চিপটির এই ঘাটতিকে কাজে লাগিয়েই গবেষকরা ডিভাইসে ম্যালওয়্যার প্রেরণ করতে পেরেছেন। যা আইফোনের অবস্থান ট্র্যাক করতে বা ডিভাইসটি বন্ধ থাকা অবস্থায় নতুন ফিচারগুলো ট্রিগার করতে অনুমতি দেয়।

এছাড়াও আইফোনের চিপসেট দ্বারা সৃষ্ট ঝুঁকি নিয়েও গবেষণা করা হয়েছিল, যা লো-পাওয়ার মোডেও সর্বদা চালু এবং কর্মরত থাকে। তবে এটি আইওএস সিস্টেম চালিত ডিভাইসের লো-পাওয়ার মোডের অনুরূপ নয়, যা আপনার ব্যাটারি লাইফ বাঁচায়।

এটি একটি হার্ডওয়্যার-ভিত্তিক ফিচার, যা এলপিএম (LPM) নামে পরিচিত। এই ফিচার, নিয়ার-ফিল্ড কমিউনিকেশন (NFC), আল্ট্রা-ওয়াইডব্যান্ড (UWD) এবং ব্লুটুথ চিপসেটকে একটি নির্দিষ্ট মোডে কাজ করার অনুমতি দেয়। যার কারণে ডিভাইসটি প্রাথমিকভাবে বন্ধ থাকলেও, অভ্যন্তরীণভাবে ২৪ ঘন্টা পর্যন্ত সক্রিয় থাকে।

জার্মান ভিত্তিক ইউনিভার্সিটির গবেষক-গোষ্ঠী জানিয়েছেন যে, তাদের এই সাম্প্রতিক গবেষণার ফলাফল অ্যাপলকে পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু টেক জায়ান্টটির পক্ষ থেকে কোনো প্রতিক্রিয়া পাননি তারা। আর তাই, গবেষকেরা তাদের গবেষণার ফলাফল সর্বজনীন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। ফলে এই ঘটনা, অ্যাপলকে তাদের আইফোন সংক্রান্ত সম্ভাব্য সমস্যাগুলো অনুসন্ধান করতে এবং সমস্যার সমাধান খুঁজতে বাধ্য করবে বলে আশা করছেন গবেষকরা। বিজনেস ইনসাইডার।

(ওএস/এসপি/মে ২৫, ২০২২)