রবিউল ইসলাম, গাইবান্ধা : গাইবান্ধার পলাশবাড়ী থানা পুলিশ কর্তৃক পৌরসভার রাজস্ব আদায়ে বাধা প্রদান পূর্বক পৌরসভা পরিচালনায় অসহযোগিতা, পৌরসভাকে অবমাননা করার প্রতিবাদে পৌরসভার উদ্যোগে সংবাদ সম্মেলন অনু্ষ্ঠিত হয়েছে।

আজ বুধবার সকালে পৌরসভার অস্থায়ী কার্যালয়ে এ সংবাদ সম্মেলনে পৌর মেয়র গোলাম সারোয়ার প্রধান বিপ্লব লিখিত বক্তব্যে জানান, স্থানীয় সরকারের গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান হিসাবে পৌরসভা ইহার নাগরিককে স্থানীয় সরকার (পৌরসভা) আইন, ২০০৯ এর ধারা ৫০ অনুসারে প্রায় ২০ ধরনের সেবা প্রদান করে থাকে। উক্ত সেবা প্রদান কার্যক্রম, অবকাঠামো উন্নয়ন, পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম, ড্রেনেজ ব্যবস্থা সম্পর্কিত ব্যয়, পৌর পরিষদের সন্মানী ভাতা, কর্মকর্তা/কর্মচারীগণের বেতন-ভাতা, জ্বালানী, আপ্যায়ন, দরিদ্র সহায়তা সহ বিভিন্ন প্রকার ব্যয় ইহার নিজস্ব রাজস্ব আয় দ্বারা নির্বাহ করা হয়।

উল্লেখিত ব্যয় নির্বাহের জন্য সরকার পৌর পরিষদ ও পৌরসভাকে রাজস্ব আয়ে নিম্নরূপ ক্ষমতা প্রদান করেছেন- পৌরসভা কার্য বিধিমালা, ২০১২ এর ৪ ধারায় বর্ণিত করা, উপ-কর রেইট, টোল এবং ফি আরোপের প্রস্তাব ও নির্ধারণ। পৌরসভা আইন-২০০৯ এর তৃতীয় তফশীলে বর্ণিত ক্রমিক নং ৭-এর টোল জাতীয় ফিস ও ১৩ এর মোটরগাড়ী ও নৌকা ব্যতীত অন্যান্য যানবাহনের উপর কর সহ অন্যান্য কর, উপ-কর, রেইট, টোল ফিস আরোপ।

উল্লিখিত রাজস্ব আদায়ের খাতের মধ্যে পৌর এলাকার মধ্যে চলাচলরত সিএনজি, অটো টেম্পু, ভটভটি, টলি ইত্যাদির টোল আদায়ের জন্য গত ৬ এপ্রিল-২০২২ তারিখে অনুষ্ঠিত পৌর পরিষদের মাসিক সভার সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে ইজারা প্রদান করা হয়। কিন্তু টোল আদায় করতে গিয়ে ইজারাদারের আদায়কারীগণ প্রায়ই পলাশবাড়ী থানা পুলিশ কর্তৃক হেনস্তার শিকার হচ্ছেন। এমনকি গত ঈদুল ফিতরের কয়েকদিন আগে এবং ২৪ মে ইজারাদারের দুজন আদায়কারীকে থানায় আটক করে নিয়ে যায়। এছাড়াও ২০২১ সালের মে মাসে টোল আদায়ের যাচাইয়ের জন্য পরীক্ষামূলক টোল আদায়ের জন্য নিয়োজিত ৩ জন কর্মীকে মিথ্যা চাঁদাবাজীর মামলায় আদালতে সোপর্দ করে।

এমতাবস্থায় পৌরসভার রাজস্ব আদায় ও পৌরসভা পরিচালনায় চরম বাঁধার সম্মুখিন হচ্ছি। অথচ, পৌরসভার কর আরোপ ও আদায় পদ্ধতি বিধিমালা, ২০১৩ এর ৫০ ধারায় সুস্পষ্ট উল্লেখ রয়েছে, টোল আদায়ের ক্ষেত্রে বাঁধার সম্মুখীন হলে প্রয়োজনে পুলিশ কর্মকর্তার সহায়তা গ্রহন করা যাবে। কিন্তু দুঃখের বিষয় পলাশবাড়ী থানা পুলিশ উল্টো বাঁধা প্রদান করছে। এমনকি, পৌরসভা আইন, ২০০৯ এর ১১৩ ধারায় প্রত্যেক পৌরসভা এলাকার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও অন্যান্য অবক্ষন কর্মকর্তা ও কর্মচারীকে সুস্পষ্ট নির্দেশনা দেয়া হয়েছে, পৌরসভা বিধিবিধান বাস্তবায়নে সহায়তা প্রদানের জন্য অথচ, পলাশবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও অন্যান্য পুলিশ সদস্য পৌরসভার কর্মকান্ডে বাঁধা প্রদান পূর্বক পৌরসভা পরিচালনায় বিঘ্ন সৃষ্টি, পৌরসভাকে অবমাননা ও আইনের লংঘন করছেন।এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য আমি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে আপনাদের মাধ্যমে অনুরোধ করছি।

সংবাদ সম্মেলনে পৌর নির্বাহী কর্মকর্তা শাহজাহান রিপন, প্যানেল মেয়র আব্দুস সোবাহান, প্যানেল মেয়র শাহিনুর আক্তার, সংরক্ষিত কাউন্সিলর সাজেদা বেগম, শিরিন আকতার, পৌর কাউন্সিলর মতিয়ার রহমান, রবিউল ইসলাম সুমন, মঞ্জু তালুকদার, লিটন মিয়াসহ স্থানীয় সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।

(আর/এসপি/মে ২৫, ২০২২)