এ কে আজাদ, রাজবাড়ী : রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলায় কৃষি অর্থনীতিতে নতুন করে যোগ হয়েছে জাপানি মিষ্টি আলু 'ওকিনিয়া' ও 'মুরাসাকি'। পরীক্ষামূলকভাবে উপজেলার প্রায় ১ হেক্টর জমিতে চাষ করা হয়েছে ওকিনিয়া ও মুরাসাকি জাতের আলু। আর এতে করে নতুন সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে কৃষি অর্থনীতিতে।

কৃষি ও পুষ্টিবিদরা বলছেন, দেশি মিষ্টি আলুর চেয়ে জাপানি জাতের এই আলুর ফলন দ্বিগুণ। সেইসঙ্গে এই আলুর ভেতরের রঙ উজ্জ্বল বেগুনি যা দেশি মিষ্টি আলুর চেয়ে অনেক বেশি সুস্বাদু ও পুষ্টিগুণসমৃদ্ধ। ফলে এ মিষ্টি আলু চাষে কৃষকদের আগ্রহ বাড়ছে।

কৃষি ও পুষ্টিবিদরা বলছেন, দেশি মিষ্টি আলুর চেয়ে জাপানি জাতের এই আলুর ফলন দ্বিগুণ। সেইসঙ্গে এই আলুর ভেতরের রঙ উজ্জ্বল বেগুনি যা দেশি মিষ্টি আলুর চেয়ে অনেক বেশি সুস্বাদু ও পুষ্টিগুণসমৃদ্ধ। ফলে এ মিষ্টি আলু চাষে কৃষকদের আগ্রহ বাড়ছে।

স্থানীয় কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, এ বছর ‘কন্দাল ফসল উন্নয়ন’ প্রকল্পের আওতায় প্রাথমিকভাবে উপজেলার প্রায় ১ হেক্টর জমিতে জাপানের দুইটি জাতের মিষ্টি আলু চাষের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

এতে উপজেলার ১৫ জন কৃষক প্রত্যেকে তাদের ২০ শতাংশ জমিতে এই আলু চাষ করেছেন। সাধারণত দেশি জাতের মিষ্টি আলু হেক্টর প্রতি ১৮ থেকে ২০ মেট্রিক টন ফলন হলেও জাপানি জাতের নতুন আলুর ফলন এসেছে হেক্টর প্রতি ৪০ থেকে ৪৫ মেট্রিক টন। সাধারণত আলুতে শর্করা ও পানির উপাদান থাকলেও ওকিনিয়া ও মুরাসাকি জাতের মিষ্টি আলুর স্বাদ ও পুষ্টিগুণ অনেক বেশি।

সরেজমিনে দেখা গেছে, পাংশার বাবুপাড়া, হাবাসপুর চর, বাহাদুরপুর চর, কলিমহর, কসবামাজাইল, পাট্টা ইউনিয়নের বিভিন্ন মাঠে বর্তমানে দেখা মিলছে ওকিয়ানা ও মুরাসাকি নামের এসব আলু। আর কিছু দিন পরই মাঠ থেকে তোলা হবে। এসব এলাকার চরের পলিযুক্ত বালিময় মাটিতে দীর্ঘদিন ধরে মিষ্টি আলুর চাষ করছেন কৃষকরা। এবার প্রথমবারেরমতো তারা কৃষি বিভাগের পরামর্শ ও সহযোগিতায় প্রচলিত জাতের পাশাপাশি রপ্তানিযোগ্য নতুন জাতের মিষ্টি আলু চাষ করেছেন। এতে আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার আশা করছেন কৃষকরা।

উপজেলার বাবুপাড়া ইউনিয়নের মিষ্টি আলু চাষি রফিক উদ্দিন বলেন, আমরা যৌথভাবে প্রথমবারেরমতো জাপানি মিষ্টি আলু আবাদ করেছি। চলতি মৌসুমে কৃষি বিভাগের সহায়তায় যৌথভাবে ৪০ শতক জমিতে জাপানি মিষ্টি আলু চাষ করেছি। দেশি আলুর চেয়ে ফলন পেয়েছি প্রায় দ্বিগুণ। আকর্ষণীয় রং হওয়ায় এ জাতের আলুর চাহিদাও বেশি। আগামী মৌসুমে ১ একর জমিতে এ জাতের আলু চাষ করব।

হবাসপুর চরে জাপানি জাতের ওকিয়ান মিষ্টি আলু চাষ করা আবুল পাটালী বলেন, আগে আমরা যে আলু লাগাইতাম তার ফলন কম হইত, আবার দাম ও কম পাইতাম। কিন্তু জাপানি আলুর রঙ খুব সুন্দর এবং বিক্রি করলে ভালো দাম পামু।

ওই এলাকার আরেক কৃষক জানান, এবার ২০ শতক জমিতে জাপানি জাতের মিষ্টি আলু চাষ করেছেন। উচ্চ ফলনশীল এ জাতের আলু চাষ করে তিনি সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন। তার দেখাদেখি অন্যান্য কৃষকরাও আগামী মৌসুমে এ জাতের আলু চাষ করার আগ্রহ দেখিয়েছেন।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রতন কুমার ঘোষ বলেন, চলতি মৌসুমে পরীক্ষামূলকভাবে উপজেলার ১ হেক্টর জমিতে জাপানি নতুন জাতের আলুর চাষ হয়েছে। উচ্চ ফলনশীল ও পুষ্টিগুণসমৃদ্ধ জাপানি এ মিষ্টি আলুর আবাদ করে কৃষকরা খুশি। আগামী মৌসুমে অধিক জমিতে এ জাতের আলু চাষ করার আগ্রহ দেখিয়েছেন স্থানীয় চাষিরা।

এতে জেলায় মিষ্টি আলুর চাষ আরও সম্প্রসারিত হবে। কৃষি বিভাগ থেকে স্থানীয় চাষিদের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ, প্রযুক্তিগত সুবিধাসহ উন্নতমানের বীজ সরবরাহ করা হচ্ছে।

(একে/এসপি/মে ২৬, ২০২২)