আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি দাবি করেছেন, ডনবাসের পূর্বাঞ্চলে ‘গণহত্যা’ চালাচ্ছে রাশিয়া। স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (২৬ মে) এক টেলিভিশন বক্তব্যে তিনি দাবি করে বলেন, ‘আমাদের জনগণের নির্বাসন ও বেসামরিক লোকদের ওপর হামলা রাশিয়ার ‘গণহত্যার’ একটি সুস্পষ্ট নীতি।

এদিকে, খারকিভে রুশ বোমা হামলায় ৯ জন নিহত ও ১৯ জন আহত হয়েছেন বলেও দাবি করেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। তিনি আরও বলেন, নিহতরা সবাই বেসমারিক লোক। সেখানে পাঁচ মাসের একটি শিশু ও তার বাবাও নিহত হন। শিশুটির মায়ের অবস্থাও আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে। খারকিভে আহতদের মধ্যে একজন নয় বছর বয়সী মেয়েও রয়েছে বলে জানান তিনি।

ইউক্রেনীয় সরকারের নিয়ন্ত্রণাধীন ডনবাসের লুহানস্ক অঞ্চলের একমাত্র অংশ সেভেরোদোনেৎস্ক। শহরটির মেয়র অলেক্সান্ডার স্ট্রিউক বলেছেন, রাশিয়ান সেনারা বিভিন্ন পয়েন্টে অবস্থান করছেন সেখানে। মেয়র অলেক্সান্ডার স্ট্রিউক বলেছেন, শহরটিতে ১২ থেকে ১৩ হাজার মানুষ এখনো আছেন। যেখানে রুশ সেনাদের হামলায় ৬০ শতাংশ ভবন ধ্বংস হয়ে গেছে। রুশ হামলায় এক হাজার পাঁচশ জন নিহত হয়েছেন ওই অঞ্চলে বলেও দাবি করেন তিনি। স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (২৬ মে) ওই অঞ্চল থেকে মাত্র ১২ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানান ভেরোদোনেৎস্কের মেয়র।

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ গড়িয়েছে চতুর্থ মাসে। গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে হামলা চালায় রাশিয়া। দেশ দুটির টানা তিন মাসের লড়াইয়ে বহু মানুষ হতাহত হয়েছে। বিধ্বস্ত হয়েছে সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানসহ নানা স্থাপনা। আধুনিক অস্ত্রের ঝনঝনানিতে ধ্বংসযজ্ঞে পরিণত হয় ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভসহ গুরুত্বপূর্ণ সব অঞ্চল। জীবন বাঁচাতে দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন ইউক্রেনের বহু নাগরিক।

কয়েক বার যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করা হলেও নিজ অবস্থানে অনড় রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। ইউক্রেন পশ্চিমাদের সহযোগিতায় রাশিয়ার বিরুদ্ধে শক্তিশালী প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তুলেছে। ইউক্রেন সেনাদের প্রতিরোধের মুখে কিয়েভ দখল করতে পারেনি রাশিয়া। তবে দেশটির পূর্ব ও দক্ষিণাঞ্চলে হামলা জোরদার করে রুশ সেনারা।

এদিকে, রাশিয়ার ইউক্রেন আগ্রাসনের পর থেকে একের পর এক নিষেধাজ্ঞা জারি করে পশ্চিমা দেশগুলো। দেশটির অর্থনীততে ধস নামানোর হুঁশিয়ারি দিচ্ছে তারা। যদিও এসব নিষেধাজ্ঞাকে অবৈধ ঘোষণা দিয়ে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন, নিষেধাজ্ঞা আরোপ রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণার শামিল।

এই যুদ্ধ অস্থিরতা তৈরি করেছে বিশ্ববাজারে। অধিকাংশ দেশে বেড়েছে সব পণ্যের দাম। যুদ্ধ পরিস্থিতি ও নিষেধাজ্ঞার ডামাডোলে ইউক্রেন, রাশিয়া থেকে খাদ্যপণ্য আমদানি করতে না পারায় খাদ্য সংকট তৈরি হয়েছে কয়েকটি দেশে।

তথ্যসূত্র : আল-জাজিরা

(ওএস/এএস/মে ২৭, ২০২২)