কুষ্টিয়া প্রতিনিধি : কুষ্টিয়া প্রাণী সম্পদ বিভাগের বর্তমানে ঢাল নেই তলোয়ার নেই, নিধিরাম সর্দার এমন পরিস্থিতি বিরাজ করছে। নানা সমস্যায় জর্জরিত গুরুত্বপূর্ণ এই বিভাগের কার্যক্রম চলছে ঢিমে তালে।

জেলার ছয় উপজেলায় ভেটেরিনারী সার্জনের ৬টি পদ থাকলেও সেই পদের বিপরীতে রয়েছে মাত্র ৩ জন। শূন্য রয়েছে গুরুত্বপুর্ণ ৩ উপজেলা দৌলতপুর, কুমারখালী ও ভেড়ামারায়। আবার ফিল্ড কর্মীর অবস্থাও আরো নাজুক। প্রতি ইউনিয়নে ১জন করে ফিল্ডকর্মীর প্রয়োজন হলেও প্রতি উপজেলায় রয়েছে ৩ জন করে ফিল্ডকর্মী। আর এমন সংকটে মুখ থুবড়ে পড়েছে কুষ্টিয়া প্রাণী সম্পদ বিভাগের কার্যক্রম।

জেলা প্রাণী সম্পদ বিভাগের এমন সংকটময় পরিস্থিতির কথা জানালেন জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা. আশাদুল হক। তিনি জানান দ্রুত সংকট থেকে মুক্ত না হলে জেলার সম্ভাবনাময় অর্থনৈতিক খাত হুমকির মুখে পড়তে পারে। তবে এমন সংকট অচিরেই দূর হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।

এদিকে ভেটেনারী চিকিৎসক ও ফিল্ডকর্মী সংকট থাকায় কুষ্টিয়ার ২০টি পশু হাটে গরুর স্বাস্থ্য পরীক্ষার কার্যক্রম পরিচালনা বাধাগ্রস্থ হচ্ছে। প্রতি হাটে ১জন করে চিকিৎসক প্রয়োজন হলেও মাত্র ৩ জন চিকিৎসক আর গুটি কয়েক ফিল্ডকর্মী দিয়ে চালানো হচ্ছে স্বাস্থ্য পরীক্ষার কার্যক্রম। এসব কারণে পশু হাটে গরুর স্বাস্থ্যপরীক্ষা নিশ্চিতে যে পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে সরকার তা কিছুটা হলেও ব্যহত হবে।

গরু ব্যবসায়ি ছলেমান জানিয়েছেন প্রতিহাটে রোগাক্রান্ত এবং ক্ষতিকারক এন্ড্রয়েট পুশ করা গরু সনাক্তকরনে সরকার মেডিকেল টিম দ্বারা যে কার্যক্রম শুরু হয়েছে তা নিঃসন্দেহে সময়োপযোগী। তবে পর্যাপ্ত চিকিৎসক ফিল্ডকর্মী না থাকায় উদ্দেশ্য কিছুটা হলেও ব্যহত হচ্ছে।

গরু ব্যবসায়ি মাহাবুল ইসলাম জানিয়েছেন বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে গরুর খামার করেছিলাম। মাঝে মধ্যেই গরু অসুস্থ হয়ে পড়লে সংশ্লিষ্ট চিকিৎসা কেন্দ্রে ধর্ণা দিলে সময়মত চিকিৎসক পাওয়া যায়না। এতে চিকিৎসা না পেয়ে গরুর মৃত্যুও হয়েছে। ফলে যে লক্ষ্য নিয়ে খামার কার্যক্রম শুরু করেছিলাম তা হোচট খেতে হয়েছে।

খামারী নজরুল ইসলাম জানান, কিছু হাতুড়ী চিকিৎসক থাকলেও তারা অভিজ্ঞ নন। তাই সরকারি চিকিৎসক সময়মত না পেয়ে বাধ্য হয়েই তাদের ওই অনভিজ্ঞ চিকিৎসক দিয়ে গরুর চিকিৎসা করিয়ে থাকি। এতে গরুর বড় ধরনের ক্ষতি না হলেও শংকায় থাকতে হয়। তার দাবি যেহেতু কুষ্টিয়ায় অর্থনৈতিক উন্নয়নে সম্ভাবনা খাত গরুপালন সেই বিষয়টি লক্ষ্য করে জেলার প্রতিটি ইউনিয়নে স্বাস্থ্যকর্মী নিয়োগ জরুরি। নতুবা এই সম্ভাবনা খাত হুমকির মুখে পতিত হবে।

কথিত রয়েছে সম্প্রতি দেশে গরু মোটাতাজা করণের নামে কিছু মুনাফা লোভী ব্যবসায়ি অধিক মুনাফা অর্জনের জন্য গরুকে ক্ষতিকারক মেডিসিন প্রয়োগ করছে। আর এইসব গরুর মাংস মানবদেহের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। আর তাই সরকার এসব গরু সনাক্তকরনে প্রতিহাটে মেডিকেল টিম স্থাপন করেছে।

কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক জানিয়েছেন প্রতি হাটে গরুর স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য মেডিকেল টিম স্থাপন করা হয়েছে।

(কেএইচ/জেএ/অক্টোবর ০২, ২০১৪)