স্টাফ রিপোর্টার : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) নৃত্যকলা বিভাগের ছাত্রী এলমা চৌধুরী ওরফে মেঘলার মৃত্যুর ঘটনায় তার স্বামী ইফতেখার আবেদীনের বিরুদ্ধে আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগে করা মামলার অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দিয়েছে গোয়েন্দা পুলিশ। তবে অভিযোগের সত্যতা না পাওয়ায় ইফতেখারের মা-বাবাকে অব্যাহতিরে আবেদন করা হয়েছে।

শুক্রবার (২৪ জুন) বনানী থানার আদালতের সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা পুলিশের উপ-পরিদর্শক আলমগীর হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, গত ৩১ মে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ক্যান্টনমেন্ট জোনাল টিমের পরিদর্শক (নিরস্ত্র) কাজী শরীফুল ইসলাম আদালতে এ চার্জশিট দাখিল করেন।

গত ২০ জুন ঢাকার অ্যাডিশনাল চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আসাদুজ্জামান নূরের আদালতে মামলাটি শুনানির জন্য ধার্য ছিল। ডিবি পুলিশের দেওয়া চার্জশিটের বিরুদ্ধে নারাজি দেবেন জানিয়ে এলমার বাবা সময় আবেদন করেন। আদালত আগামী ৩ আগস্ট নারাজির বিষয়ে শুনানির তারিখ ধার্য করেছেন।

চার্জশিটে ইফতেখারের বিরুদ্ধে বলা হয়, ঘটনার দিন বাসার বাইরে যেতে চাইলেও আসামি ইফতেখার আবেদীন এলমাকে যেতে না দিয়ে বাসার চাবি নিয়ে দরজা আটকে রাখেন এবং শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করে। আসামি ভিকটিমকে অকারণে কুৎসা রটিয়ে অসৌজন্যমূলক আচরণ ও মারপিট করেন। ভিকটিম অসৌজন্যমূলক আচরণ, অকারণে কুৎসা রটনা ও মারপিট সহ্য করতে না পেরে শয়নকক্ষে সিলিং ফ্যানের সঙ্গে নিজের পরনের ওড়নায় গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন।

মামলায়র অভিযোগে বলা হয়, ২০২১ সালের ২ এপ্রিল ইফতেখার আবেদীনের সঙ্গে এলমা চৌধুরীর বিয়ে হয়। এলমা চৌধুরী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে নৃত্যকলা বিভাগের শেষ বর্ষের ছাত্রী ছিলেন। বিয়ের পর আসামি ইফতেখার আবেদীনের পিতা ভুক্তভোগী এলমা চৌধুরীর বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়া বন্ধ করতে বলেন।

তবে ভুক্তভোগী এলমা পড়ালেখা বন্ধ করতে না চাইলে আসামি ইফতেখার ও তার বাবা-মা মিলে এলমাকে শারীরিক নির্যাতন করে মাথার চুল কেটে দেন। এছাড়া সাংসারিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বিভিন্ন সময় মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন করেন। বিয়ের আনুমানিক তিনমাস পর এলমাকে বনানীর বাসায় রেখে আসামি ইফতেখার কানাডার চলে যান।

গত ১১ ডিসেম্বর কানাডা থেকে দেশে আসেন। এরপর ১৪ ডিসেম্বর আনুমানিক বেলা সাড়ে ৩টার দিকে ভুক্তভোগী এলমার মাকে মোবাইলে আসামি ইফতেখার ফোন করে জানান, আপনার মেয়ে গুরুতর অসুস্থ। তাকে চিকিৎসার জন্য শুলশানের ইউনাইটেড হাসপাতালে নিয়ে যাচ্ছি। আপনারাও আসেন।

এরপর ভুক্তভোগীর বাবা-মা হাসপাতালে গিয়ে এলমা চৌধুরীকে মৃত দেখতে পান। এ ঘটনায় ইলমার বাবা সাইফুল ইসলাম চৌধুরী বাদী হয়ে বনানী থানায় হত্যামামলা করেন। মামলায় এলমার স্বামী, শ্বশুড় ও শ্বাশুড়িকে আসামি করা হয়।

(ওএস/এসপি/জুন ২৪, ২০২২)