স্টাফ রিপোর্টার : গত বছর (২০২১ সাল) ২১ হাজার ৯৯২ জনের বিরুদ্ধে ২০ হাজার ৫৯২টি মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।

রবিবার (২৬ জুন) সচিবালয়ে ‘মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার ও অবৈধ পাচারবিরোধী আন্তর্জাতিক দিবস, ২০২২’ উপলক্ষে সংবাদ সম্মেলনে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী একথা জানান।

মন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ মাদক উৎপাদনকারী দেশ নয়। বাইরের দেশ থেকে বিভিন্ন পথে মাদকদ্রব্য পাচার হয়ে আসে। আমাদের দেশে মাদকদ্রব্যের পাচার এবং এর অবৈধ ব্যবহার বন্ধে পুলিশ, বিজিবি, কোস্টগার্ড, র্যাব, কাস্টমস ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরসহ বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কাজ করে যাচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘২০২১ সালে সারাদেশে অভিযান পরিচালনা করে ইয়াবা, হেরোইন, গাঁজা, গাঁজাগাছ, ফেনসিডিলসহ বিভিন্ন ধরনের বিপুল পরিমাণ মাদকদ্রব্য জব্দ করে ২১ হাজার ৯৯২ জনের বিরুদ্ধে ২০ হাজার ৫৯২টি মামলা করা হয়েছে।’

স্বরাষ্টমন্ত্রী বলেন, মাদকের অপব্যবহার রোধে জনসচেতনতা সৃষ্টি এবং মাদকাসক্তির চিকিৎসার বিষয়ে সর্বসাধারণকে অবহিত ও উদ্বুদ্ধ করার লক্ষ্যে ১৯৮৮ সাল থেকে প্রতিবছর ২৬ জুন জাতিসংঘ ঘোষিত ‘মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার ও অবৈধ পাচারবিরোধী আন্তর্জাতিক দিবস’ বিশ্বব্যাপী পালিত হয়ে আসছে। মাদকের করালগ্রাস থেকে বিশ্ববাসীকে রক্ষার জন্য জনসচেতনতা সৃষ্টি এবং মাদকের ভয়াবহতার মর্মস্পর্শী ও করুণচিত্র বিশ্বের সর্বস্তরের জনগণের সামনে তুলে ধরার মাধ্যমে মাদকবিরোধী ব্যাপক সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলাই এ দিবস পালনের মূল লক্ষ্য।

দিবসের এ বছরের প্রতিপাদ্য ‘অ্যাড্রেসিং ড্রাগ চ্যালেঞ্জেস ইন হেলথ অ্যান্ড হিউম্যানটেরিয়ান ক্রাইসিস’, এর বাংলা অনুবাদ করা হয়েছে ‘মাদকসেবন রোধ করি, সুস্থ সুন্দর জীবন গড়ি।’

মাদকের চাহিদা কমাতে পরিচালিত মাদকবিরোধী নিরোধ শিক্ষামূলক গতানুগতিক প্রচার কার্যক্রমের পরিবর্তে অধিদপ্তর ভিন্ন সৃজনশীল কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে বলে জানান মন্ত্রী।

তিনি বলেন, ‘মাদকাসক্তদের চিকিৎসাসেবা বাড়াতে সরকারি হাসপাতালে শয্যাসংখ্যা বৃদ্ধির পাশাপাশি বেসরকারি নিরাময়কেন্দ্রের লাইসেন্স সংখ্যাও বাড়ানো হয়েছে। বেসরকারি মাদকাসক্তি নিরাময়কেন্দ্রগুলোর কার্যক্রম মনিটরিংয়ের জন্য বিভাগ ও জেলা পর্যায়ে কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ কমিটিগুলো মাদকাসক্তি নিরাময়কেন্দ্রসমূহ নিয়মিত মনিটরিং করছে। মাদকাসক্তদের চিকিৎসার একটি সুনির্দিষ্ট গাইডলাইন থাকা জরুরি বিবেচনায় জাতীয় মাদকবিরোধী কমিটির সিদ্ধান্ত মতে মাদকাসক্তদের চিকিৎসার পদ্ধতি সম্পর্কে জাতীয় গাইডলাইন তৈরির জন্য একটি কারিগরি কমিটি বিভিন্ন স্টেকহোল্ডারদের সাথে কর্মশালা ও সভা করে গাইডলাইনের খসড়া চূড়ান্ত করছে।’

এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘আইস নামে একটি ভয়ঙ্কর মাদক মিয়ানমার থেকে এসেছে। মিয়ানমারকে আমরা বহু অনুরোধ করেছি, তারা অনেক কথা বলেন, কিন্তু কোনোটাই তারা কার্যকর করেন না। প্রতিশ্রুতি অনেক কিছুই দেন কিন্তু কোনোটাই কার্যকর করেন না। তাদের ইয়াবা সরবরাহ বন্ধ করার জন্য বলেছি।’

‘রোহিঙ্গারা ফাঁক-ফোকর দিয়ে ইয়াবা আনার চেষ্টা করছেন। যেখানে অভিযোগ পাচ্ছি সেখানে আইন অনুযায়ী আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি। আমরা আমাদের সক্ষমতা বাড়াচ্ছি। বর্ডার লাইনে একটা সেন্সর করারও পরিকল্পনা আমাদের রয়েছে।’

মাদক ব্যবসার সঙ্গে যেই জড়িত থাকুক আইন অনুযায়ী তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলেও জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।

(ওএস/এএস/জুন ২৬, ২০২২)