স্টাফ রিপোর্টার : রাজধানী থেকে ঢাকা-মাওয়া-ভাঙা এক্সপ্রেসওয়ে (জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মহাসড়ক) হয়ে পদ্মা সেতুর মাওয়া টোল প্লাজা প্রান্তে পৌঁছাতে সময় লাগবে মাত্র ২৫ মিনিট। প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাস, জিপ ও মোটরসাইকেলে লাগবে এ সময়। আর পদ্মা সেতু পাড়ি দিতে সময় লাগবে মাত্র ৬-৭ মিনিট। অর্থাৎ ঢাকা থেকে পদ্মা সেতু পার হতে মোট সময় লাগবে ৩২ মিনিটের মতো।

পদ্মা সেতুকে ঘিরে তৈরি করা হয়েছে দেশের প্রথম এক্সপ্রেসওয়ে। ২০২০ সালের ১২ মার্চ এক্সপ্রেসওয়ে উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর থেকে দক্ষিণাঞ্চলের ২১ জেলার মানুষের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দু ছিল পদ্মা সেতু।

রবিবার (২৬ জুন) সকাল ৬টা থেকে পদ্মা সেতু সর্বসাধারণের জন্য খুলে দেওয়ার পর থেকে ঢাকা থেকে দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ খুব অল্প সময়ের মধ্যেই পাড়ি দিতে পারছে পদ্মা সেতু। এর মধ্য দিয়ে উন্মোচিত হলো দক্ষিণবঙ্গের অর্থনীতির নতুন এই করিডোর।

ঢাকার প্রান্ত থেকে ফরিদপুরের ভাঙ্গা পর্যন্ত এই এক্সপ্রেসওয়ের দূরত্ব ৫৫ কিলোমিটার। এক্সপ্রেসওয়ে ধরে এই দূরত্ব অতিক্রম করতে সাধারণভাবে সময় লাগবে মাত্র ৪২ মিনিট। আর ঢাকা থেকে মাওয়া পর্যন্ত ৩৫ কিলোমিটার দূরত্বে যেতে সময় লাগবে ২৫ মিনিট। যাত্রাবাড়ী থেকে মাওয়া রোডে উঠলে এই এক্সপ্রেসওয়ে সোজা নিয়ে যাবে পদ্মা সেতুর দ্বারে।

সম্পূর্ণ নিজস্ব অর্থায়নে তৈরি দেশের সবচেয়ে বড় স্থাপনা পদ্মা সেতু। সেতুটির দৈর্ঘ্য ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার। এই সেতুর এক অংশে পদ্মা নদীর মুন্সীগঞ্জের মাওয়া প্রান্ত এবং অপর অংশ শরীয়তপুরের জাজিরা প্রান্তে যুক্ত। একই সঙ্গে ট্রেন ও গাড়ি চলাচলের ব্যবস্থা রয়েছে এ সেতুতে।

চার লেনবিশিষ্ট ৭২ ফুট প্রস্থের এ সেতুর নিচতলায় রয়েছে রেল লাইন। এর মাধ্যমে দক্ষিণাঞ্চলের সঙ্গে সারাদেশের রেল যোগাযোগ স্থাপিত হবে। আগামী বছর রেল চালু হবে বলে আশা প্রকাশ করছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।

ঢাকা থেকে নিজস্ব প্রাইভেটকারে পদ্মা সেতু দেখতে আসা জীবন ভৌমিক বলেন, যাত্রাবাড়ী থেকে যদি কোথাও যানজট না থাকে, তবে মাত্র ২৫ মিনিটে পদ্মা সেতুর মাওয়া টোল প্লাজায় আসা সম্ভব। টোল প্লাজায় খুব বেশি সময় লাগছে না। মাত্র ৩০ সেকেন্ড থেকে ৪০ সেকেন্ডেই টোলের টাকা পরিশোধ করা যাচ্ছে।

মোটরসাইকেলে ঢাকা থেকে পদ্মা সেতু দেখতে আসা আতিক হাসান বলেন, মোটরসাইকেলের স্পিড ৭০-৮০ কিলোমিটার বেগে হলে ২০ থেকে ২৫ মিনিটে মাওয়া প্রান্তে পৌঁছানো সম্ভব।

এর আগে, উদ্বোধনের প্রায় ১৮ ঘণ্টা পর রোববার ভোর ৬টা থেকে বহুল প্রতীক্ষিত স্বপ্নের পদ্মা সেতু দিয়ে যান চলাচল শুরু হয়। আগের দিন (শনিবার) বেলা ১১টা ৫৮ মিনিটে মুন্সিগঞ্জের মাওয়া প্রান্তে এ সেতুর ফলক উন্মোচন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

যান চলাচলের জন্য সেতুটি খুলে দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে দুই প্রান্তের ১৪টি টোল গেট চালু হয়ে যায়। সবকয়টি গেটে ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে টোল আদায় করা হচ্ছে। নির্ধারিত টোল দিয়ে থ্রি-হুইলার ছাড়া যেকোনো গাড়ি পার হতে পারছে পদ্মা সেতু দিয়ে।

অন্যদিকে, সেতু নিয়ে ব্যাপক আগ্রহ থাকায় যান চলাচল শুরুর দিন রোববার ভোররাত থেকেই ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রসওয়ে ভিড় জমায় শতশত যানবাহন। তবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষও যথাযথ প্রস্তুতি রেখেছে বলে জানানো হয়েছে।

(ওএস/এসপি/জুন ২৬, ২০২২)