আবু নাসের হুসাইন, সালথা : ফরিদপুরের সালথায় বাড়ছে কুমার নদীসহ খাল বিলের পানি। এরই মধ্যে খাল দিয়ে ফসলি জমিতে পানি উঠতে শুরু করেছে। প্রতি বছরের ন্যায় এবারও কারিগররা নতুন খোসা নৌকা তৈরির কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন কারিগররা। বর্ষা হলেই নৌকার কদর বাড়বে। 

জানা যায়, উপজেলার নিম্নাঞ্চলে কৃষি কাজে নৌকার গুরুত্ব অনেক। বর্ষাকালে এসব এলাকার কৃষি কাজে নৌকাই তাদের প্রধান ভরসা। উপজেলার আটঘর, গট্টি, মাঝারদিয়া, ভাওয়াল ইউনিয়ন সহ সকল ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চলে নৌকার ব্যবহার সবচেয়ে বেশি হয়।

বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, উপজেলার সদর বাজার, আটঘর ইউনিয়নের নকুলহাটি, সোনাপুর ইউনিয়নের চান্দাখোলা ও গট্টি ইউনিয়নের বালিয়া বাজারে খোসা নৌকা তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন কারিগররা। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপজেলায় প্রায় ৭-৮টি বাজারে নৌকা তৈরি হয়। এ উপজেলায় যোগাযোগের ব্যবস্থা ভালো থাকায় মূলত পাট কাটার কাজে ও মাছ ধরার কাজে নৌকা বেশি প্রয়োজন হয়।

সোনাপুর ইউনিয়নের চান্দাখোলা বাজারের নৌকার কারিগর মহাদেব সুত্রধর বলেন, প্রায় বছর এলাকায় বর্ষা হয়। বর্ষা আসার আগেই আমরা নৌকা তৈরি করছি। নৌকা তৈরিতে জল কড়ই ও চাম্বুল কাঠ ব্যবহার করা হয়। আকারভেদে প্রতিটি নৌকা ৬ হাজার থেকে ১২ হাজার টাকায় বিক্রি হয়। এমধ্যে ১০ হাত লম্বা একটা খোসা নৌকা ৮ হাজার থেকে ১০ হাজার টাকা বিক্রি করি।

তিনি আরো বলেন, এপর্যন্ত ৪-৫টি নৌকা তৈরির কাজ শেষ করেছি। চাহিদা অনুযায়ী আরো তৈরি করবো। তৈরি করা নৌকাগুলো বিক্রির জন্য রাখা হয়েছে।

উপজেলার গট্টি ইউনিয়নের ফুকরা গ্রামের নৌকার কারিগর গুরুদাস জানান, পুরাতন নৌকা মেরামত নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছি। কয়েকদিন পর থেকেই নতুন নৌকা তৈরির কাজ শুরু করবো। এবার নৌকার চাহিদা বেশি। কারণ নদী-নালা, খাল-বিলে পানি আসতে শুরু করেছে।

নকুলহাটি বাজারে মোজামের কারখানায় নৌকা কিনতে আসা আঃ আলিম নামে এক ব্যক্তি বলেন, বর্ষাকালে নিচু এলাকায় নৌকা ছাড়া পাটের কাজ করা সম্ভব নয়। উপজেলার কিছু কিছু এলাকায় প্রচুর পানি হয়। তখন নৌকায় করে আঁশ ছাড়ানো পাট ও পাটখড়ি বাড়িতে আনতে হয়। এছাড়াও কৃষি কাজের লেবারদের নৌকায় করে নাস্তা খাওয়াতে হয়। বিকালে নৌকায় করে জাল দিয়ে মাছ ধরা যায়। তাই কৃষি কাজ ও মাছ ধরার জন্য নৌকা কিনতে এসেছেন বলে জানান তিনি।

(এন/এসপি/জুন ২৬, ২০২২)