নওগাঁ প্রতিনিধি : নওগাঁর পত্নীতলা উপজেলার বুজরুক মামুদপুর ধরনাই গ্রামের পলাশ চন্দ্র বর্মন (৪০) পরকীয়ার পথ পরিস্কার করতে স্ত্রী পূর্ণিমা রানী (৩৫) কে র্মিমভাবে হত্যা করে পুরো বিষয়টা আত্মহত্যা বলে চালানোর চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। এ ব্যাপারে নিহত পূর্ণিমা রানীর মা তনুশ্রী দেবী বাদী হয়ে সোমবার নওগাঁ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আমলী -৪ আদালতে মামলা দায়ের করেছেন। 

মামলার আরজীতে বলা হয়, পত্নীতলা উপজেলার ধরনাই গ্রামের পলাশ বর্মনের সঙ্গে বিগত ১৯৯৬ সালে নিয়ামতপুর উপজেলার জয়পুর গ্রামের মৃত বিরেন চন্দ্রের মেয়ে পূর্ণিমা রানীর বিয়ে হয়। ইতোমধ্যেই তাদের দুটি কন্যা সন্তান জন্মলাভ করে। ২০১৭ সালে প্রতিবেশী অমিয় চন্দ্রের স্ত্রী বাসন্তী রানীর (৩০) সঙ্গে পলাশ পরকীয়া শুরু করে। এতে বাধা দিলে পলাশ তার স্ত্রী পূর্ণিমাকে শারিরিক ও মানসিক নির্যাতন শুরু করে।

এ ব্যাপারে পূর্ণিমা রানী নওগাঁ নারী-শিশু আদালতে মামলা করলে আদালতে পলাশ বর্মন স্ত্রী পূর্ণিমা রানীকে ২০লাখ টাকা সমমূল্যের ৬ বিঘা আবাদী জমি ও বসতবাড়ির দাগে ৫ শতক জমি জীবনস্বত্ব প্রদান করে সকল মামলা আপোষমুলে প্রত্যাহার করা হয়। এর কিছুদিন পর থেকে আবারো পলাশ-বাসন্তী ফের পরকীয়ায় মেতে ওঠে। একপর্যায় বাসন্তী রানী তার স্বামী অমিয় চন্দ্রকে তালাক দিয়ে পরকীয়ার নাগর ২ কন্যার জনক পলাশ বর্মনকে বিয়ে করে একই বাড়িতে বসবাস শুরু করে।

এদিকে পলাশ-বাসন্তী যুক্তি করে পূর্ণিমাকে লিখে দেয়া সম্পদ ফিরিয়ে নিতে উঠেপড়ে লাগে।। পূর্ণিমার ওপর নির্যাতনের মাত্রা বাড়তেই থাকে। একপর্য়ায় ১৭-০৪-২২ তারিখ রাত সাড়ে ১১টায় পলাশ ও বাসন্তী তাদের সাঙ্গপাঙ্গ নিয়ে পূর্ণিমাকে বেদম মারপিট করলে পূর্ণিমার মুখ দিয়ে রক্ত পড়তে থাকে। তাকে স্থানীয় হাসপাতারে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক পূর্ণিমাকে মৃত ঘোষনা করেন।

এ ব্যাপারে পত্নীতলা থানায় অভিযোগ করলে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে মৃতার কন্যা প্রিয়াংকা রানী (১৯) কে ঘটনাস্থল থেকে গাড়িতে তুলে থানায় নিয়ে যান এসআই আশরাফুল। সেখানে প্রিয়াঙ্কার কাছে একটা সাদা কাগজে স্বাক্ষর নেয়া হয় বলে আরজীতে উল্লেখ করা হয়েছে। পরে পুলিশ হত্যা মামলা রেকর্ড না করে একটি ইউডি মামলা রেকর্ড করে।
পলাশের প্রতিবেশীরা জানায়, পলাশ বর্মন এখন দম্ভ করে বলাবলি করছে, টাকা থাকলে পুলিশ, ডাক্তার আর সাংবাদিক কেউ কিছু করতে পারবেনা। এ মামলায় আমার কিছুই হবেনা। তার এমন দম্ভোক্তিতে নিহত পূর্নিমার মা তনুশ্রী দেবী হতাশ হয়ে পড়েছেন। তিনি তার কন্যা হত্যার সুষ্ঠু বিচারের দাবীতে প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

(বিএস/এসপি/জুন ২৭, ২০২২)