নবী নেওয়াজ, পাবনা : সেশনজট নিরসন, নিয়মিত ক্লাস পরীক্ষা গ্রহণসহ চার দফা দাবিতে বিক্ষোভ ও করেছেন পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস ও বাংলাদেশ স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থীরা। রবিবার দুপুরে ক্যাম্পাসে নিজ বিভাগের বারান্দায় অবস্থান নিয়ে এ কর্মসূচি পালন করেন তারা। এ সময় বিভাগীয় চেয়ারম্যান ড. মো: হাবিবুল্লাহকে অবরুদ্ধও করে রাখেন শিক্ষার্থীরা।

বিক্ষোভ শেষে সেশনজট নিরসন, নিয়মিত ক্লাস পরীক্ষা গ্রহণসহ চার দফা দাবি বাস্তবায়নের জন্য পাবিপ্রবি ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. হাফিজা খাতুনের নিকট স্মারকলিপি প্রদান করে শিক্ষার্থীরা। এ বিষয়ে জানতে চেয়ে ভাইস চ্যান্সেলর ড. হাফিজা খাতুন কে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে ফোন কল গ্রগণ না করায় তাঁর মন্তব্য জানা সম্ভব হয় নাই ।

বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা জানান, বিভাগীয় প্রধান ও শিক্ষকদের অবহেলায় ইতিহাস ও বাংলাদেশ স্টাডিজ বিভাগে দীর্ঘদিন ধরে অচলাবস্থা বিরাজ করছে। বিভাগীয় প্রধান ড. হাবিবুল্লাহকে এ বিষয়ে বারবার বলার পরেও তিনি গুরুত্ব দেননা। নিয়মিত ক্লাস পরীক্ষা কোন কিছুই হয়না। এ কারণে দীর্ঘ সেশনজটে শিক্ষার্থীদের মধ্যে হতাশা নেমে এসেছে। বাধ্য হয়েই তারা আন্দোলনে নেমেছেন।

ইতিহাস ও বাংলাদেশ স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী তানভীর ইসলাম বলেন, করোনা মহামারীর সময়ে বিশ্ববিদ্যালয় স্থবির হয়ে পড়েছিলো। পরে, বিশ্ববিদ্যালয় খোলার পর অন্যান্য বিভাগের শিক্ষকরা দ্রুত ও অতিরিক্ত ক্লাস নিয়ে শিক্ষার্থীদের সিলেবাস শেষ করেন, পরীক্ষা নেন। কিন্তু আমাদের বিভাগে একই সাথে তিনটি প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীর ব্যাচ থাকলেও সে বিষয়ে কোন উদ্যোগ নেই।

তৃতীয় বর্ষ দ্বিতীয় সেমিস্টারের শিক্ষার্থী রাশেদ, সামিউলসহ বেশকয়েকজন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী বলেন, সেশনজট কাটাতে নিয়মিত ক্লাস পরীক্ষার ব্যবস্থা করতে আমরা বারবার বিভাগীয় চেয়ারম্যান স্যারসহ শিক্ষকদের অনুরোধ করেছি। কিন্তু নিচ্ছি, নেব করে তারা বছরের পর বছর কাটিয়ে দিচ্ছেন। তারা বিভাগে সময় না দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের তোষামোদিতেই বেশী ব্যস্ত থাকেন। আমাদের সাথে ভর্তি হওয়া অন্য বিভাগের বন্ধুরা অনার্স শেষ করে ফেলেছে। সেশনজটে আমাদের ভবিষ্যত অন্ধকারে ঠেলে দিচ্ছেন শিক্ষকরা।

প্রথম বর্ষ প্রথম সেমিস্টারের শিক্ষার্থী তাওহিদ বলেন, ’আমরা সেশনজট দূর করতে চার দফা সুনির্দিষ্ট প্রস্তাবনা দিয়েছি। এর মধ্যে রয়েছে, দুই মাসের মধ্যে ক্লাস শেষ করে পরবর্তী এক মাসের মধ্যে পরীক্ষা শেষ করতে হবে। উপস্থিতি, ক্লাস টেস্ট, এসাইনমেন্ট, প্রেজেন্টেশনে প্রাপ্ত নম্বর চুড়ান্ত পরীক্ষার পূর্বেই প্রকাশ করতে হবে। পরীক্ষার এক মাসের মধ্যে ফলাফল দিতে হবে। এবং সুনির্দিষ্ট তারিখ উল্লেখ করে একাডেমিক ক্যালেন্ডার প্রকাশ করতে হবে। দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাবারও ঘোষণা দেন শিক্ষার্থীরা।

এদিকে, বিকেল চারটার দিকে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের দাবি পূরণের মৌখিক আশ্বাস দিয়ে আন্দোলন স্থগিতের অনুরোধ জানান বিভাগীয় প্রধান ড. মো: হাবিবুল্লাহ। এ সময় শিক্ষার্থীরা লিখিত সমাধানপত্র ও একাডেমিক ক্যালেন্ডার প্রকাশের দাবি জানালে তিনি অপরাগতা প্রকাশ করেন।

এ বিষয়ে পাবিপ্রবি ইতিহাস ও বাংলাদেশ স্টাডিজ বিভাগের বিভাগীয় চেয়ারম্যান ড. হাবিবুল্লাহ বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে তো অনেক বড় বড় বিষয় থাকে। ছোটখাটো বিষয়ে সংবাদ না করাই ভালো। করোনাকালে শিক্ষা কার্যক্রমে বড় ধরণের জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে। আমি যেহেতু তাদের অভিভাবক, শিক্ষার্থীরা আমার কাছে দাবি জানাতেই পারে। এ বিষয়ে সমাধানের উদ্যোগ নেয়া হবে।

(এন/এসপি/জুন ২৭, ২০২২)