ইমরান হোসাইন, সিরাজগঞ্জ : সিরাজগঞ্জে যমুনা নদীর পানি কমা অব্যাহত থাকায় বন্যা পরিস্থিতর আরও উন্নতি হয়েছে। অধিকাংশ বসতবাড়ির পানি নেমে যাওয়ায় ঘড়ে ফিরছে মানুষ।

গত ২৪ ঘন্টায় ২৮ সেন্টিমিটার কমে সোমবার সকালে শহর রক্ষা বাধ পয়েন্টে যমুনা নদীর পানি বিপদসীমার ৬৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

পানি কমতে থাকায় বসতবাড়ির পানি নেমে গেছে, বাড়ি ফিরছে মানুষ। কিন্তু স্বস্তির নিঃশ্বাস ছাড়ার সুযোগ কোথাও নেই তাদের। কয়েকদিন ধরে জমে থাকা বন্যার পানি আর ময়লা-আবর্জনা মিলেমিশে পচে গিয়ে ছড়াচ্ছে দুর্গন্ধ। ফলে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে বানভাসিদের। বন্যাকবলিত মানুষ মেরামত করছে ঘরবাড়ি। এদিকে খাবার পানির সংকট দেখা দিয়েছে।

সিরাজগঞ্জের খোকশাবাড়ীর ইউনিয়নের গুনেরগাতি, শৈলাবাড়ী, পাঁচিল, দিয়ার পাঁচিল ঘুরে এই চিত্র দেখা যায়।

সোমবার (২৭ জুন) সরেজমিন গিয়ে বানভাসি মানুষদের সাথে আলাপচারিতা রিপন আহমেদ বলেন, বাড়ি ফিরে অনেক সমস্যায় পড়েছি৷ চারদিকে ময়লা-আবর্জনা মিলেমিশে পচে গিয়ে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। নতুন করে সব ঠিক করতে হচ্ছে ঘর- বাড়ির। কাজ করতে যেতে পারছি না বাইরে৷ এদিকে এ পর্যন্ত ত্রাণ বা কোন সহযোগিতা পাইনি৷

আলামিন সরকার বলেন, রাস্তা- ঘাট ভেঙে গেছে চলাফেরা কষ্ট, বাড়ির চারদিকে দুর্গন্ধ ও স্যাতসেতে অবস্থার কারণে পায়ে চুলকানি হচ্ছে। খুব দুর্ভোগের মধ্যে সময় কাটছে৷

জুলেখা খাতুন বলেন, পানি কমাতে বাড়ি ফিরছি। বাড়ি ফিরে পড়ছি ভোগান্তিতে, টিউবওয়েল বন্যার পানিতে ডুবে গেয়েছিল। এখন বিশুদ্ধ পানির অভাবে আছি৷

খোকশাবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ রাশিদুল হাসান রশীদ বলেন, বন্যায় তেমন কোন ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। সবাই বাড়ি ফিরছি। আমরা বেশ কিছু জায়গায় ত্রাণ দিয়েছি।

বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড সিরাজগঞ্জের গেজ রিডার হাসানুর রহমান জানান, পানি কমা অব্যাহত থাকবে, বন্যা কবলিত চরাঞ্চল ও নিম্নাঞ্চলের অধিকাংশ এলাকার পানি নেমে গেছে।

জেলা ত্রাণ ও পূনর্বাসন কর্মকর্তা মোহাম্মদ আক্তারুজ্জামান জানান, বন্যাকবলিত মানুষদের মাঝে ত্রাণ পৌছানো হয়েছে। ইতিমধ্যে ৬৫,৫০০ মেঃ টন চাল ও ৯৩৩ প্যাকেট শুকনা খাবার বিতরণ করা হয়েছে।তবে সিরাজগঞ্জ বন্যায় সেই ভাবে কোন ক্ষতি হয়নি।

তবে এখন পর্যন্ত সিরাজগঞ্জে বন্যাকবলিত মানুষদের মধ্যে পানিবাহিত রোগ দেখা দেয়নি বলে জানিয়েছে সিরাজগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. ফয়সাল আহমেদ।

(আই/এসপি/জুন ২৭, ২০২২)