রাজন্য রুহানি, জামালপুর : স্ত্রীর সঙ্গে বোনজামাইয়ের পরকীয়ার ঘটনায় এ পক্ষে নিহত হয়েছে স্বামী আর ওপক্ষে নিহত হয়েছে বোন। ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ২৭ দিন আগে ও পরে ওই ভাইবোনের মৃত্যু হলে ঘর বাঁধে পরকীয়ায় জড়িতরা। উভয় পক্ষে দুজন করে রয়েছে চারজন সন্তান। এ ঘটনায় হত্যা মামলা হলে প্রায় একবছর পর নিহত স্বামীর লাশ উত্তোলন করেছে পুলিশ।

এমন ঘটনা ঘটেছে জামালপুর সদর উপজেলার শরিফপুরের রণরামপুর গ্রামে।

সোমবার (২৭ জুন) দুপুরে নিহত স্বামী শাহ জামালের লাশ কবর থেকে উত্তোলন করে মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ। শাহ জামাল রণরামপুরের খাটাপাড়া এলাকার ইউসুফ আলীর ছেলে।

দায়িত্বপ্রাপ্ত নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট এমামুল হকের উপস্থিতিতে শাহ জামালের লাশ উত্তোলন করা হয়।

মামলা এবং পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, ২০২১ সালের ২৯ জুলাই রণরামপুর গ্রামের ইউসুফ আলীর ছেলে শাহজামাল (৩৪) ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে মারা যান। এর ২৭ দিন আগে মৃত শাহ জামালের সহোদরা সীমা (২৮) একইভাবে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন।

নিহতের স্বজনরা জানায়, শাহ জামালের স্ত্রী চামেলীর (৩০) সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েছিলেন সহোদর বোন সীমার স্বামী মোস্তাফিজুর রহমান। এ ঘটনা জানাজানিও হয়েছিল। পরে চামেলী ও মোস্তাফিজ ঘর বাঁধার উদ্দেশ্যে কীটনাশক জাতীয় কিছু খাইয়ে দিলে ডায়েরিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ২৭ দিন আগে ও পরে ওই ভাইবোনের মৃত্যু হয়। তাদের মৃত্যুর পর চামেলী ও মোস্তাফিজ বিয়ে করেন। এতে সন্দেহ সৃষ্টি হলে শাহ জামালের বাবা ইউসুফ আলী বাদী হয়ে ১৬ জুন জামালপুর থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।

মামলায় মোস্তাফিজুর রহমান, চামেলি, চামেলির পিতামাতা ও চামেলির এক বোনসহ পাঁচজনকে আসামি করা হয়েছে। এজাহারে বিষাক্ত রাসায়নিক দ্রব্য অথবা কীটনাশক পান করিয়ে শাহ জামালকে হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে। জামালপুর সদর থানার মামলা নং ৬০। ৩০২/৩৪ ধারার এ মামলা আমলে নিয়ে তদন্তের নির্দেশ দেন জামালপুরের সিআর আমলি আদালত।

নিহত শাহ জামালের দুই কন্যা এবং নিহত সীমার এক ছেলে ও এক মেয়ে চরম অশান্তির মধ্যে পড়েছে বলে জানিয়েছে শাহ জামালের আত্মীয়রা।

মামলার দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা মাসুদুর রহমান জানান, আসামিরা পলাতক। গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। লাশ কবর থেকে উত্তোলন করে মর্গে পাঠানো হয়েছে।

(আরআর/এএস/জুন ২৭, ২০২২)