তুষার কান্তি বিশ্বাস, গোপালগঞ্জ : গোপালগঞ্জে মেয়েকে অপহরণে বাধা দেওয়ায় মা ক্ষমা বিশ্বাস হত্যা মামলায় বখাটে অজিত বাকচীকে (৩৫) মৃত্যুদন্ডের আদেশ দিয়েছে আদালত। সেই সাথে তাকে ১ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।গোপালগঞ্জের অতিরিক্ত দায়রা জজ মোঃ আব্বাস উদ্দীন আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে এই রায় দেন।

দন্ডপ্রাপ্ত অজিত বাকচী গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার খোর্দ্দ দূর্বাশুর গ্রামের রমেশ বাকচীর ছেলে । মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত আসামী পলাতক রয়েছে। মামলার অপর আসামী মুকসুদপুর উপজেলার দিস্তাইল গ্রামের মণি মোহন বিশ্বাসের ছেলে মৃদুল বিশ্বাসকে (৩৪) খালাস দেয়া হয়েছে।

মামলার বিবরনে জানা গেছে, গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার খোর্দ্দ দূর্বাশুর গ্রামের রমেশ বাকচীর ছেলে অজিত বাকচী নিহত ক্ষমা বিশ্বাসের মেয়েকে দীর্ঘদিন উত্ত্যক্ত করে আসছিলো। তাকে বিয়ে করার জন্য ঘটনার এক বছর আগে প্রস্তাব দেয় অজিত। বিয়ের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায় ওই পরিবারকে প্রতিনিয়ত হুমকি দিয়ে আসছিল আসামীরা। বিগত ২০১৩ সালের ১৩ অক্টোবর রাত সাড়ে ১১টার দিকে শারদীয় দুর্গা পূজার অনুষ্ঠান দেখে বাড়ি ফিরছিলেন ক্ষমা বিশ্বাস, মেয়ে (তপু বিশ্বাস), ছেলে অপু বিশ্বাস ও বোন স্বপ্না বিশ্বাস। পথিমধ্যে (তপুকে) জোর করে অপহরণ করে নিতে গেলে মা ক্ষমা বিশ্বাস বাধা দেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে অজিত বাকচী ধারালো ছুরি দিয়ে ক্ষমা বিশ্বাসের বুকে আঘাত করে। এতে ঘটনাস্থলেই তিনি মৃত্যুর কোলে ঢলে পডড়েন। এ সময় ক্ষমা বিশ্বাসের ছেলে অপু বিশ্বাস বাধা দিলে তাকেও কুপিয়ে আহত করা হয়।

এ ঘটনায় পরের দিন মুকসুদপুর থানায় অজিত বাকচী ও মৃদুল বিশ্বাসকে আসামী করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়।

দীর্ঘ তদন্ত শেষে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও মুকসুদপুর থানার এসআই আশরাফুল ইসলাম বিগত ২০১৩ সালের ১১ ডিসেম্বর আদালতে ২ আসামীর বিরুদ্ধে চার্জশীট দাখিল করেন।

দীর্ঘ সাক্ষ্য প্রমান গ্রহন শেষে বিজ্ঞ বিচারক বখাটে অজিত বাকচীকে অভিযুক্ত করে মৃত্যুদন্ড ও ১ লাখ টাকা জরিমানার আদেশ দেন।

সরকার পক্ষে এপিপি শহিদুজ্জামান খান এবং আসামী পক্ষে ফজলুল হক খান মামলাটি পরিচালনা করেন।
সরকার পক্ষের এপিপি শহিদুজ্জামান খান বলেন, বাদী পক্ষ ন্যায্য বিচার পেয়েছে। আসামী পক্ষের আইনজীবি ফজলুল হক খান বলেন, আমরা উচ্চ আদালতে আপিল করব।

(টিকেবি/এসপি/জুন ৩০, ২০২২)